পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম সংখ্যf] ] नमल সংস্কার অন্ধভাবে ত্যাগ করাকেই বলিতেছি কুসংস্কারমুক্তি। • ইছার জন্ত কাহাকে দোষ দিব ? ছেলেবেলা হইতে আমরা যে প্রণালীতে ধে শিক্ষা পাই, তাহাতে প্রতিদিন দেশের সহিত জামাদের বিচ্ছেদ ঘটিয়া ক্রমে দেশের বিরুদ্ধে আমাদের বিদ্রোহ ভাব জন্মে। সেই দেশবিদ্রোহ সৰ্ব্বাঙ্গে এবং সকল মনে বহন করিয়া আমরা কনগ্রেস করি,—ভাষায়, ভাবনায়, ভঙ্গীতে সেই দেশবিদ্রোহের ধ্বজা উড়াইয়া আমরা দেশের কাজ করিতেছি বলিয়া স্পৰ্দ্ধা করিয়া থাকি । আমাদের দেশের শিক্ষিত লোকেরাও ক্ষণে ক্ষণে হতবুদ্ধির ন্তার বলিয় উঠেন, দেশ তুমি কাহাকে বল, আমাদের দেশের বিশেষ ভাবটা কি, তাহ কোথায় আছে, তাহা কোথায় ছিল ? প্রশ্ন করিয়া ইহার উত্তর পাওয়া যায় না। কারণ, কথাটা এত স্বক্ষ, এত বৃহৎ যে, ইহা কেবলমাত্র যুক্তির দ্বারা বোধগম্য নহে। ইংরাজ ৰল, ফরাসী বল, কোন দেশের লোকই আপনার দেশীয় ভাবটি কি, দেশের মুল মৰ্ম্মস্থানটি কোথায়, তাহা এক কথায় ব্যক্ত করিতে পারে না—তাহ দেহস্থিত প্রাণের ন্তায় প্রত্যক্ষ সত্য, অথচ প্রাণের দ্যায় সংজ্ঞা ও ধারণার পক্ষে দুর্গম । তাহ শিশুকাল হইতে মামাদের জ্ঞানের ভিতর, আমাদের প্রেমের ভিতর, আমাদের কল্পনার ভিতর নানা অলক্ষ্য - পথ দিয়া নানা - আকারে প্রবেশ করে। সে তাহার বিচিত্র শক্তি দিয়া আমাদিগকে নিগুঢ়ভাবে গড়িয়া তোলে-আমাদের অতীতের সহিত বৰ্ত্ত ভারতবর্ষের ইতিহাস ૨રં? মানের ব্যবধান ঘটিতে দেয় না-তাহারই প্রসাদে আমরা বৃহৎ, আমরা বিচ্ছিন্ন নহি । এই বিচিত্র উদ্যমসম্পন্ন গুপ্ত পুরাতনী শক্তিকে সংশয়ী छिख्ळांश्ब्र कां८छ् श्रांभब्रl সংজ্ঞার দ্বারা দুই-চার কথায় ব্যক্ত করিব কি করিয়া ? - এই প্রত্যক্ষ, অন্তরতর, অথচ জায়ত্তেয় অতীত স্বদেশসত্তা সম্বদ্ধে ষে প্রশ্ন উঠে—তর্ক উঠে, তাহার কারণ, বাল্যকাল হইতে আমাদের জ্ঞান-প্রেম-কল্পনার দ্বারে গোরাসৈন্যের পাহারা বসে—আমাদের প্রকৃতির অস্তঃপুরের মধ্যে স্বদেশলক্ষ্মী প্রবেশ করিতে পান না—বিদেশ হইতে আনীত যুক্তিসংশয় প্রভৃতি কতকগুলা কিঙ্কর-কিঙ্করা সেখানে ভিড় করিয়া বেড়ায়, কিন্তু যিনি তাহাদের কত্রী হইয়াও তাহাদিগকে আপন কল্যাণের কাজে, ঐক্যের মহোৎসবে থাটাইতে পারিতেন, তিনি নাই। তাই আমাদের এমন লক্ষ্মীছাড়ার দশ, তাই এই ভিক্ষাবৃত্তি, এই উচ্ছ জ্বলতা। তাই এমন বারংবার আড়ম্বরপূর্ণ অকৃতকাৰ্য্যত, বাক্যে ও কৰ্ম্মে, শিক্ষায় ও ব্যবহারে তাই পদে পদে অসামঞ্জস্ত। ; সেই মহালক্ষ্মী, যিনি পিতার সহিত পুত্রকে, ভ্রাতার সহিত ভ্রাতাকে, নিকটের সহিত দূরকে, অনাগতের সহিত অতীতকে, ভিতরের সহিত বাহিরকে অদৃশু ঐক্যবন্ধনে চিরকাল গ্রথিত করিতেছেন, তাছাকে পথ ছাড়িয়া দাও । ভিনি সমস্ত জ্যামিতি, বীজগণিত, ব্যাকরণ, ভূগোল ও অর্থপুস্তকের পর্বতন্তুপ বিদীর্ণ করিয়া আমাদের হৃদয়ের অন্তঃপুরে তাহার চিরন্তন সিংহাসনে আসিয়া বসুন--