পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] জীবনকে আন্দোলিত করিয়া তুলিয়াছে, তাহার নিয়ে শিক্ষার জন্য একটি অধীর ব্যগ্রতার লোত বহিয়া যাইতেছে। আমাদের মুসলমান ভ্রাতৃগণ র্তাহাদের স্বজাতির শিক্ষার জন্য বিধিমতে আয়োজন করিতেছেন। তাহাদের ক্ষুদ্র বৃহৎ প্রয়াসগুলি গ্রথিত হইয়। এক বিপুল ইসলামবিশ্ববিদ্যালয়ের কল্পনায় পরিণত হইয়াছে। হিন্দুরাও পশ্চাৎপদ হইবার নহেন ; হিন্দুদিগের মধ্যে জ্ঞানচর্চার যে স্পৃহা আছে, মাননীয় মালব্য মহাশয় অজস্র রৌপ্যমুদ্রায় তাহার পরিমাপ ক রয়া দেখাইয়াছেন। হিন্দুদিগের মধ্যে আবার বিভিন্ন জাতি অপেক্ষাকৃত স্বল্পপরিসর ভূমিতে নিজ নিজ শক্তি নিয়োজিত করিয়া শিক্ষার ব্যবস্থ৷ করিতেছেন—ব্রাহ্মণ-সভা, কায়স্থ-সভা, মাহিষ্য-সভা, বৈহু-বারজিবি-সভা, নমঃশূদ্রসভা প্রভৃতি বিবিধ অনুষ্ঠান জন্ম গ্রহণ করিয়া এক প্রবল জাগরণ ও আত্মপ্রতিষ্ঠার সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে। এ দেশের রমণীরাও র্তাহীদের স্বভাবসুলভ অলসতা পরিহার পূৰ্ব্বক অন্তঃপুরের শিক্ষা-বিধানের জন্য অগ্রসর হইয়াছেন। রাজকীয় শক্তিও এ বিষয়ে উদাসীন নহে। গতবর্ষে শিমলা ও এলাহাবাদে রাজপুরুষদিগের যে শিক্ষাসন্মিলন হইয়া গিয়াছে; বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ র্ষেরুপ সচেষ্ট ভাবে শিক্ষাবিস্তাররূপ দারিত্বে মনোনিবেশ করিয়াছেন, এবং বিশেষজ্ঞ অধ্যাপকদিগের দ্বারা ছাত্রগণের জ্ঞানার্জনপৃহা চরিতার্থ করিতে ব্যাপৃত হইয়াছেন, তাহাতে বাস্তবিক অশি হয় যে, আমাদের শিক্ষায় পথ অনেক প্রশস্ত হইয়াছে। এ শিক্ষা ও আত্মপ্রতিষ্ঠা Երհ অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা কল্পে সম্রাটের দান বড়ই সময়োপযোগী হইয়াছে। মাননীয় গোখলে মহোদয়ের প্রাথমিক শিক্ষাসংক্রান্ত ব্যবস্থা সমগ্র দেশের আত্মপ্রতিষ্ঠার আকাজক্ষার প্রতিধ্বনিমাত্র । আমাদের । শিক্ষার জন্য রাজকীয় চেষ্টার আর একটি উদাহরণ—ঢাকা-বিশ্ববিদ্যালয় । দেশের লোকের সহায়তায় রাজপুরুষগণের চেষ্টা আশাতীত রূপে সফল হইয়৷ ಕ್ಷಿ, ইহা চিন্তাশীল ব্যক্তি মাত্রেরই কামন৷ হওয়া উচিত। আমাদের দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিগণ যে প্রজা-শিক্ষার জন্য অধুনা অকাতরে অর্থ ব্যয় করিতেছেন—ইহাও আমাদের পক্ষে আশার কথা । আজ এই সভাস্থলে দাড়াইয়া আমাদের দেশের প্রজাবৎসল ভূপতিকুলের আদর্শস্বরূপ সভাপতি কাশিমবাজারের মহারাজ বাহাদুরের সমক্ষে এই বিষয় উল্লেখ করিয়া আমি গৰ্ব্ব অনুভব করিতেছি। এইরূপে অসংখ্য চেষ্টা আমাদিগকে নানা আবৰ্ত্ত ও বাধার মধ্য দিয়া লক্ষ্যের অভিমুখী করিয়া দিতেছে। শিক্ষার আয়োজন হইতে আত্ম-প্রতিষ্ঠা জন্ম লাভ করিয়া উন্নততর, পূর্ণতর, সুন্দরতর শিক্ষাপ্রণালীর প্রস্থতি হইবে। পুরাতন আদর্শকে সম্মুখে রাখিয়া, মাতৃভাষাকে অবলম্বন করিয়া নূতন শিক্ষা-প্রণালী আমাদের সৰ্ব্ববিধ মঙ্গলের নিলয় হইবে। এই যে আরাধ্যতম লক্ষ্য, ইহা জ্ঞানের দ্বারা শিক্ষার দ্বারা লাভ করিতে হয় । গন্তব্য পথ দীর্ঘ, কিন্তু পাথেয়ও অপ্রচুর নহে। উপযুক্ত সাধনার অভাব না ঘটিলে