পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ዓ®br চলিতেছে,—যত প্রকার মন ভুলাইবার হাবভাব ও কৌশল দ্বারা রমণী যুবজনের হৃদয়াকর্ষণ অথবা ইন্দ্রিয়াকর্ষণ করিতে পারে, সবগুলিই এই যুবতীবৃন্দ আজ শ্ৰীকৃষ্ণের উপর প্রয়োগ করিতে কৃতসংকল্প হইয়াছে – পীনপয়োধর ভারভরেণ হরিং প্ররিরভ্য সরাগম্। গোপবধুরন্থগাতি কাচিহ্রদঞ্চিত পঞ্চমবুর্গম্। কপি বিলাসধিলোলবিলোচন খেলন-জনিত মনোজম্। ধ্যায়তি মুগ্ধবধূধিকং মধুসুদন-বদন-সরোজম্। কাপি কপোলতলে মিলিতালপিতুং কিমপি শ্রুতিমূলে । চারু চুচুম্ব নিতম্ববতী দয়িতং পুলকৈরমুকুলে । কেলিকলা-কুতুকেন চ কাচিদমুং যমুনা-জল কুলে। মঙুল-বঙুল-কুঞ্জগতং বিচকর্ষ করেণ দুকূলে । কবি পুঞ্জে পুঞ্জে স্ত্রীকৃষ্ণের চতুর্দিকে উপভোগের উপাদান স্তুপীভূত করিয়াছেন। শুধু তাহাই নহে, কবি দেখাইতেছেন যে শ্ৰীকৃষ্ণ এই আকর্ষণে যেন সত্যই আকৃষ্ট— করতলতাল-তরল বলয়া বলি কলিত কলস্বন- বংশে । রাস রসে সহমৃত্যপরাহরিণা যুবতি: প্ৰশংসে ॥ শ্লিষতি কামপি চুম্বতি কামপি কামপি রময়তি 邸 রামাম্। পশুতি সম্মিত-চারু-তরামপরামকুগচ্ছতি বামাম্ গীতগোবিন্দে এমন আভাস আছে যে শ্ৰীকৃষ্ণ যেন শ্রীরাধার উপর আড়ি করিয়া এই আগুনে ঝাঁপ দিয়াছিলেন। আমাদের আধুনিক সাহিত্যে গোবিন্দলাল যাহা করিয়াছিল, এ যেন অনেকটা সেই রকম ঘটনা। ষে ইন্দ্রিয়ের প্রেরণায় এমন করে সে সেই বঙ্গদর্শন [ ১২শ বর্ষ, চৈত্র, ১৩১৯ বহ্নিতে দগ্ধ হয়, তাহার, আর নিস্তার থাকে না। গোবিন্দলাল এই অনলে পুড়িয়া মরিয়াছিল, প্যারিস এই অনলে আত্মাহুতি প্রদান করিয়াছিল। যাহার কেবল ইন্দ্রিয়আকাজ সে এতইন্দ্রিয়োপভোগের উপচারের মধ্যে সম্পূর্ণ আত্মবিস্কৃত হইতে ও আত্মোৎসর্গ করিতে বাধ্য। বুঝি, মুহূর্তের জন্য এই সম্ভাবনা অনন্ত-বিশ্বাসমী শ্রীরাধার মনেও উদিত হইয়াছিল। সেই মুহূৰ্ত্তে তিনি ভাবিয়াছিলেন যে র্তাহীর শ্ৰীকৃষ্ণভক্তি বিফল, র্তাহার মুরারি এই অচ্ছেদ্য বন্ধন, এই অতি তীব্র প্রলোভন এই সুন্দরীবৃন্দের আকর্ষণ ও আলিঙ্গন পাশ ছেদ করিয়া বাহির হইতে পরিবেন না। কিন্তু তাহার এ সন্দেহ শুধু " • যে ক্ষণস্থায়ী তাহা নহে, ইহার সঙ্গে বিশ্বাসের নেশাটা অতিমাত্রায় জড়িত ছিল মামূৰীক্ষা বিলক্ষিত-সুধাৰ্ম্মিত-মুগ্ধাননং কাননে গোবিন্দং ব্রজসুন্দরীগণবৃতং পশু্যামি ‘. f হৃষ্যামি চ | अङ তো আনন্দের তরঙ্গ, অত আমোদের ছড়াছড়ি, অত সুন্দরীর হুড়াহুড়ি, প্রলোভনের বাড়াবাড়ি, তবু আমাকে দেখিয়া বিস্ময়ে ও আনন্দে যাহার মুখকমল’হাপ্লত হইয়া স্মিতসুধা বর্ষণ করে, তাহাকে কে আমার কাছ হইতে দূরে রাখিতে পারিবে ? শ্রীরাধার হৃদয়ে অমন লাঞ্ছনার পরও এই সুন্দর গুৰ্ব্বময় ভাব তখনও বিরাজিত ছিল। কেন ? তিনি জানিতেন যে র্তাহার প্রাণাধিক তাহাকে প্রাণ দিয়া ভালবাসেন । আর এই জন্তই তাহার কাছে র্তাহার বধুর কিছুই দূষ্য বা নিন্দিত ছিল না ; বরং সেই রমণীসমাজে তাহার রূপ কেমন উছলিয়া উঠিতেছিল