পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉S)● সময় রাজলক্ষ্মীর বিহারীকে মনে পড়িয়া গেল। কতদিন বিহারী আসে নাই, তাহার ঠিক নাই। আশাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “বেীমা, বিহারী এখন কোথায় আছে জান ?” আশা বুঝিতে পারিল, চিরকাল রোগতাপের সময় বিহারীই মার সেবা করিয়া আসিয়াছে । তাই কষ্টের সময় বিহারীকেই মাতার মনে পড়িতেছে । হায়, এই সংসারের অটল নির্ভর সেই চিরকালের বিহারীও দূর হইল! বিহারি-ঠাকুরপো থাকিলে এই ঃসময়ে মার যত্ন হইত—ইহার মত তিনি হৃদয়হীন নহেন । আশায় হৃদয় হইতে দীর্ঘনিশ্বাস পড়িল । রাজলক্ষ্মী। “বিহারীর সঙ্গে মহীন বুঝি ঝগড়া করিয়াছে ? বন্ধু অন্তায় করিয়াছে বৌমা ! তাহার মত এমন হিভাকাঙ্কী বন্ধু মহীনের আর কেহ নাই।”—বলিতে বলিতে তাহার দুই চক্ষুর কোণে অশ্রুজল জড় হইল। একে একে আশার অনেক কথা মনে পড়িল । অন্ধ মূঢ় আশাকে যথাসময়ে সতর্ক করিবার জন্য বিহারী কতরূপে কত চেষ্টা করিয়াছে এবং সেই চেষ্টার ফলে সে ক্রমশই আশার অপ্রিয় হইয়া উঠিয়াছে, সেই কথা মনে করিয়া আজ আশা মনে মনে নিজেকে তীব্রভাবে অপমান করিতে লাগিল। একমাত্র মুহৃদকে লাঞ্ছিত করিয়া একমাত্র শক্রকে যে বক্ষে টানিয়া লম্ব, বিধাতা সেই কৃতঘ্ন মুখকে কেন না শাস্তি দিবেন ! ভগ্নহৃদয় বিহারী যে নিশ্বাস cशिब्र ७ घन्न श्हेप्ड विनाच्न श्हेब्र ८श्रप्छ, সে নিশ্বাস কি এ ঘরকে লাগিবে না ? আবার অনেকক্ষণ চিস্তিতমুখে স্থির বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আষাঢ় থাকিয়া রাজলক্ষ্মী হঠাৎ বলিয়া উঠিলেন, “লেীম, বিহারী যদি থাকিত, তবে এই .দুদিনে সে জামাদের রক্ষা করিতে পারিভ— এতদূর পর্য্যন্ত গড়াইতে পাইত ন}!” আশা নিস্তব্ধ বসিয়া ভাবিতে লাগিল । রাজলক্ষ্মী নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “সে যদি খবর পায় আমার ব্যামে হইয়াছে, তবে সে না আসিয়া থাকিতে পরিবে না।” আশা বুঝিল, রাজলক্ষ্মীর ইচ্ছা বিহারী এই খবরটা পায় । বিহারীর অভাবে তিনি আজকাল একেবারে নিরাশ্রর চক্টয়া श्रकुिम्नोएक्कन । ঘরের আলো নিবাইয়া দিয়া মহেন্দ্র জ্যোৎস্নায় জান্‌লার কাছে চুপ করিয়া দাড়াইয়াছিল। পড়িতে আর ভাল লাগে না। গৃহে কোন সুখ নাই । যাহার পরমাত্মীয়, তাহাদের সঙ্গে সহজভাবের সম্বন্ধ দুর হইয়া গেলে, তাহাদিগকে পরের মত অনায়াসে ফেলিয়া দেওয়া যায় না, আবার প্রিয়জনের মত অনায়াসে ভাহাদিগকে গ্ৰহণ করা যায় না,—তাহীদের সেই অত্যাজ্য আত্মীয়তা অহরহ অসহ ভারের মত বক্ষে চাপিয়া থাকে। মার সন্মুখে যাইতে মহেন্দ্রের ইচ্ছা হয় না,—তিনি হঠাৎ মহেন্দ্রকে কাছে আসিতে দেখিলেই এমন একটা শঙ্কিত উদ্বেগের সহিত তাহার মুখের দিকে চান যে, মহেন্দ্রকে তাহ আঘাত করে। আশা কোন উপলক্ষ্যে কাছে আসিলে তাহার সঙ্গে কথা কহাও কঠিন হয়, চুপ করিয়া থাকাও কষ্টকর হইয়া উঠে । এমন করিয়া দিন আর কাটিতে চাহে না । মহেন্দ্র দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করিয়াছিল, অন্তত সাতদিন সে