পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꮌ8bz বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আধা । নহে, জীবননিকুঞ্জের ফলবান বৃক্ষ হইয়া উঠিয়াছে। অকস্মাৎ উদ্বেলিত সমুদ্রের বন্যার नाग्नि যখন আমাদের সমাজের মধ্যে ভাবের আনন্দ প্রবাহিত হইবে, তখন আমাদের দেশের এই সকল প্রাচীন নদীপথগুলিই কুলেকুলে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিবে। তখন স্বভাবতই আমাদের দেশ ব্রহ্মচর্য্যে জাগিয়া উঠিবে, সামসঙ্গীতধ্বনিতে জাগিয়া উঠিবে, ব্রাহ্মণে ক্ষত্রিয়ে বৈশ্রে জাগিয়া উঠিবে। যে পার্থীরা প্রভাতকালে তপোবনে গান গাহিত, তাহারাই গাছিয়া উঠিবে, দাড়ের কাকাতুয়া বা খাচার কেনারি-নাইটিঙ্গেল নহে। আমাদের সমস্ত সমাজ সেই প্রাচীন দ্বিজত্বকে লাভ করিবার জন্য চঞ্চল হইয়৷ উঠিতেছে, প্রত্যহ তাহার পরিচয় পাইয়। মনে আশার সঞ্চার হইতেছে। একসময় আমাদের হিন্দুত্ব গোপন করিবার, বর্জন করিবার জন্য আমাদের চেষ্টা হইয়াছিল— সেই আশায় আমরা অনেকদিন চাদনীর দোকানে ফিরিয়াছি ও চৌরঙ্গী-অঞ্চলের দেউড়িতে হাজরি দিয়াছি। আজ যদি আপনাদিগকে ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-বৈহু বলিয়া প্রতিপন্ন করিবার উচ্চাকাঙ্ক্ষ আমাদের, : পান, বৃহৎ ভাবের মহত্বের কাছে আপনাদের ক্ষুদ্র পাণ্ডিত্যের ব্যর্থ বাদ-বিবাদ যাহার লজ্জার সহিত নিরস্ত না করেন, তাহারা যে সমাজের আশ্রয়ে মানুষ হইয়াছেন, সেই সমাজেরই শক্র । দীর্ঘকাল হইতে ভারতবর্ষ আপন ব্রাহ্মণ-ক্ষত্রিয়-বৈশ্য সমাজকে আহবান করিতেছে। য়ুরোপ,তাহার জ্ঞান বিজ্ঞানকে বহুতর ভাগে বিভক্ত-বিচ্ছিন্ন করিয়া তুলিয়া বিহবলবুদ্ধিতে তাহার মধ্যে সম্প্রতি ঐক্য সন্ধান করিয়া ফিরিতেছে— ভারতবর্ষের সেই ব্রাহ্মণ কোথায়, যিনি স্বভাবসিদ্ধ প্রতিভাবলে,অতি অনায়াসেই সেই বিপুল জটিলতার মধ্যে ঐক্যের নিগৃঢ় সরলপথ নির্দেশ করিয়া দিবেন ? সেই ব্রাহ্মণকে ভারতবর্ষ নগরকোলাহল ও স্বার্থসংগ্রামের বাহিরে তপোবনে ধ্যানাসনে অধ্যাপকের বেদীতে আহবান করিতেছে,- ব্রাহ্মণকে তাহার সমস্ত অবমাননা হইতে দূরে আকর্ষণ করিয়া ভারতবর্ষ আপনার অবমাননা দূর করতে চাহিতেছে। বিধ্যভার আশীৰ্ব্বাদে ব্রাহ্মণের পাদুকাঘাতলাভ হয় ত ব্যর্থ হইবে না-নিদ্রা অত্যন্ত গভীর’ হইলে এইরূপ নিষ্ঠুর আঘাতেই তাহা ভাঙাইতে হয়। যুরোপের কম্মিগণ কৰ্ম্মজালে জড়িত হইয়া তাহ মনে জাগিয়া থাকে, যদি আমাদের সমাজকে ষ্ট হইতে নিস্কৃতির কোন পথ খুজিয়া পাইতেছে পৈতৃক গৌরবে গৌরবান্বিত করিয়াই মহত্বলাভ করিতে ইচ্ছা করিয়া থাকি, তবে ত আমাদের আনন্দের দিন। আমরা ফিরিঙ্গি হইতে চাই না , আমরা দ্বিজ হইতে চাই । ক্ষুদ্রবুদ্ধিতে ইহাতে র্যাহারা বাধা দিয়া অনর্থক কলহ করিতে বসেন, তর্কের ধূলায় ইহার সুদূরব্যাপী সফলতা যাহারা না দেখিতে না, সে নুন দিকে নানা আঘাত করিতেছে,—ভারতবধে যাহার ক্ষত্রিব্রত, বৈশুব্রত গ্রহণ করিবার অধিকারী, আজ তাহার ধৰ্ম্মের দ্বার কৰ্ম্মকে জগতে গৌরবান্বিত করুন—তাহারা প্রবৃত্তির অনুরোধে নহে, উত্তেজনার অনুরোধে নষ্টে-ধর্শের অনুরোধেই অবিচলিত নিষ্ঠার সহিত ফলকামনায়