পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৬৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

وح مراعة জন্য এইরূপ ভাবে সন্মানিত হইয়াছেন বটে, কিন্তু বাংলায় পালিত মহাশয়ই সৰ্ব্বপ্রথমে এই প্রতিপত্তি লাভ করিলেন । বহুদিন হইতেই বাংলার লোকে পালিত মহাশয়ের নাম শুনিয়া আসিয়াছে । অল্প বয়সে বিলাত যtষ্টয় তিনি বরিষ্টার হইয়৷ আসেন। সেকালে বিলাত যাওয়া এতটা সহজ ছিল না। আর বাঙালী বরিষ্টারের ংখ্যাও দেশে অতি অল্প ছিল । স্বগীয় উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বোধ হয় পালিত মহাশয়ের পূৰ্ব্বেই বারিষ্টার হইয় আসেন। স্বগীয় মনোমোহন ঘোষ পালিত মহাশয়ের সমকাণীয় লোক। কিন্তু মনোমোহন ঘোষ বা উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় আপন আপন ব্যবসায়ে যে প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছিলেন, পালিত মহাশয় তাহ করেন নাই। অথচ পালিত মুহাশয়ের শক্তিসাধ্য যে ইহঁদের অপেক্ষ বড় বেশি হীন ছিল, এমন কথা কিছুতেই বলা যায় না। বরং বুদ্ধির তীক্ষতায় পালিত মহাশয় ইহঁদের । অপেক্ষ কতকটা শ্রেষ্ঠ ছিলেন বলিয়াই মনে হয়। কিন্তু এ জগতে সৰ্ব্ব এই একটা অদ্ভূত ক্ষতিপূরণের নিয়ম প্রতিষ্ঠিত আছে। বিধাত যাহাকে একদিকে কিছু বেশি দান করেন, অন্যদিকে সে চ আতিশয্যের “পাষাণ ভাঙ্গিবীর” জন্যই বা বুঝি, তাহাকে কিছু খাট করিয়াও রাখেন। একটু তলাইয় দেখিলে অনেক বুঝিতে পারা যায়। তীক্ষু বুদ্ধি যার থাকে, ধীরতা তার তেমন থাকে না। সহজে যে জটিল বিষয় ধরিতে বা বুঝিতে পারে, গভীর বিষয়ে দীর্ঘকাল ধরিয়া মনোনিবেশ করিবার প্রবৃত্তি ও অভ্যাস তার বঙ্গদর্শন ১২শ বৰ্ষ, ফাল্গুন, ১৩১৯ প্রায়ই দেখা যায় না। মেধা ও শ্রমশীলতা কচিৎ এক সঙ্গে বসবাস করে । পালিত মহাশয়ের তীক্ষু মেধাই এ বোধ হয় কিয়ৎ পরিমাণে তার ব্যবসায়ে অনন্যসাধারণ কৃতিত্বলাভের অগুরায় হইয়াছিল। আর এই জন্যই তিনি অধিকাংশ সময় ফৌজদারী মামলাতেই নিযুক্ত হইতেন। ফৌজদারী মামলায় এক সময়ে বাঙালী বারিষ্টারদিগের মধ্যে শ্ৰীযুক্ত তারকনাথ পালিত মহাশযের মতন এমন সুদক্ষ লোক আর কেহ ছিলেন না, বলিলেও হয়। মনোমোহন ঘোষ মহাশয়ের প্রতিপত্তি কতকটা বেশি ছিল সত্য, কিন্তু ঘোষ মহাশয় কেবল আপনার ব্যবহারকুশলতাগুণে এই প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছিলেন কি না, কি বলা যায় না। ঘোষ, মহাশয়ের যে কৰ্ম্মকুশলতা, ষে লোকরঞ্জনশক্তি, যে ধৈর্ঘ্য ও স্থৈৰ্য্য ছিল, সে সকলগুণ সে মাত্রায় পালিত মহাশয়ের থাকিলে, তিনি কোনও অংশে যে ঘোষ মূহাশয় অপেক্ষ অল্প খ্যাত্যাপন্ন হইতেন, এমন মনে হয় না। কিন্তু বিধাতার রাজ্যে এ সকল ‘যদি’র স্থান নাই। তার নিরপেক্ষ বিচারে আমাদের প্রত্যেককে মামাদের উপযোগী শক্তিসাধ্য দাস করিয়া থাকে। একদিকে কাহাকে একটু কিছু বেশি দিলে আর একদিকে একটু কাটিয়া ছাটিয়া সমান করিয়া দেয়। ঘোষ মহাশয়ের যাহা ছিল পালিত মহাশয়ের তাহা ছিল না, আর পালিত মহাশয়ের যাহ। আছে, ঘোষ মহাশয় তাহ থান নাই, এইরূপে গড়ে মানুষ একটা বিচিত্র ক্ষমতা লাভ করিয়া থাকে। ঐযুক্ত তারকনাথ পালিতের অনেক