পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

રડ8 কিছু বিবরণ প্রাপ্ত হওয়া যায়। এই সকল সমসাময়িক পুরাতন লিপি বহুমূল্য হইলেও, সাধারণ পাঠকসমাজে সুপরিচিত হয় নুই । তজম্ভ তারানাথ-সঙ্কলিত জনশ্রুতি ও “আইন-ই-আকৃবরির” গল্পগুজব ইতিহাসের উপাদান বলিয়া পরিচিত ছিল ; ক্রমে সে ভ্রম দূর হইয়। যাইতেছে। পালবংশীয় প্রথম নরপালের নাম কি ছিল, তাহ লইয়া একসময়ে বহু তর্কবিতর্ক প্রচলিত হইয়াছিল। "আমগাছার তাম্রশাসনে” প্রথম নর গোপাল । পালের যে নাম লিখিত আছে, তাহাকে “লোকপাল” পাঠ করিয়া, ইংরাজের এই তর্কবিতর্কের স্বত্রপাত করিয়াছিলেন । ধৰ্ম্ম পালের ও মদনপালের তাম্রশাসন পাল ংশীয়-নয়পতি প্রদত্ত প্রথম ও শেষ তাম্রশাসন বলিয়া পরিচিত । এই উভয় প্রাচীন লিপিতেই “গোপাল”নাম স্পষ্টাক্ষরে থোদিত আছে । গোপালপ্রদত্ত কোন তাম্রশাসন এ পর্য্যস্ত আবিষ্কৃত হয় নাই। নালন্দায় বাগীশ্বরীনামী এক চতুভূজ মূৰ্ত্তি আবিষ্কৃত হয়। তাহার পাদপীঠের খোদিত-লিপিতে গোপালের নামোল্লেখ আছে। রাজসাহীর অন্তর্গত মান্দার নিকটবৰ্ত্তী ভগ্নাবশেষের মধ্যে এক শৈবমন্দিরের ফলক-লিপি আবিষ্কৃত হইয়া আমার হস্তগত হইয়াছে। তাহাতেও গোপালদেবের নাম খোদিত আছে। কিন্তু এই দুই শিলালিপির গোপালদেব কোন গোপালদেব, তাহ নির্ণয় করিবার উপায় নাই। সুতরাং ধৰ্ম্মপালাদি পরবর্তী নর পালগণের তাম্রশাসনে প্রসঙ্গক্রমে গোপালদেবের যাহা কিছু পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়, বঙ্গদর্শন। [ ২য় বর্ষ, শ্রাবণ । তাহার অধিক আর কোন বিশ্বাসযোগ্য বিব, রণ অদ্যাপি আবিষ্কৃত হয় নাই। বর্তমানে, ধৰ্ম্মপালের তাম্রশাসনকেই বঙ্গভূমির সৰ্ব্বাপেক্ষা পুরাতন লিপি বলিয়া গ্রহণ করিতে হইবে । এই পুরাতন শাসনলিপি অদ্যান্ত শাসনলিপির ন্তায় মুললিত সংস্কৃতভাষায় লিখিত ; —প্রথমাংশ কবিতা, শেষাংশ গদ্য। মহারাজাধিরাজ ধৰ্ম্মপাল এতদ্বারা তদীয় বিজয়রাজ্যের দ্বাত্রিংশৎ বৎসরের অগ্রহায়ণমাসের দ্বাদশ দিবসে পৌণ্ডবৰ্দ্ধনভূক্তির অস্তঃপাতিভূমি দান করিয়াছিলেন। এই ভূমি কাহাকে প্রদত্ত হইয়াছিল, তৎসম্বন্ধেও বাদামুবাদ প্রবৰ্ত্তিত হইয়াছে। ধৰ্ম্মপালের এই তাম্রশাসনখানি গোঁড়ান্তর্গত খালিমপুরগ্রামের উত্তরাংশে ১৮৯০ খৃষ্টাব্দে ভূমিকৰ্ষণোপলক্ষে জনৈক কৃষক-কর্তৃক আবিস্কৃত হয়। কৃষক ইহা হস্তান্তর করিতে অসম্মত বলিয়া, সন্ধান পাইয়াও লোকে এই তাম্রশাসন পরীক্ষা করিবার সুযোগ পাইত না । সুপণ্ডিত স্বৰ্গীয় উমেশচন্দ্র বটব্যাল মহাশয় মালদহের কালেক্টার হইয়া গোঁড়াঞ্চলে উপনীত হইবার সময়ে কৃষক পরলোকগমন করিয়াছিল । বটব্যাল-মহাশয় কৃষকপত্নীর নিকট তাম্রশাসনখানি ক্রয় করিয়া, পণ্ডিতবর শ্ৰীযুক্ত রজনীকান্ত চক্রবর্তী মহাশয়ের সহায়তায় পাঠোদ্ধার ও ব্যাখ্যা সংযুক্ত প্ৰবন্ধ প্রকাশিত করেন । তাঁহাতে বেণীসংহার-রচয়িত কবিবর ভট্টনারায়ণের নামাঙ্কিত ভূমিদানপত্র বলিয়া এই তাম্রশাসন পরিচিত হয়। প্রকৃতপক্ষে ইহা কষ্টকল্পনামাত্র । এই তাম্রশাসন নারায়ণনামক বিগ্রহের উদ্দেহে ধৰ্ম্মপাল ।