পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা | সূৰ্য্যমুখী কাহাকে না ভাল বাসিতে পারিতেন ! কুন্দ স্বামীর হৃদয়াধিকারিণী, কুন্দের জন্য গগর জীবনসৰ্ব্বস্ব, র্তাহার একমাত্র চিন্তার বস্তু, মুখের উপকরণ, স্বামীরু ভালবাসায় বঞ্চিত হইয়া, সূৰ্য্যমুখী দেশত্যাগিনী পথের কাঙ্গালিনী হইয়াছিলেন, সেই কুন্দের জন্য র্তাহার উচ্চৈঃস্বরে রোদন, শ্রীচরণ tyసి সেই কুন্দের মৃত্যু আসন্ন বুঝিয়া তিনি বলিতেছেন, “সৰ্ব্বনাশ হইয়াছে। আমি এত দিনে জানিলাম আমার কপালে এক দিনেরও মুখ নাই—নতুবা আমি আবার সুখী হইবামাত্রই এমন সৰ্ব্বনাশ হইবে কেন ?” হৃদয়ের মহত্ত্ব ও সৌন্দর্য্যে এরূপ কমই দেখিতে পাওয়া যায়। শ্ৰীলোকনাথ চক্রবর্তী । শ্রীচরণ পৃথিবীর অন্যান্য দেশ নারীদেহের নান৷ অঙ্গের সুষমা দেখিয়া মুগ্ধ হইয়াছে বটে, কিন্তু সকল অঙ্গের ভিত্তিভূমি শান্তিপ্রদ চরণকমলের সৌন্দৰ্য্য ও মহিমা-কীৰ্ত্তন এক মাত্র ভারতবর্ষেরই একান্ত বিশেষত্ব। মন্তান্ত দেশের সুকুমার সাহিত্যে মরালগ্রীব, নীলামুনেত্র, অরুণগও এবং মধুর বিম্বাধরের প্রশংসার অভাব নাই, কিন্তু সেখানে শ্রীচরণের “থল কমল শোভা" উপযুক্ত মৰ্য্যাদা লাভ করিয়াছে বলিয়া মনে श्श्वे नों ! ভারতবর্ষীয় শ্ৰীচরণের “হৃদয়-পর্বক” অলক্তরাগ অথবা ভারতবাসীর প্রকৃতিগত ভক্তিরস এই চরণমহিমারু মূলকরণ কি না জালি না, কিন্তু শ্ৰীচরণের মহিমা ভারতবর্ষে যেমন উচ্চকণ্ঠে ঘোষিত এমন আর কোথাও মহে। সৰ্ব্বাপেক্ষা প্রাচীন কবি হইতে আরম্ভ করিয়া সৰ্ব্বাপেক্ষা আধুনিক কবি পৰ্য্যন্ত সকলেই এই মন্ত্রের উপাসক। ধাঙ্গালীর বিদ্যাপতি হইতে রবীন্দ্রনাথ পৰ্য্যন্ত কেহই এ বিষয়ে ক্রটি প্রদর্শন করেন নাই । সুবিমল নখরসংযুক্ত শ্ৰীচরণ দেখিয়৷ কেহ বা বিস্ময়ে গাহিয়াছেন— “কমল যুগল পর চাদক মাল।” কেহ গাহিয়াছেন— “যাহা যাহা পদযুগ ধরই র্তাহি তঁহি সরোরুহ ভরই ॥” কেহ বলিয়াছেন— “উরুযুগ কদলী করিবর কর জিনি স্থল পঙ্কজ পদ পাণি নখ দাড়িম বীজ ইন্দু বরণ জিনি পিক জিনি অমিয়া বাণী।” কেহ গাহিয়াছেন— “যে চাপার ফুল তব অঙ্গুলি দেখিয়৷ কটুগন্ধ সার করে নীরস হইয়া।" | কেহ গাহিয়াছেন— - “অকলঙ্ক হইতে শশাঙ্ক আশা ল’য়ে পদনখে রহিয়াছে দশরূপ হ’য়ে।” । কেহ বা নিৰ্ব্বাক বিস্ময়ে ভাবিতেছেন—