পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ఫిE बछल्लब्जैन । [২য় বর্ষ, গ্রাৰণ। খবর বিনোদিনী জানিতে পারে, সেই উদ্বেগে মহেন্দ্র সমস্তদিন সতর্ক হইয়া রহিল। ( 8१ ) t বিহারীর খবর লইয়া মহেন্দ্র ফিরিয়া আসিবে, এই স্থির করিয়া বাড়ীতে তাহার জন্ত আহার প্রস্তুত হইয়াছিল। অনেক দেরি দেখিয় পীড়িত রাজলক্ষ্মী উদ্বিগ্ন হইতে লাগিলেন । সারারাত ঘুম না হওয়াতে তিনি অত্যন্ত ক্লাস্ত ছিলেন, তাহার উপরে মহেন্দ্রের জন্য উৎকণ্ঠায় তাহাকে ক্লিষ্ট করিতেছে, দেখিয়া আশা খবর লইয়া জানিল, মহেন্দ্রের গাড়ি ফিরিয়া আসিয়াছে। কোচ মানের কাছে সংবাদ পাওয়া গেল, মহেন্দ্র বিহারীর বাড়ী হইয়। পটলডাঙার বাসায় গিয়াছে। শুনিয়া রাজলক্ষ্মী দেয়ালের দিকে পাশ ফিরিয়া স্তন্ধ হইয়া শুইলেন। আশা র্তাহার শিয়রের কাছে চিত্ৰাপিতের মত স্থির হইয়া বসিয়া বাতাস করিতে লাগিল । অন্তদিন যথাসময়ে আশীকে খাইতে যাইবার জন্য রাজলক্ষ্মী আদেশ করিতেন—আজ আর কিছুই বলিলেন না। কাল রাত্রে তাহার কঠিন পীড়া দেখিয়াও মহেন্দ্র যখন বিনোদিনীর মোহে ছুটিয়া গেল, তখন রাজলক্ষ্মীর পক্ষে এ সংসারে প্রশ্ন করিবার, চেষ্টা করিবার, ইচ্ছা করিবার আর কিছুই রহিল না । তিনি বুঝিয়াছিলেন বটে যে, মহেন্দ্র র্তাহার পীড়াকে সামান্ত জ্ঞান করিয়াছে ; অন্যান্তবার যেমন মাঝে মাঝে রোগ দেখা দিয়া সারিয়া গেছে, এবারেও সেইরূপ একটা ক্ষণিক উপসর্গ ঘটিয়াছে মনে করিয়া মহেন্দ্র নিশ্চিন্ত আছে –কিন্তু এই আশঙ্কাশূন্ত অমুদ্বেগই রাজলক্ষ্মীর কাছে বড় কঠিন বলিয়া মনে হইল। মহেন্দ্র প্রেমোন্মত্ততায় কোন আশঙ্কাকে, কোন কর্তব্যকে মনে স্থান দিতে চায় না, তাই সে মাতার কষ্টকে, পীড়াকে এতই লঘু করিয়া দেখিয়াছে— পাছে জননীর রোগশয্যায় তাহাকে আবদ্ধ হইয়া পড়িতে হয়, তাই সে এমন নিলজের মত একটু অবকাশ পাই েই বিনোদিনীর কাছে পলায়ন করিয়াছে ! রোগ-আরোগ্যের প্রতি রাজলক্ষ্মীর আর লেশমাত্র উৎসাহ রছিল না—মহেঞ্জের অমুদ্বেগ যে অমূলক, দারুণ অভিমানে ইহাই তিনি প্রমাণ করিতে চাছিলেন। বেলা দুটার সময় আশা কহিল “ম, তোমায় ওষুধ খাইবার সময় হইয়াছে।” রাজলক্ষ্মী উত্তর না দিয়া চুপ করিয়া রহিলেন। আশা ওষুধ আনিবার জন্ত উঠিলে তিনি বলিলেন—“ওষুধ দিতে হইবে না বেীমা, তুমি যাও ” আশা মাতার অভিমান বুঝিতে পারিল, —সেই অভিমান সংক্রামক হইয় তাহার হৃদয়ের আন্দোলনে দ্বিগুণ দোলা দিতেই আশা অtয় থাকিতে পারিল না—কাল্প চাপিতে চাপিতে গুমরিয়া কাদিয়া উঠিল। রাজলক্ষ্মী ধীরে ধীরে আশার দিকে পাশ ফিরিয়া তাহার হাতের উপরে সকরুণ স্নেহে আস্তে আস্তে হাত বুলাইতে লাগিলেন, কহিলেন—“বেীমা তোমার বয়স অল্প, এখনো তোমার মুখের মুখ দেখিবার সময় অাছে। আমার জন্ত তুমি আর বৃথা চেষ্টা করিয়ো না বাছা—আমি ত অনেকদিন বাচিাছি— আয় কি হইবে।” - -: গুনিয়া আশার রোদন আরো উচ্ছসিত