পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8 e ইহা কি প্রকারের ? যেমন চীরধারী যে একটি দল নিজেকে সাধু ও সাধক বলিয়া পরিচয় দেয়, তাহারা গাজার নেশাকে আধ্যাত্মিক আনন্দলাভের সাধনা বলিয়া মনে করে। নেশায় একাগ্রতা জন্মে, উত্তেজনা হয়, কিন্তু তাহাতে আধ্যাত্মিক স্বাধীন সবলতা হ্ৰাস হইতে থাকে। আর সমস্ত ছাড়া যায়, কিন্তু এই নেশার উত্তেজনা ছাড়া যায় ন!—ত্রমে মনের বল যত কমিতে থাকে, নেশার মাত্রা ও তত বাড়াইতে হয়। ঘুরিয়া নৃত্য করিয়া বা সশব্দে বাদা বাজাইয়া, নিজেকে উদৃত্ৰাস্ত ও মুচ্ছৰ্ণন্বিত করিয়া যে ধৰ্ম্মোন্মাদের বিলাস সম্ভোগ করা যায়, তাহাও কৃত্রিম । তাহাতে অভ্যাস জন্মিয়৷ গেলে, তাহা অহিফেসের নেশার মত আমাদিগকে অবসাদের সময় কেবলি তা দুনা করিতে থাকে। আত্মসমাহিত শান্ত একনিষ্ঠ সাধনা ব্যতীত যথার্থ স্থায়ী মূল্যবান কোন জিনিষ পাওয়া যায় না ও স্থায়ী মূল্যবান্‌ কোন জিনিয রক্ষা করা যায় না। অথচ আবেগ ব্যতীত কাজ ও কাজ ব্যতীত সমাজ চলিতে পারে না । এইজন্যই ভারতবর্ষ আপন সমাজে গতি ও স্থিতির সমন্বয় করিতে চাহিয়াছিল। ক্ষত্ৰিয়, বৈশু প্রভৃতি যাহার হাতে-কলমে সমাজের কাৰ্য্যসাধন করে, তাহাদের কৰ্ম্মের সীমা নির্দিষ্ট ছিল । এইজন্তই ক্ষত্রিয় ক্ষত্রিধৰ্ম্মের অদৈর্শ রক্ষা করিয়া নিজের কর্তব্যকে ধৰ্ম্মের মধ্যে গণ্য করিতে পারিত। স্বার্থ ও প্রবৃত্তির উৰ্দ্ধে ধৰ্ম্মের উপরে কর্তব্যস্থাপন করিলে, কাজের মধ্যেও বিশ্রাম এবং অধ্যাত্মিকতা লাভের অবকাশ পাওয়া যায়। বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ণ, আষাঢ় । f - যুরোপীয় সমাজ যে নিয়মে চলে, তfহাতে গতিজনিত বিশেষ একটা বোকের মুখেই অধিকাংশ লোককে ঠেলিয়া দেয় । সেখানে বুদ্ধিজীবী লোকের রাষ্ট্রীয় ব্যাপারেই ঝুকিয়া পড়ে—সাধারণ লোকে অর্থোপার্জনেই ভিড় করে। বর্তমানকালে সাম্রাজ্যলোলুপতা সকলকে গ্রাস করিয়াছে এবং জগৎ জুড়িয়া লঙ্কাভাগ চলিতেছে । এমন সময় হওয়া বিচিত্র নহে, যখন বিশুদ্ধ জ্ঞানচর্চ যথেষ্ট লোককে আকর্ষণ করিবে না। এমন সময় আদিতে পারে, যখন আবশুক হইলেও সৈন্য পাওয়া যাইবে না। কারণ, প্রবৃত্তিকে কে ঠেকাইবে? যে জম্মণী একদিন পণ্ডিত ছিল, সে জৰ্ম্মণী যদি বণিকৃ হই যা দাড়ায়, তবে তাহার পাণ্ডিত্য উদ্ধার করিবে কে ? ৰে ইংরাজ একদিন ক্ষত্রিয় ভাবে অাৰ্ত্তন্ত্রাণব্ৰত গ্রহণ করিরাছিল, সে যখন গায়ের জোরে পৃথিবীর তুর্দিকে নিজের দোকানদারী চালাইতে ধাবিত হইয়াছে—তখন তাহাকে তাহার সেই পুরাতন উদার ক্ষত্রিয়ভাবে ফিরাইরা আনিবে কোন শক্তিতে ? এই কোকের উপরেই সমস্ত কর্তৃত্ব না দিয়া সংযত সুশৃঙ্খল কর্তব্যবিধানের উপরে কর্তৃত্বভার দেওয়াই ভারতবর্ষীয় সমাজপ্রণালী। সমাজ যদি সজীব থাকে, বাহিप्ञब्र आधारङग्न छाप्न अडिङ्कङ श्हेब्रा ना পড়ে, তবে এই প্রণালী অনুসারে সকল সময়েই সমাজে সামঞ্জস্য থাকে-একদিকে হঠাৎ হুড়ামুড়ি পড়িয়া অন্যদিক্‌ শুন্য হইয়া যায় না। সকলেই আপন আদর্শ রক্ষা করে এবং আপন কাজ করিয়া গৌরব বোধ করে ।