পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় সংখ্যা । ] চীনেম্যানের চিঠি । >QS) করিয়া ষে "সভ্যতা মুখ দিয়াছে, সন্তোষ দিয়াছে, আনন্দ ও মুক্তিয় অধিকারী করিং য়াছে, সেই সভ্যতার মাহাত্ম্য অামাদিগকে যথার্থভাবে উপলব্ধি করিতে হুইবে । উপলব্ধি করা কঠিন, কারণ তাহ বস্তুপুঞ্জে এবং বাহশক্তির -প্রাবলো আমাদের ইঞ্জিয়মনকে অতিমাত্র অধিকার করে না । সমস্ত শ্রেষ্ঠ পদার্থের দ্যায় তাহার মধ্যে একটি নিগৃঢ়তা আছে, গভীরতা আছে,—তাহা বাহির হইতে গায়ে পড়িয়া অভিভূত করিয়া দেয় না, নিজের চেষ্টায় তাহার মধ্যে প্রবেশ করিতে হয়—সংবাদপত্রে তাহার কোন বিজ্ঞাপন নাই । এইজন্ত ভারতবর্ষের প্রাচীন সভ্যতাকে বস্তুর ভালিকাদ্বারা স্ফীত করিয়া তুলিতে পারি ন! বলিয়া, তাহাকে নিজের কাছে প্রত্যক্ষগোচর করিতে পারি না বলিয়া, আমরা পুষ্পক-রথকে রেলগাড়ি বলিতে চেষ্টা করি এবং ধৰ্ম্মকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দ্বারা কুটিল করিয়া ফ্যারাডে-ডাবিনের প্রতিভাকে আমাদের শাস্ত্রের বিবর হইতে টানিয়! বাহির করিবার প্রয়াস পাই । এই সকল চাতুরী দ্বারাতেই বুঝা যায়, ভারতবর্ষের সভাতাকে আমরা ঠিক বুঝিতেছি না এবং তাহ আমাদের বুদ্ধিকে সম্পূর্ণ তৃপ্ত করিতেছে না । ভারতবর্ষকে কৌশলে যুরোপ বলিয়া প্রমাণ না করিলে আমরা স্থির হইতে পারিতেছি না। ● ইহার একটা কারণ, যুরোপীয় সুভাতাকে যেমন আমরা অত্যন্ত ব্যাপ্ত করিয়া দেখিতেছি, প্রাচ্য সভ্যতাকে তেমন ব্যাপ্ত করিয়া দেখিতেছি না। তারতবর্ষীয় সভ্যতাকে অন্তান্ত সভ্যতার সহিত মিলাইয়। মানবপ্রকৃতির মধ্যে তাহার একটা বৃহত্ত্ব—-একটা ধ্রুবত্ব উপলব্ধি করিতেছি না । ভারতবর্ষকে কেবল ভারতবর্ষের মধ্যে দেখিলেই তাহার সভ্যতা, তাহার স্থায়িত্বযোগ্যতা আমাদের কাছে বথার্থরূপে প্রমাণিত হয় না। একদিকে প্রত্যক্ষ য়ুরোপ, আর একদিকে শাস্ত্রের কথা—পুথির প্রমাণ, একদিকে প্রবল শক্তি, আর একদিকে আমাদের দোদুল্যমান বিশ্বাসমাত্র—এ অবস্থায় অসহায় ভক্তিকে ভারত বর্ষের অভিমুথে স্থির করিয়া রাখাই কঠিন । এমন সময় আমাদের সেই পুরাতন সভ্যতাকে যদি চীনে ও জাপানে প্রসারিত দেখি, তবে বুঝিতে পারি, মানব প্রকৃতির মধ্যে তাহার একটা বৃহৎ স্থান আছে, তাহ কেবল পুথির বচনমাত্র নহে। যদি দেখি, চীন ও জাপান সেই সভ্যতার মধ্যে সার্থকতা অনুভব করিতেছে, তবে আমাদের দীনতার অগৌরব দূর হর, আমাদের ধনভাণ্ডার কোন খানে, তাহা বুঝিতে পারি। যুরোপের বদ্যা জগৎ প্লাবিত করিতে ছুটি য়াছে, তাই আজ সভ্য এসিয়া আপনার পুরাতন বাধগুলিকে সন্ধান ও তাহাদিগকে দৃঢ় করিবার জন্ত উদ্যত। প্রাচ্যসভ্যতা আত্মরক্ষা করিবে । যেখানে তাহার বল, সেইখানে তাহাকে দাড়াইতে হইবে । তাহার বল ধৰ্ম্মে, তাছার বল সমাজে। তাহার ধৰ্ম্ম ও তাহার সমাজ যদি আপনাকে ঠেকাইতে না পারে, তবে সে মরিল । যুরোপের প্রাণ বাণিজ্যে, পলিটিক্সে—আমাদের প্রাণ অন্তক্র । সেই প্রাণ রক্ষা করিবার জন্য এসিয়া উত্তরোত্তর ব্যগ্র হইয়া উঠিতেছে। এইখানে