পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ সংখ্যা। ] বঙ্গভাষা ও সাহিত্য । ১৬৯ অনেক আচুর-ব্যবহার-পূজাপদ্ধতির দ্বার। অভিভূত হইয়াও আপন প্রতিভাবলে সে সমস্তকে দার্শনিক ইন্দ্রজালদ্বারা আর্য্য আধ্যাত্মিকতায় মণ্ডিত করিয়া লইতেছিলেন। সেইজন্য আমাদের প্রত্যেক দেবদেবীর কাহিনীতে এত বৈচিত্র্য ও বিভিন্নতা—একই পদার্থের মধ্যে এত বিরুদ্ধ ভাবের ও মতের সমাবেশ । এক কালে ভারতবর্ষে প্রবলতা প্রাপ্ত অনার্য্যদের সহিত ব্রাহ্মণ প্রধান আর্য্যদের দেবদেবী-ক্রিয়াকৰ্ম্ম লইয়৷ এই যে বিরোধ বাধিয়াছিল—সেই বহুকালব্যাপী বিপ্লবের মৃদুতর আন্দোলন সেদিন পর্য্যন্ত বাংলাকেও আঘাত করিতেছিল,দীনেশবাবুর বাংলা ভাষা ও সাহিত্য পড়িলে তাহ স্পষ্টই বুঝা যায় । কুমারসম্ভব প্রভৃতি কাব্য পড়িলে দেখিতে পাই, শিব যখন ভারতবর্ষের মহেশ্বর, তখন কালিকা অন্তান্ত মাতৃকাগণের পশ্চাতে মহাদেবের অনুচরবৃত্তি করিয়াছিলেন। ক্রমে কখন তিনি করালমূৰ্ত্তি ধারণ করিয়া শিবকেও অতিক্রম করিয়া দাড়াইলেন, তাহার ক্রমপরম্পরা নির্দেশ করার স্থান ইহা নহে, ক্ষমতাও আমার নাই। কুমারসম্ভব কাব্যে বিবাহকালে শিব যখন হিমাদ্রিভবনে চলিয়াছিলেন, তখন র্তাহার পশ্চাতে মাতৃকাগণ এবং— で引研川* *5t& 卒不等?"|"|く কালী কপালাভরণ। চকাশে । র্তাহাদেরও পশ্চাতে কপালভূষণ কালী প্রকাশ পাইতেছিলেন । এই কালীর সহিত মহাদেবের কোন ঘনিষ্ঠতর সম্বন্ধ ব্যক্ত হয় নাই । মেঘদূতে গোপবেশী বিষ্ণুর কথাও পাওয়া যায়, কিন্তু মেঘের ভ্রমণকালে কোন মন্দির উপলক্ষ্য করিয়া বা উপমাচ্ছলে কালিকাদেবীর উল্লেখ পাওয়া যায় না । স্পষ্টই দেখা যায়, তৎকালে ভদ্রসমাজের দেবতা ছিলেন মহেশ্বর । মালতীমাধবেরও করালাদেবীর পূজোপচারে যে নৃশংস বীভৎসতা দেখা যায়, তাহ। কখনই আর্যসমাজের ভদ্রমণ্ডলীর অনুমোদিত ছিল বলিয়া মনে করিতে পারি না । এক সময়ে এই দেবীপূজা যে ভদ্র সমাজের বহিভূত ছিল, তাহ কাদম্বরীতে দেখা যায়। মহাশ্বেতাকে শিবমন্দিরেই দেখি ; কিন্তু কবি ঘৃণার সহিত অনাগ্য শবরের পূজাপদ্ধতির যে বর্ণনা করিয়াছেন, তাহাতে বুঝা যায়, পগুরুধিরের দ্বারা দেবতাচচন ও মাংসদ্ধার। বলি কৰ্ম্ম তখন ভদ্রমণ্ডলীর কাছে নিন্দিত ছিল । কিন্তু সেই ভদ্রমণ্ডলীও পরাস্ত হইয়াছিলেন । সেই সামাজিক মহোৎপাতের দিনে নীচের জিনিষ উপরে এবং উপরের জিনিষ নীচে বিক্ষিপ্ত হইতেছিল । বঙ্গসাহিত্যের আরম্ভস্তরে সেই সকল উৎপাতের চিহ্ল লিখিত আছে। দীনেশ বাবু অদ্ভুত পরিশ্রমে ও প্রতিভায় এই সাহিত্যের স্তরগুলি যথাক্রমে বিন্যাস করিয়া বঙ্গসমাজের নৈসর্গিক প্রক্রিয়ার ইতিহাস আমাদের দৃষ্টিগোচর করিয়াছেন। তিনি যে ধৰ্ম্মকলহব্যাপারের সন্মুখে আমাদিগকে দণ্ডায়মান করিয়াছেন, সেখানে বিশিষ্ট সম্প্রদায়ের দেবতা শিবের বড় দুৰ্গতি। র্তাহার এতকালের প্রাধান্ত “মেয়ে