পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS8 অর্চনালাভ করিয়া অধিবাসিবর্গের শৌর্য্যসমাদরের পরিচয় প্রদান করিতেন । ભો বৰ্দ্ধনের রাজধানীতে র্তাহার মন্দির থাকার . উল্লেখ করিয়া কহলণপণ্ডিত প্রসঙ্গক্রমে নাগরিক শৌর্য্যের কথাও অভিব্যক্ত করিয়া গিয়াছেন । মুখ, শান্তি, জ্ঞান ও বাহুবলে পৌণ্ডবৰ্দ্ধন যে খ্যাতিলাভ করিয়াছিল, তাহ এই সকল বর্ণনায় বিলক্ষণ হৃদয়ঙ্গম হয়। এই কাৰ্ত্তিকেয়মন্দিরে ভরতাচার্যনিদিষ্ট-নাট্যশাস্ত্রাঙ্গুমোদিত-কলাপ্রয়োগ-দর্শনার্থ নাগরিকগণ সমবেত হইয়। বিশ্রামসময়ে চিত্তবিনোদন করিতেন। জয়াপীড় তথায় যাতায়াত করিতে করিতে কমলানামী অভিনেত্রীর প্রণয়পাশে আবদ্ধ হইয়া পড়িলেন। সে কাহিনী উপন্সাসের মতই বিস্ময়েtৎপাদক । জয়াপীড় কাহাকেও চিনিতেন না ; র্তাহাকে ও কেহ চিনিত না । তিনি ছদ্মবেশে নগরভ্রমণ করিতেন ; ছদ্মবেশে অভিনয়দর্শন করিতেন ; ছদ্মবেশেই বিশ্রামার্থ তরুতলে বা শিলাসোপানে উপবেশন করিয়া চিত্তবিনোদন করিতেন । কমলার কলাচাতুৰ্য্য তাহাকে তীক্ষ পর্যবেক্ষণশক্তির অধিকারিণী করিয়াছিল ;–সে শীঘ্রই জয়াপীড়কে ছদ্মবেশধারী রাজা বা রাজপুত্র বলিয়া চিনিয়া ফেলিল ! তখন জয়াপীড়কে কমলার আতিথ্যস্বীকার করিতে হইল। বাহিরে বাহিরে নগরভ্রমণ করিয়া জয়াপীড় পৌণ্ডবৰ্দ্ধনের মুখসমৃদ্ধি ও শিক্ষাদীক্ষার যথেষ্ট পরিচয় প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। কিন্তু কমলার গৃহে পদার্পণ করিয়া আর এক নুতন জগতে উপনীত হইলেন। কমলা বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আষাঢ়। রঙ্গভূমির হাবভাবৃলীলাময়ী সামান্স গণিকাদারিক নহে ;–তাহার গৃহ রাজগৃহের ন্তায় প্রকেষ্ঠে, কক্ষে, বাতায়নে, অলিনো মুবিন্যস্ত। কমলা সামান্ত বস্ত্রাণস্কারভূষিতা পণ্যাঙ্গনী নহে ;—তাহার গৃহে স্বর্ণসিংহাসন, সুবর্ণখট্ট ! কমলা কলালাপচতুর সুশিক্ষিত। শারিক নহে ;–“অগ্রাম্যপেশলালাপী” পণ্ডিত ! তাহার কথা সংস্কৃত, সে ভাষায় জয়াপীড় মুগ্ধ হইয় পড়িলেন। তখন পৌণ্ডবদ্ধনের শিক্ষামুশীলন এতদূর উন্নত হইয়াছিল যে, বেতাও কথোপকথনে বিশুদ্ধ সংস্কৃতভাষা প্রয়োগ করিত। ইহাতে জয়াপীড় তাহাকে আর বেশু বলিয়া ঘৃণা করিতে পারিলেন না। উভয়ে উভয়ের গুণানুরক্ত হইয়া পড়িলেন। কমলার গৃহে অবস্থিতি করিবার সময়েও জয়াপীড় পূৰ্ব্ববৎ ছদ্মবেশে নগরভ্রমণ করিতেন ; নদীতটে সায়ংসন্ধা সমাপন করিয়া রজনীমুখে বিশ্রামার্থ কমলামন্দিরে উপনীত হইতেন । এই সময়ে এক আরণ্য সিংহ রাজধানীতে উপনীত হইয়। আতঙ্ক উপস্থিত করিয়াছিল। কেহ তাহাকে ধরিতে বা মারিতে পারিত না ; সে সুযোগ পাইলেই নরনারী উদরসাৎ করিত। কথাপ্রসঙ্গে কমলা একদা সেই সিংহভীতির উল্লেখ করিয়া সায়ংকালের পূৰ্ব্বেই গৃহাগমনের জন্ত জয়াপীড়কে অনুরোধ করিলেন। জয়াপীড়ের রীরবাহু বহুদিন ব্যায়ামহীন হইয়া তাহাকে রুদ্ধবীৰ্য্য ভুজঙ্গের,স্তায় কষ্টপ্রদান করিতেছিল ; তিনি সিংহুসংগ্রামের সুযোগ পাইয়া উৎফুল্ল হইয়া উঠিলেন। কাহাকেও কিছু না বলিয়া অবসরের