পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা ] তেমনি শ্রীরাধার কাছেও সৰী শ্ৰীকৃষ্ণের অবস্থাও বর্ণনা করিয়াছে— সখি সীদতি তব বিরহে বনমালী ॥ দহতি শিশির ময়ুখে মরণমনুকরোতি। পততি মদন বিশিথে বিলপতি বিফলতরোতি। ধ্বনতি মধুপসমূহে শ্রবণমপিদধার্তি। মনসি বলিতবিরহে নিশি নিশি রুদমুপযাতি ॥ বসতি বিপিন-বিতানে ত্যজতি ললিত ধাম । লুঠতি ধরণি-শয়নে বহু বিলপতি তব নাম ॥ সর্থী ব্যথার ব্যর্থী, তাই সে রাধাকে উপদেশ দিয়াছে— ন কুরু নিতস্থিনি গমনবিলম্বন মনুসর তং হৃদয়েশম্ ঐ শোন এই ধীর সমীরে, যমুনাতীরে, তোমার সৰ্ব্বস্ব, তোমার প্রাণকান্ত, তোমার অভীষ্ট ধন বনমালী,— l নাম সমেতং কৃতসঙ্কেতং বাদয়তে মৃদু । বেণুম্। বহু মন্বতে নস্থ তে তন্ত্রসঙ্গত পবন চলিতমপি

  • রেণুম্॥,

সে যে তোমার বঁাশী বাজাইয়াঁ “রাধা নামের সাধা বঁাশী” তে রাধী রাধা বলিয়া ডাকিতেছে,তুমি যাও “ন কুরু নিতস্বিনি গমনবিলম্বনম্”— সে ষে তোমার অদম্পর্শে পবিত্র চালিত ধূলিকণাকেও অমূল্য রত্ন ভাবিয়া গায়ে মাখিতেছে, তুমি আর বিলম্ব করিও না। Qሽ'ርቕ– পততি পতত্রে বিচলতি পত্রে, শঙ্কিতভবন্ধু* s প্যানম্। রচয়তি, শয়নং সচকিতনয়নং পশুতি তব পন্থানম্ ॥ তোমার কুঞ্জবনে সে যে আজি উৎকণ্ঠায় আকুল হইয়া তোমার পথপানে চাহিয়া বসিয়া জয়দেব ও বিদ্যাপতি করিয়া ফেলিয়৷ " や> আছে পাখী নড়িলে, গাছের পাতা খসিলে তুমি আসিয়াছ ভাবিয়া সে যে ব্যস্ত হইয়। তোমাকে অভ্যর্থনা করিবার জন্য শয়ন বিরচন করিতেছে, এমন যে তোমার প্রাণনাথ তাহার কাছে যাইতে বিলম্ব করিতেছ কেন ? এই সর্ব-প্ররোচনার ভিতর কত মধুর ভাবই উথলিয়া উঠিয়াছে;—এই ভাবগুলি লইয়া বঙ্গভাষার কত কবিই নিজের কবিতা পুষ্ট করিয়াছেন, ও বঙ্গসাহিত্যকে সম্পদশালী করিয়াছেন তাহার ইয়ত্তা নাই। জ্ঞানদাসাদির “রসোগার” শীর্ষক কবিতাগুলি যে জয়দেবের পদ হইতে ভাবসংগ্ৰহ করিয়াছিল সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই। আমরা আজকাল অঙ্গসঙ্গের নামে শিহরিতে শিখিয়াছি বটে, কিন্তু অঙ্গসঙ্গ-কামনা কতদূর আধ্যাত্মিকতায় উন্নীত হইতে পারে—তাহা কবি জয়দেব 2찌 দেখাইয়াছেন, যাহার কাছে প্রিয়তমার অঙ্গসংস্থষ্ট ধূলিকণাও বহুমানের যোগ্য বলিয়া বিবেচিত হয়, যে স্বল্পমাত্র শব্দেই প্রিয় সমাগম হইল ভাবিয়া উৎকণ্ঠায় আকুল হয় তাহার হৃদয়ে ভাবের কত গভীরতা তাহার উৎকণ্ঠায় কত মধুরতা, কত প্রাবল্য, কত আকাঙ্কার প্রকাশ তাহ একটু ভাবিয়া দেখিবার বিষয় নয়-কি ? তাহার পর এই সখীসম্বাদে যাহা কিছু আছে তাহা হইতে আমরা বুঝিতে পারি যে সখীর বিশ্বাস যে শ্রীরাধার পক্ষে শ্রীকৃষ্ণের সহিত বিহারই তাহার চরম সাধন ; আত্যস্তিক • সুকৃতি বিপাক। তাই এই ব্যাপারের যাহা কিছু বিঘ্ন সখী তাহা দূর দিতে বলিতেছে—মঞ্জরে কাজ কি, সে যে শুধু বিহারের রিপুস্বরূপ ; •