পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

તૈ૨ পরিমাণ লোকের বর্ণজ্ঞান জন্মিবার প্রয়োজন আপনারা অনুভব করিতেছেন,সেই পরিমাণে এ শিক্ষাও আগনা হইতেই দেশের মধ্যে ছড়াইয়া পড়িতেছে, তার জন্য কোনো প্রকারের জোরজবরদস্তি করা একান্তই অনাবশুক । আজ আমাদের এই বাংলা দেশের সাধারণ লোকের মধ্যে যে পরিমাণ লোক লেখাপড়া জানেন, বিশ-ত্রিশ বৎসর পূৰ্ব্বে তত লোকে জানিতেন না। আবার দশ বৎসর পরে এই বর্ণজ্ঞান আরও যে অনেকটা ছড়াইয়া পড়িবে, তারও কোনো সন্দেহ নাই । আর এই অতি সহজ ও • স্বাভাবিক উপায়ে আপনা হইতেই যখন দেশের অধিকাংশ লোক বর্ণজ্ঞ হইয়৷ উঠিবেই উঠিবে, এবং এই বর্ণজ্ঞানের যা কিছু ফলাফল তাহ লাভ করিতে পরিবে: তখন অমন রাতারাতি তাদের গলায় দড়ি দিয়া স্কুলে টানিয়া অনিবার জন্ত কোনো বাকুলতার কারণ দেখা যায় না। দেশের সাধারণ লোকের এরূপ লেখাপড়া শিক্ষার পক্ষে যদি কোথাও কিছু অন্তরায় থাকে, তাহা সৰ্ব্বপ্রথমে দূর করিয়া দাও । যে গ্রামে স্কুল-পাঠশালা নাই, সেখানে এগুলি স্থাপিত কর। যার স্কুল-পাঠশালায় আপন হইতে পড়িতে আসিতে চায়, প্রয়োজন হইলে, তাহাদিগকে পাঠ্য পুস্তকাদি কিনিয়া দিযার ব্যবস্থা কর। দিনের বেলায় যারা আপনাদের পৈত্রিক ব্যবসায়ে নিযুক্ত থাকে বলিয়া, পাঠশালার আসিতে পারে না, তাদের জন্য নৈশ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থা কর। যারা পাঠশালার অতি সামান্ত বেতন পৰ্যন্ত জুগাইতে পারে বঙ্গদর্শন [ ১২শ বৰ্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৯ না, তাদের বিনা বেতনে পড়িতে দাও। সাধারণ বয়স্থ লোকদিগের জ্ঞানোন্নতির জন্ত কথকতা, ছায়াবাজি, • বায়স্কোপ, এ সকলের ব্যবস্থা করিয়া, বিনা বর্ণজ্ঞানশিক্ষায় যাহাতে তাহীদের চিন্তা ও ভাব বাড়িয়া উঠিতে পারে, তার আয়োজন কর। কিন্তু যার যে বিষয়ে রুচি জন্মায় নষ্ট, যার এই বর্ণজ্ঞান লাভ করিবার জন্য সময় ও শক্তি ব্যয় করিবার সঙ্গতি নাই, তাহাকে আইনের ভয় দেখাইয়া, রাজবিধানের ও রাজদণ্ডের শাসনে জোর করিয়। পাঠশালায় আনিবার জন্য ব্যস্ত হইও না । ইহাতে সুফল অপেক্ষ কুফলই ফলিবfর সস্তাবনা বেশি। আর এই কুফলের আশঙ্কাতেই এই উদ্ভট ও অনুকরণপর শংস্কার-প্রয়াসের প্রতিবাদ. করা হয় ; নতুৰ দেশের জনসাধারণে চিরদিন অজ্ঞ হইয়! থা’ক, ইহা যেমন সংস্কারকেরা বাঞ্ছনীয় মনে করেন ना, র্যারা তাদের এই চেষ্টার প্রতিরোধ করা কৰ্ত্তব্য জ্ঞান করেন, তারাও ইহা কখনই বাঞ্ছনীয় ভাবেন না ও বলেন না। বিলাতে কিছুকাল হইতে যে জবরদস্তির সাৰ্ব্বজনীন সাধারণ শিক্ষা প্ৰবৰ্ত্তিত হইয়াছে, তাহারওঁ যে কোনো কুফল ফলিতেছে না, এমন নয়। চৈত্রের সংখ্যার বঙ্গদর্শনে এ সকল কুফলের কতকট আলোচনা করিয়াছি। সেখানেও এই জোরজবরদস্তি না করিলেই, বোধ হয়, ভাল হইত। তবে বিলাতী সমাজের প্রকৃতি যৈত্নপ গড়িয়া উঠিয়াছে, সেখানে যে ভাবে, নানা কারণে, পরিবারের স্নেহের সম্বন্ধুসকল কতকটা শিথিল হইয়া পড়িয়াছে, আর সৰ্ব্বোপরি