পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ፃ8: “কলিযুগে কৃষ্ণ আমি, আমি নারায়ণ আমি সেই ভগবান দেবকীনন্দন ॥ অনন্ত ব্ৰহ্মাও কোট মাঝে আমি নাথ। যত গাও সেই আমি, তোরা মোর দাস ॥ তোমা সভা লাগিয়া আমার অবতার। তোরা যেই দেহ সেই অহার আমার ॥” তখন প্রভুকে ভোজন করাইলার জন্ত ভক্তগণ ব্যস্ত হইয়া পড়িলেন। রাশি রাশি ভোজ্য দ্রব্য আনীত হইয়া তাহার সম্মুখে স্থাপিত হইল। গোঁর সমস্তই ভোজন করিয়া বলিলেন “আর কি আছে, আনে।” ভক্তগণ ছুটলেন এবং অচিরেই প্রচুর দ্রব্য সকল আনিয়া প্রভূসমীপে স্থাপন করিলেন ; কিন্তু নিমিষেই তাহা উদরস্থ করিয়া গৌর আবার বলিলেন “আরো আন।” আর আনিবে কি ? ভক্তগণ ভীত হইয়া স্তব পাঠ করিতে লাগিলেন “হে বিশ্বস্তর, তুমি অনন্ত ব্ৰহ্মাও স্বীয় উদরে ধারণ করিয়া আছ, আমাদের ক্ষুদ্র উপহার দ্বারা কিরূপে তোমার তৃপ্তি সাধন করিব ?” গোঁর কহিলেন “ভক্তের উপহার ক্ষুদ্র নহে; তোমাদের যাহা আছে লইয়া আইস, তাহাই আমার পরম প্রিয়।” ভক্তগণ কপূর ও তাম্বুল আনিয়া দিলেন এবং ভক্তি বিগলিত কণ্ঠে তাহার স্তব করিতে লাগিলেন। ইহার কতিপয় দিবস পরে প্রাতঃকালে গৌরচন্দ্র নিতানদের সহিত প্রবাস পণ্ডিতের গৃহে উপস্থিত হইলেন। একে একে যাবতীয় ভক্ত আসিয়া সমাগত হইলেন। গৌর ভাবাবিষ্ট হইয়া চতুৰ্দ্ধিকে দৃষ্টিপাত করিতে লাগিলেন। তাহার অভিপ্রায় বুঝিতে পারিয়া ভক্তগণ উচ্চৈঃস্বরে কীর্তন আরম্ভ করিলেন। কীৰ্ত্তন-কালে গেীর প্রায়ই রঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, চৈত্র, ১৩১৯ দ্রাস্তভাবে আবিষ্ট হইতেন, কখনও কখনও ঈশ্বর ভাবে বিভোর হইয়া বিষ্ণুখট্টার উপবেশন করিলেও, অচিরেই প্রকৃতিস্থ হইয়া যেন অজ্ঞানাবস্থায় না জানিয়া তথায় উপবেশন করিয়াছেন এইরূপ ভাব প্রকাশ করিতেন। কিন্তু আজি নাচিতে নাচিতে তিনি বিষ্ণুখট্রায় গিয়া উপবিষ্ট হইলেন, এবং সাত প্রহর যাবত তথায় বসিয়া রহিলেন । ভক্তগণ সক্ত করে তাহার সম্মুখে দণ্ডায়মান হইলেন। গেীর আদেশ করিলেন আমার অভিষেকসঙ্গীত গান কর। ভক্তগণ ‘সহস্রশীৰ্ষা: পুরুষঃ’ মন্ত্রে গঙ্গাজল দ্বারা তাহার অভিষেক সম্পন্ন করিলেন এবং নুতন বস্ত্র পরিধান করাইয়া গেীরের দেহ চন্দনচর্চিত করিলেন। নিতানন্দ র্তাহার , মস্তকোপরি এক সুন্দর ছত্র ধারণ করিলেন, অঙ্গ এক ভক্ত চামর ব্যঞ্জন করিতে লাগুিলেন। অনন্তর পাদ্য অৰ্ঘ্য আচমনীয় দ্বারা যথাবিধি পূজা শেষ করিয়া ভক্তগণ স্তবপাঠ কমিতে লাগিলেন। ভক্তদন্ত নানাবিধ সুমিষ্ট দ্রব্য ভোজন করিয়া, গেীর ত্রবাসকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, “শ্রীবাস, মনে পড়ে একদিন দেবানন্দের টোলে প্রেমরসময় ভাগবত শুনিতে শুনিতে বিহ্বল হইয়া তুমি ভূমিতে পড়িয়া কাদিয়াছিলে। দেবাননের মূর্থ ছাত্রগণ ক্ৰনদনের কারণ বুঝিতে না পারিয়া বিরক্ত হইয়া তোমাকে টানিতে টানিতে বাহিরদুয়ারে লইয়া গিয়াছিল, দেবানন্দ দেখিয়াও শিষ্যগণকে নিবারণ করেন নাই। তুমি মনে বড় দুঃখ পাইয়া আবার নির্জনে ভাগধভ শুনিতে চাহিয়াছিলে। তোমার দুঃখ দেখিয়া আমি বৈকুণ্ঠ হইতে আসিয়া তোমার ঈদয়ে আবিভূত হইয়াছিলাম এবং প্রেমযোগ দিয়৷