পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম সংখ্যা । ] ভারতবর্ষের ইতিহাস । ఖరిé শিক্ষাকে সম্পূর্ণরূপে আপন করিয়া লইবার জত শিশুকাল হইতে সৰ্ব্বতোভাবে আম- , কুল্য করিয়া থাকে, তাহার পরে শিক্ষাপ্রণালী ও অধ্যাপকগণও অমুকুলশ আমাদের আদ্যোপান্ত সমস্তই প্রতিকূল—যাহী শিখি, তাহ প্রতিকুল, যে উপায়ে শিখি, তাহা প্রতিকুল, যে শেখায়, সে-ও প্রতিকুল। ইহা সত্ত্বেও যদি আমরা কিছু লাভ করিয়া থাকি, যদি এ শিক্ষা আমরা কোন কাজে খাটাইতে পারি, তাহ আমাদের \g || অবগু এই বিদেশী শিক্ষাধিক্কারের হাত হইতে স্বজাতিকে মুক্তি দিতে হইলে শিক্ষার ভার আমাদের নিজের হাতে লইতে হইবে এবং যাহাতে শিশুকাল হইতে ছেলেরা স্বদেশীয় ভাবে, স্বদেশীয় প্রণালীতে, স্বদেশের সহিত হৃদয়মনের যোগরক্ষা করিয়া, স্বদেশের বায়ু ও আলোক প্রবেশের দ্বার উন্মুক্ত রাখিয়া শিক্ষা পাইতে পারে, তাহার জন্ত আমাদিগকে একান্তপ্রযত্নে চেষ্টা করিতে হইবে । ভারতবর্ষ সুদীর্ঘকাল ধরিয়া আমাদের মনের ষে প্রকৃতিকে গঠন করিয়াছে, তাহাকে নিজের বা পরের ইচ্ছমত বিকৃত করিলে, আমরা জগতে নিফল, ও লজ্জিত হইব । সেই প্রকৃতিকেই পুর্ণ পরিণতি দিলে সে অনায়াসেই বিদেশের জিনিষকে আপনার করির চাইতে পারিবে এবং আপনার জিনিয বিদেশকে দান করিতে পরিবে । এই স্বদেশী প্রণালীর শিক্ষার প্রধান ভিত্তি স্বাৰ্থত্যাগপর-ভূতিনিরপেক্ষ অধ্যরনঅধ্যাপনরত নিষ্ঠাবান গুরু এবং তাহার অধ্যাপনের প্রধান অবলম্বন স্বদেশের একথানি সম্পূর্ণ ইতিহাস। একদিন এইরূপ গুরু আমাদের দেশে গ্রামে-গ্রামেই ছিলেন— তাহাদের জুতামোজা, গাড়িঘোড়া, আসবাবপত্রের প্রয়োজনই ছিল না—নবাব ও নবীবের অনুকারিগণ তাঁহাদের চারিদিকে নবাবী করিয়া বেড়াইত, তাহাতে র্তাহাদের দৃকপাত ছিল না, তাহদের অগৌরব ছিল না। এখনো আমাদের দেশে সেই সকল গুরুর অভাব নাই । কিন্তু শিক্ষার বিষয় গরিবৰ্ত্তিত হইয়াছে—এখন ব্যাকরণ, স্মৃতি ও ন্যায় আমাদের জঠরীনলনিৰ্ব্বাণের সহায়তা করে না এবং আধুনিক কালের জ্ঞানস্পৃহা মিটাইতে পারে না। কিন্তু যাহারা নুতন শিক্ষাদানের অধিকারী হইয়াছেন, তাহাদের চাল বিগড়াইয় গেছেঃ তাহীদের আদর্শ বিকৃত হইয়াছে ; তাহারা অল্পে সন্তুষ্ট নহেন, বিদ্যাদানকে তাহারা ধৰ্ম্মকৰ্ম্ম বলিয়া জানেন না, বিদ্যাকে তাহারা পণ্যদ্রব্য করিয়া বিদ্যাকেও হীন করিয়াছেন, নিজেকে ও হেয় করিয়াছেন। নব্যশিক্ষিতদের মধ্যে আমাদের সামাজিক উচ্চ আদশের এই বিপৰ্য্যয়দশ একদিন সংশোধিত হইবে— ইহ। আমি দুরাশা বলিয়া গণ্য করি না । আমাদের বৃহৎ-শিক্ষিতমণ্ডলীর মধ্যে ক্রমে ক্রমে এমন দুই-চারিটি লোক নিশ্চয়ই উঠিবেন, যাহারা বিদ্যাব্যবসায়কে ঘৃণা করিয়া বিদ্যাদানকে কৌলিক ব্ৰত বলিয়া গ্রহণ করিবেন । তাহার। জীবনযাত্রার উপকরণ সংক্ষিপ্ত করিয়া, বিলাস বিসর্জন দিয়া, দেশের স্থানে স্থানে যে আধুনিক শিক্ষার টোল করিবেন, ইন্‌স্পেক্টরের গর্জন ও য়ুনিভার্