পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১শ সংখ্যা ) ছেদিকে দেখিয় শিথিলবেশ রামপ্রতাপ বাহু প্রসারণ করিয়া সুরাজড়িতকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন ‘আও মেরা,ভাই জান !' ছেদি তাহার উদ্যত বাহুপাশ হইতে দূরে সরিয়া গিয়া অশ্রুগদুগদ কণ্ঠে বলিল যে, সে তাহার চরণে চিরবিদায় গ্রহণ করিতে অমিয়াছে। উত্তেজিত রামপ্র তাপ বলিলেন “র্কে ও ?” সুযোগ পাইয়া নানা অলঙ্কার সংযোগ করিয়া ছেদি প্রভুকে বুঝাইয়া দিল যে দেওয়ানজি তাহার প্রতি যেরূপ ব্যবহার করিতেছেন, তাহাতে আর তাহার ‘সরকারে’র বাটীতে কাজ করা অসম্ভব। এরূপ ভাবে অপমানিত হইয়। কার্য্য করা অপেক্ষ। ভিক্ষা করিয়৷ প্রাণধারণ করাও শ্ৰেয়ঃ । বলিতে বলিতে ছেদি উদ্বেলিত অতিমানে অশ্রু সরণ করিতে পারিল না। -- বিকৃতfচত্ত রামপ্রতাপ হুঙ্কার করিয়৷ বলিলেন "বোলাও শালে দেওয়ানকে।" ক্ষণকাল পরেই দেওয়ানজি আসিয়। উপস্থিত হইলেন । দেওয়ানজিকে দেখিয়৷ রামপ্রতাপ চীৎকার করিয়া ছেদিকে বলিলেন “লীগ ও শাল। দেওয়ানকে। বিশ জুতি হামারা সামনে"-প্রভুর শবষ্ণু দেখিয় দেওয়ানজি স্থান ত্যাগ করিতে উদ্যত হইলেন। ছেদি প্রভুর কাণে কাণে বলিয়৷ দিল—“দেখিতেছেন উহার বেয়াদবি, আপনাকেও গ্রাহ করিতেছে না !” ক্রোধে রামপ্রতাপ বিকট চীৎকার . করিয়া দেওয়ানজিকে,অযথ গালি দিয়া পেয়াদকে হকুম দিলেন “উসকো কাণ পাকড়কে নিকাল দেও।” দেওয়ানজি দেখিলেন এ সংসারে অণর বেহার-চিত্র ❖ጫጫ ভদ্রস্থত নাই। সুতরাং অপমানিত বৃদ্ধ ছেদির প্রতি একবার তীক্ষু কটাক্ষ নিক্ষেপ করিয়া বিদীৰ্য্যমাণ হৃদয়ে প্রভুগৃহের নিকট নীরবে চিরবিদায় গ্রহণ করিয়া গেলেন। যেই নৰ্ত্তকীকণ্ঠমুখরিত, মুরাসিক্ত, অহিফেন ও গঞ্জিকাধুমন্ধকার নরকে ছেদিপ্রসাদ তৎক্ষণাৎ দেওয়ানজির পদে উন্নীত হইলেন ।” বহুকষ্টে চিরপ্রার্থিত উন্নতি লাভ করিয়া এইবার ছেদিপ্রসাদ প্রাণ ভরিয়া ভোগমুখে মনোনিবেশ করিলেন। রামপ্রতাপকে বুঝাইয়া দিলেন যে একটু ‘ধুমধাম না করিলে গভর্ণমেণ্টের নিকট সম্মানলাভ করা আসস্তল । রামপ্রতাপ ও দেওয়ানজি উভয়ের জন্ত নুতন করিয়া বিশাল মালিকা নিৰ্ম্মিত হইল । সুদৃপ্ত বৃক্ষলতায়, চিত্রে মৰ্ম্মরে, মূল্যবান গৃহসজ্জায় অট্টালিকাদ্বয় সুশোণ্ডিত হইল—হস্তী, অশ্ব, মোটর ও ফিটনের অভাব রহিল না। নৃত্যগীত, আমোদপ্রমোদ, উৎসব, প্রতিভোজ গৃহের নিত্য সহচর হইল। চারিদিক হইতে কলাকুশল৷ , মুন্দরীকুল সমাহৃত হইতে লাগিল। সঙ্গে সঙ্গে শ্বেতাঙ্গসমাজের ষোড়শোপচারে পূজা চলিতে লাগিল। র্তাহীদের মৃগয়া-ব্যাপারে, প্রতিভেজে, নৃত্যোৎসবে রঙ্গতকণিকা বৃষ্টিধারার দ্যায় অজস্রধারে বর্ষিত হইতে লাগিল। দেওয়ানজির ঐশ্বৰ্য্য ও সমৃদ্ধি দেখিয়া লোকে স্তম্ভিত হইয়া গেল । প্তাহর রাজেচিত বেশভূষা তাহার যানবাহন, উহার অকাতর আতিথেয়তা,