পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᏄᎼbr করিয়া দিলাম। এই নিয়ম যে করিলাম ইহার উল্লঙ্ঘন তাহার এবং তুমি কেহ কথন করিবে না । যদি কেহ কথন এ নিয়মের অন্ত্যমত আচরণে উদ্যত হও, তবে লোকত ধৰ্ম্মত এবং হাকিমানে সে নামধুর। ইতি সন ১১৮৭ শন এগার শত সাতাশীশন তারিখ ৯ই জৈষ্ঠস্য।” লক্ষ্য করিরেন/য, এই দানপত্রের ভাষা, দুই একটি পার্সী কথা ছাড়া, সমৃস্তই খাটি বাঙ্গল . অর্থাৎ এখন যেরূপ আকৃতি প্রকৃতি দেখিয়া আমরা বাঙ্গলার বিশেষত্ব বুঝিতে পারি সে সমস্তই উহাতে আছে। এ কথা ভাল করিয়া দেখাইতে গেলে অনর্থক গুরুমহাশয়গিরি করা হইবে ; তাহা করিব না। এটি হইল একশত বত্রিশ বৎসর পূৰ্ব্বের লেখা। ষে কৃষ্ণচন্দ্রের সভাসদ ভারতচন্দ্র, বৃত্তিভোগী রামপ্রসাদ, র্তাহার দানপত্র যে বিশিষ্ট লোকদিগের দ্বারা লেখান হইয়াছিল, সে কথা না বলিলেও চলে। কিন্তু আমি ভালমন্দের বিচার করিতেছি না, কেবল ভাষার ভঙ্গি যে পূৰ্ব্ব হইতে একই ভাবে রহিয়াছে, তাহাই দেখাইতেছি । ইহার কিছু পরের আর একটি লেখা দেখাইব। পরেরটি রেবরেও কেরি সাহেবের লেখা। তিনি ১৮৯১ খৃষ্টাব্দে একখানি গ্রন্থ ছাপাইয়াছিলেন ; পরে ১৮১২ খৃষ্ঠাবো, এখন হইতে ঠিক একশত বৎসর পূৰ্ব্বে ছাপান “ইতিহাস মালা”। তখন ইতিহাস বলিলে গল্প কাহিনীও বুঝাইত। একটি কাহিনী এইরূপ ;– “এক কৃষক লাঙ্গল চসিতে গিয়া কোন খালে গোট চব্বিশেক মৎস্ত ধরিয়া গৃহে আসিয় আপন গৃহিণীকে পাক করিতে দিয়৷ আপনি পুনৰ্ব্বার চলিতে গেল। তাহার গৃহিণী সে মৎস্ত কয়টি পাক করিয়া মনে বিবেচনা বঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, চৈত্র, ১৩১৯ কৰিল যে মৎস্ত পাক করিলাম কিন্তু কি প্রকার হইয়াছে চাখিয়া দেখি ইহা ভাবিয়া কিঞ্চিৎ ঝোল লইয়া খাইয়া দেখিল যে ঝোল সুরস হইয়াছে। পরে পুনৰ্ব্বার মনে ভাবিল মৎস্ত কিরূপ হইয়াছে তাহাও চাথিয়া দেখি, ইহা ভাবিয়া একটি মৎস্য খাইল । পুনৰ্ব্বার চিন্তা করিল ওটি কিরূপ হইয়াছে তাহাও চাখিতে হয়, ভাবিয়া সেটিও থাইল। এইরূপে থাইতে খাইতে একটি মাত্র অবশিষ্ট রহিল। পরে কৃষক ক্ষেত্র হইতে বাট আইলে তাহার গৃহিণী সেই মৎস্তটি আর অন্ন তাহাকে দিল। কৃষক কহিল যে এ কি ? চব্বিশটি মৎস্ত আনিয়াছি আর কি হইল ? তখন তাহার স্ত্রী মৎস্তের হিসাব দিল,— মাছু আনিলা ছয় গণ্ড৷ চিলে নিল দুই গণ্ড৷ , বাকী রইল ষোল । তাহা ধুতে আটটা জলে পলাইল । ", তবে থাকিল আট । দুইটায় কিনিলাম দুই আটি কাট ॥ তবে থাকিল ছয় । প্রতিবাসীকে চারিট দিতে হয় ॥ তবে থাকিল গুই। তার একটা চাখিয়া দেখিলাম মুই ॥ তবে থাকিল এক । অই পাত পানে চাহিয়া দেখ ॥ এখন হইস যদি মানূষের পো। তবে কঁটিাপান খাইয়া মাছখান থো ॥ আমি যেই মেয়ে। র্তেই হিসাব দিলাম কয়ে ॥ এইরূপে মৎস্তের হিসাবে কৃষকের প্রত্যয় জন্মাইল।”