পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ե8 বঙ্গদর্শন বলিয়া গ্রহণ করিয়াছিলেন, তাহাদের শিক্ষা ও সাধনা কি গভীর ভাবে আত্মপ্রতিষ্ঠার জন্ম নিয়োজিত হইয়াছিল তাহ সহজেই অল্পমেয়। মোক্ষের জন্যই হউক, নিঃশ্রেয়সলাভের জন্যই হউক, অথবা অত্যন্ত দুঃখ নিবৃত্তির জন্যই হউক, যে কোনও লক্ষ্যের দিকেই তাহদের চিন্তাসূত্র প্রলম্বিত হইয়াছিল, সেই দিকেই আর্য্যহিন্দু আত্মপ্রতিষ্ঠার পরাকাষ্ঠী প্রদর্শন করিয়ছিলেন। কালের চক্র ईशत्र পরে কত শত বার আবৰ্ত্তিত হইয়াছে, কত নূতন নূতন লক্ষ্য, নূতন নূতন আদর্শ আমাদের কৰ্ম্ম ও গতিকে পরিচালিত করিয়াছে, এখন আর সে পুরাতন সমাজ নাই,-পুরাতন কৰ্ম্মক্ষেত্র নাই, পুরাতন শিক্ষা নাই—কাজেই সে পুরাতন আত্মপ্রতিষ্ঠার উজ্জ্বল আদর্শও আর নাই। বৰ্ত্তমান অবস্থাবিপৰ্য্যয়ের মধ্যে কেবলমাত্র সেই পুরাতন আদর্শের অনুসন্ধান করিলে চলিবে না। আর্যসভ্যতার সে দ্ব্যতিমান মধ্যাহের রজতকান্তি অপরাহ্লের স্তিমিতালোকে ফিরিয়া পাইবার আশা করা বৃথা। আমাদের এ নূতন জাগরণ বর্তমান যুগের আশা ও কল্পনাকে সার্থক করিবে, পৃথিবীর ইতিহাসের সহিত সামঞ্জস্ত রক্ষা করিবে এবং অন্তাষ্ঠ জাতির সহিত আমাদিগকে সমান আসনে প্রতিষ্ঠিত করিবে । যে আত্মপ্রতিষ্ঠা কাৰ্য্যকারণপরম্পরার অপেক্ষা করিবে না, অন্যান্য জাতির ইতিহাসের প্রতি অবলোকন করিবে ন, অবস্থার প্রতি, দেশ কালের প্রতি, জনসাধারণের প্রকৃতি ও রুচির প্রতি উপেক্ষ। প্রদর্শন করিবে, সে আত্মপ্রতিষ্ঠা সার্থক { ১২শ বৰ্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৯ হইতে পারিবে না বলিয়। মনে হয়। স্বাভাবিক নিৰ্ব্বাচনে সে অাদর্শ কখনও স্থায়িত্ব লাভ করিতে পারিবে না। দেশ, কাল ও অবস্থার বৈচিত্র্য, অন্তান্ত জাতির সহিত সম্বন্ধ প্রভৃতি আমাদের ক্রিয়। ও চিন্তঃপ্রণালীকে স্বভাবতই নিয়ন্ত্রিত করিতেছে। যে শক্তি ধীরে ধীরে প্রবুদ্ধ হইয়া সমাজের বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়া আপনা-আপনি ক্রিয় করিতেছে, তাহাকে রুদ্ধ কfরতে যাওয়া বিড়ম্বনা। আমাদের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি রাখিয়া, প্রকৃতির দিকে দৃষ্টি রাখিয়৷ এই নূতন জাগরণকে মঙ্গলের পথে পরিচালিত করাই বৰ্ত্তমান যুগে ভারতীয় শিক্ষার আদর্শ। ফল পাকিয় যখন বৃত্তচু্যত হইতে, চলিয়াছে, তখন তাহাকে বধিয়া রাখিতে কেহ চাহে না । পুরাতনের প্রতি মমত্বপরবশ হইয়া তাহাকে বাধিয়া রাখিতে চেষ্টা করা বিফল। কিন্তু সেই যে পুরাতন আর্য্য-আত্মপ্রতিষ্ঠার মধ্যে একটা মহিমময় আশ্বাস, আত্মনির্ভর ও সনাতনত্ব ছিল, তাহাকে বিদায় দিলে চলিবে না। নূতন ও পুরাতনের যে অপুৰ্ব্ব সমাবেশে দেশে এক চির মঙ্গলময় আদর্শের আবির্ভাব হইবে, তাহা জগৎ বিস্ময়ের সহিত নিরীক্ষণ করিবে । o আমাদের জাতীয় জীবনের তরুণারুণরাগের উদয়ে যে মঙ্গলধ্বনি অক্সরণিত হইয়া উঠিয়াছে, তাহাকে স্বাগত জানাইবার জন্য ভারতের বিভিন্ন জাতি প্রস্তুত হইয়া উঠিয়াছে। গত কয়েক বৎসরের মধ্যে যে সকল ক্ষুদ্র বৃহৎ তরঙ্গ আমাদের