পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

98९ পড়,ক, কিন্তু সেই পথের পথিক যদি থাকে, যদি এই আদর্শের প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত অনেকের মধ্যে দেখিতে পাওয়া যায়, তবে সেই চেষ্টার দ্বারা, সেই সাধনার দ্বার, সেই সফলতা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের দ্বারাই সমস্ত সম্প্রদায় সার্থক হইয়া থাকে । আমাদের আধুনিক ব্রাহ্মণসমাজে সেই আদর্শই নাই । সেইজন্যই ব্রাহ্মণের ছেলে ইংরাজি শিখিলেই ইংরাজি কেতা ধরে---পিতা তাহাতে অসন্তুষ্ট হন না । কেন ? এম্-এপাস করা মুখোপাধ্যায়, বিজ্ঞানবিৎ চট্টোপাধ্যায় যে বিদ্যা পাইয়াছেন, তাহ ছাত্রকে ঘরে ডাকিয়া আসন হইয়া বসিয়া বিতরণ করিতে পারেন না ; সমাজকে শিক্ষাঋণে ঋণী করিবার গৌরব হুইতে কেন তাহারা নিজেকে ও ব্রাহ্মণসমাজকে বঞ্চিত করেন ? র্তাহারা জিজ্ঞাসা করিবেন, থাইব কি ? যদি কালিয়া-পোলোয় না থাইলেও চলে, তবে নিশ্চয়ই সমাজ আপনি আসিয়া যাচিয়৷ থা ওয়াইয়। যাইবে । র্তাহীদের নহিলে সমাজের চলিবে না, পায়ে ধরিয়া সমাজ র্তাহাদিগকে রক্ষা করিবে। আজ র্তাহারা বেতনের জন্ত হাত পাতেন, সেইজন্ত সমাজ রসিদ লইয়া টিপিয়া-টিপিয় তাহাদিগকে বের্তন দেয় ও কড়ায়-গণ্ডায় তাহীদের কাছ হইতে কাজ আদায় করিয়া লয়। র্তাহারাও কলের মত বাধা নিয়মে কাজ করেন ; শ্রদ্ধা দেনও না, শ্রদ্ধ পানও না—উপরন্তু মাঝে মাঝে সাহেবের পাদুক পৃষ্ঠে বহনকরা-রূপ অত্যন্ত তুচ্ছ ঘটনার স্ববিখ্যাত উপলক্ষ্য হইয়া উঠেন। আমাদের সমাজে ব্রাহ্মণের কাজ পুন বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আষাঢ় রায় আরম্ভ হইবে, এ সম্ভাবনাকে আমি ৯রপরাহত মনে করি না এবং এই আশাকে আমি লঘুভাবে মন হইতে অপসারিত করিতে পারি না। ভারতবর্ষের চিরকালের প্রকৃতি তাহার ক্ষণকালের বিকৃতিকে সংশোধন করিয়া লইবেই। এই পুনর্জাগ্রত ব্রাহ্মণসমাজের কাজে অব্রাহ্মণ অনেকে ও যোগ দিবেন। প্রাচীন ভারতেও ব্রাহ্মণেতর অনেকে ব্রাহ্মণের ব্রত গ্রহণ করিয়া জ্ঞানচর্চা ও উপদেষ্টার কাজ করিয়াছেন—ব্রাহ্মণ ও তাহীদের কাছে শিক্ষালাভ করিয়াছেন, এমন দৃষ্টাস্তের অভাব নাই । প্রাচীনকালে যখন ব্রাহ্মণই একমাত্র দ্বিজ ছিলেন না, ক্ষত্রিয়-বৈশু ও দ্বিজসম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন, যখন ব্রহ্মচৰ্য্য অবলম্বন করিয়া উপযুক্ত শিক্ষালাভের দ্বারা ক্ষত্রিরবৈপ্তের উপনয়ন হইত, তখনই এ দেশে ব্রাহ্মণের আদর্শ উজ্জল ছিল। কারণ, চারিদিকের সমাজ যখন অবনত, তখন কোন বিশেষ সমাজ আপনাকে উন্নত রাখিতে পারে না, ক্রমেই নিম্নের আকর্ষণ তাহাকে নীচের স্তরে লইরা আসে । ভারতবর্ষে যখন ব্রাহ্মণই একমাত্র দ্বিজ অবশিষ্ট রহিল, যখন তাহার আদর্শ স্মরণ করাইয়া দিবার জন্ত, তাহার নিকট ব্রাহ্মণত্ব দাবী করিবার জন্ত চারিদিকে আর কেহই রহিল না, তখন তাহার দ্বিজত্বের বিশুদ্ধ কঠিন আদর্শ দ্রুতবেগে ভ্ৰষ্ট হইতে লাগিল। তখনি সে জ্ঞানে বিশ্বাসে, রুচিতে ক্রমশ নিকৃষ্ট অধিকারীর জ্বলে আসিয়া উত্তীর্ণ হুইল চারিদিকে যেখানে গোলপাতার কুড়ে,