পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ সংখ্যা। ] কাহিনীর মাধার। তাহার দীর্ঘকাল aw:, বঙ্গভূমির অধিপতি থাকিয়া, নানা স্থানে গ্রাম, নগর ও রাজধানী সংস্থাপিত করিয়াছিলেন । উত্তর ও পূৰ্ব্ব বঙ্গে অস্থাপি তাহাদের কোন কোন কীৰ্ত্তিচিন্তু বিদ্যমান আছে। পাল-নরপালগণ জাতিতে চজবংশীয় ক্ষত্রিয় এবং ধর্শ্বে বৌদ্ধ ছিলেন বলিয়া প্রমাণ প্রাপ্ত হওয়া যায় । কিন্তু পালবংশের অভু্যদয়কালে বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রবল প্রতাপ মীভূত হইয়াছিল ; শৈবমত সকল স্থানেই প্রতিষ্ঠালাভ করিয়াছিল। নামক দুই শাখায় বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছিল । পাল-নরপালগণ বৌদ্ধধৰ্ম্মের উৎসাহদাতা হইলেও, শৈবমত প্রতিহত করিতে সক্ষম হন নাই ; বরং লোকরঞ্জনার্থ সময়ে সময়ে শৈবমত-সংস্থাপনেরও সহায়তা-সম্পাদন कब्रिग्राप्झन् । দিনাজপুরে আবিষ্কৃত তাম্রশাসনে পাল বংশায় সপ্তদশ নরপালের নাম প্রাপ্ত হওয়৷ গিয়াছে । ইহারা সকলেই বঙ্গভূমিতে বাস করিয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয় না ; সকলে সমগ্র বঙ্গভূমি করতলগত করিতে সক্ষম হইয়াছিলেন বলিয়াও বোধ হয় না । ক্রমে মগধ হইতে পূৰ্ব্বাভিমুখে অগ্রসর হইয়া, প্রথমে উত্তর ও পরে পূর্ব বঙ্গ অধিকার করিয়া,পাল-নরপালগণ শাসনক্ষমতা বিস্তৃত করিয়া থাকিবেন। কিন্তু পালবংশীয় প্রথম পঞ্চ’নরপাল আদেী বঙ্গভূমিতে রাজধানী-সংস্থাপনে সক্ষম হইয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয় না। তাহাজের নাম বঙ্গীয় জনশ্রুতি হইতে বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে। সপ্তদশ নরপাল। পঞ্চ পাল-নরপাল । প্রজাসাধারণ বৌদ্ধ ও শৈব . ২১৩ পালরাজবংশের আলোচনায় এই পঞ্চ নরপতির ইতিহাস পৃথক আলোচিত হওয়া আরখক । সমগ্র পাল-নরপালগণের নাম, —(১) গোপাল, (২) ধৰ্ম্মপাল, (৩) দেবপাল, (৪) বিগ্রহপাল, (৫) নারায়ণপাল, (৬) রাজ্যপাল, (৭) দ্বিতীয় গোপাল (৮) দ্বিতীয় বিগ্রহপাল, (৯) মহীপাল, (১০) নরপাল, (১১) তৃতীয় বিগ্রহপাল, (১২) দ্বিতীয় মহীপাল, (১৩) মুরপাল, (১৪) রামপাল, (১৫) কুমারপাল, (১৬) মদনপাল, (১৭) তৃতীয় গোপাল । এই বিখ্যাত রাজবংশের ধৰ্ম্মপাল, দেবপাল, বিগ্রন্থপাল, নারায়ণপাল ও মদনপালের প্রদত্ত কয়েকখানি তাম্রশাসন এবং গোপাল, দেবপাল, মহীপাল ও নরপালের নামাঙ্কিত কয়েকখানি শিলালিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে। তন্মধ্যে তাম্রশাসনগুলি নানা ঐতিহাসিক তথ্যের আধার। সেগুলি, যেখানে যেখানে আবিষ্কৃত হইয়াছিল, সেই সকল স্থানের নামানুসারে পরিচিত হইয়াছে । তদনুসারে ধৰ্ম্মপালের তাম্রশাসনের নাম “মালদহের তাম্রশাসন”, দেবপালের তাম্রশাসনের নাম “মুঙ্গেরের তাম্রশাসন”, বিগ্রহপালের তাম্রশাসনের নাম “আমগাছীর তাম্রশাসন”, নারায়ণপালের তাম্রশাসনের নাম “ভাগলপুরের তাম্রশাসন” এবং মদনপালের তাম্রশাসনের নাম “দিনাজপুরের তাম্রশাসন” । এই সকল তাম্রশাসনে রাজবংশের জাতি, ধৰ্ম্ম ও বংশাবলী লিখিত আছে ; প্রসঙ্গক্রমে শাসনপ্রণালীরও আভাস প্রদত্ত হইয়াছে। এতদ্ব্যতীত দিনাজপুরের অন্তর্গত বোদালের, গরুড়স্তম্ভে যে শিলালিপি খোদিত আছে, তাহাতেও পালবংশের কিছু