পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামাবতী ( , ) বাঙ্গালীর পালবংশীয় রাজাদিগের শেষ রাজধানীর নাম ‘রামাবর্তী’। ইতিহাসবিমুখ বাঙ্গাগাদেশের অধিবাসিগণ তাহার নাম পৰ্য্যন্ত ভুলিয়া গিয়াছিল। মালদহের অন্তর্গত পাণ্ডুয়ার বড় দরগায় { সেঞ্চ শুভোদয় নামক ] একথানি হস্তলিখিত পুথি বহুদিবস হইতে রক্ষিত হইয়া আসিতেছিল । তাহার প্রতি যখন পণ্ডিতসমাজের প্রথম দৃষ্টি নিপতিত হয়, তখন তাহার এক স্থলে “রামাবর্তী'র নাম দেখিতে পাওয়৷ গিয়ছিল। সে অনেক দিনের কথ। । রামাবতী যে একদিন বাঙ্গালাদেশের রাজধানী ছিল, সে কথা তাহাতেও দেখিতে পাওয়া যায় নাই। তাহার পর ক্রমে ক্রমে রামাবর্তী'র অনেক পরিচয় প্রকাশিত इ३म्लो छ् । উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বুকানন হামিল্টন বরেন্দ্রভূমির নানাস্থানের পরিদর্শনকাৰ্য্য শেষ করিয়া এক রিপোর্ট লিপিবদ্ধ করিয়াছিলেন । কালক্রমে তাহ বিলাতে এবং এদেশেও মুদ্রিত হইয়াছিল। সেই গ্রন্থে একটি জনশ্রুতি উল্লিখিত হইয়াছিল । তাহীর মৰ্ম্ম এই যে,—“প্রায় এ ক হাজার বৎসর পূৰ্ব্বে, বরেন্দ্রভূমিতে এক কৈবৰ্ত্ত রানার অভু্যদয় হইয়াছিল ;– তাহার কীৰ্ত্তিকলাপের কিছু কিছু নিদর্শন দেখিতে পাওয়া যায় ;-ভীম নামক এক রাজার নামও লোকমুখে শুনিতে পাওয়া যায়।” একশত বৎসরের মধ্যে সে জনশ্রুতি আরও দুর্বল হইয় পড়িয়ছে। এখনও ভীমরাজার নাম শুনিতে পাওয়া যায় বটে ; কিন্তু এখনকার জনশ্রুতি র্তাহীকে আর সহস্রবৎসর-পূৰ্ব্বকালবৰ্ত্ত নরপতি বলিয়৷ বর্ণনা করে না—তাহাকে [ মধ্যম পাণ্ডব ] ভীম বলিয়াই প্রচারিত করে! বরেন্দ্রভূমির দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে [ রাজসাহীর অন্তর্গত গোদাগাড়ী অঞ্চলে ] এবং উত্তর-পূর্ব প্রান্তে [ বগুড়ার অন্তর্গত ‘মহাস্থানে’র নিকটে ] স্থানে স্থানে ৰে সকল পুরাতন মৃৎপ্রাচীরের ংসাবশেষ দেখিতে পাওয়া যায়, তাহা এখন [ রাজসাহী অঞ্চলে ] ‘ভীমের ডাইঙ্গ’, এবং [ বগুড়া অঞ্চলে ] ভীমের জঙ্গল বলিয়া পরিচিত। তাহার সহিত যে ‘রামাবতীর কোনরূণ সম্বন্ধ ছিল, তাহা কল্পনা করিবারও উপায় ছিল না । এই সকল উচ্চভূমির রহস্তভেদের জন্য কোন কোন রাজপুরুষ চেষ্টা করিয়াছিলেন ; কিন্তু তাহারা ইহাকে জলপ্লালন-নিবারণের ‘বাধ’ মনে করিয়া ৪, সম্পূর্ণরূপে সংশয়শুষ্ঠ হইতে পারেন নাই। , ১৮৯২ খৃষ্টাব্দে বারাণসীধামের নিকটবত্তী কমেীলিগ্রামে বৈদ্যদেবের তাম্রশাসন আবিষ্কৃত ও সুপণ্ডিত ডাক্তার ভিনিস কর্তৃক প্রকাশিত হইলে * জানিতে পারা গিয়াছিল,—বিগ্রহপালদেবের রামপাল নামক এক পুত্র,রাজী হইয়াছিলেন। তাহার কথা তাম্রশাসনে এইরূপে উল্লিখিত আছে, Epigraphia Indica, Vol. II.