পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চম সংখ্যাণ } -বিরোদিনীপক তঞ্চল হইলে আমি আত্মহত্যা করিয়া মরিতাম, তোমার সঙ্গে বাহির হইতাম না। " মহেন্দ্র । কেন মরিলে না—ঐটুকু ধিশ্বাসের ফাঁসি আমার গলায় জড়াইয়া আমাকে দেশদেশান্তরে টালিয়া মারিতেছ কেন ? তুমি মরিলে কত মঙ্গল হইত ভাবিয়া দেখ । বিনোদিনী । তাছ। জানি, কিন্তু ঘ শুদিন {৭&ারীর আশী আছে, ততদিন আমি মরিতে পারিব না । মহেন্দ্র। যতদিন তুমি ন মরিবে, ততদিন আমার প্রত্যাশাও মরিবে না—আমি ও নিস্কৃতি পাইব না । আমি আজ হটতে ভগবানের কাছে সৰ্ব্বন্তঃকরণে তোমার মৃত্নাকামনা করি । তুমি আমারও হইয়ে না, তুমি বিহারীরও হইয়ে না ! তুমি যাও । আমাকে ছুটি দাও! আমার মা কঁদিতেছেন, আমার স্ত্রী র্কাদিতেছে—র্তাহীদের অশ্রু আমাকে দূর হইতে দগ্ধ করিতেছে । তুমি ন। মরিলে, তুমি আমার এবং পৃথিবীর সকলের আশার অতীত ন হইলে, আমি তাহাদের চোখের জল মুছাইবার অবসর পাইব না ! এই বলিয়া মহেন্দ্র ছুটিয়া বাহির হইয়। গেল। বিনোদিনী এক লা পড়িয়! আপনার চারিদিকে যে মোহজাল রচনা করিতেছিল, তাছা সমস্ত ছিড়িয়া দিয়া গেল। চুপ করিয়া দাড়াই। বিনোদিনী বাহিরের দিকে চাহিয়া রছিল—আকাশভর জ্যোৎস্ব শূন্য করিয়া দিয়। তাছার সমস্ত স্থধারস কোথায় উবিয়া গেছে ! সেই কোরি করা বাগান, ঙ্গেরখঞ্জৰীলি । 8(t ক্ত}হার পরে বালুক তীর, তাহার পরে নদীর কালো জল, তাছার পরে ওপারের অঙ্কুটত— সমস্তই যেন একখানা বড় শাদ কাগজের উপরে পেন্সিলে-অক একটি চিত্রমাত্রসমস্তই নীরস এবং নিরর্থক । মহেন্দ্রকে বিনোদিনী কিরূপ প্রবলবেগে অী কর্ষণ করিয়াছে, প্রচণ্ড ঝড়ের মত কিরূপ সমস্ত-শিকড়-মৃদ্ধ তাহাকে উৎপাটিত করিয়াছে, আজ তাহ অস্তুভব করিয়া তাহার হৃদয় আরো যেন অশাস্ত হইয়া উঠিল । তাহার ত এই সমস্ত-শক্তিই রহিয়াছে, তবে কেন বিহারী পূর্ণিমার রাত্রির উদ্বেলিত সমুদ্রের ন্যায় তাহার সম্মুখে আসিয়া ভাঙিয়া পড়ে না ! কেন একটা অনাবশ্যক ভালবাসার প্রবল অভিঘাত প্রত্যহ তাহার ধ্যানের মধ্যে আসিয়৷ কাদিয়া পড়িতেছে ?—আর-একটা আগন্তুক রোদন বারংবার আসিয়া তাহার অস্তরের রোদনকে কেন পরিপূর্ণ অবকাশ দিতেছে না ? এই যে একটা প্রকাণ্ড আন্দোলনকে সে জাগাইয়া তুলিয়াছে, ইহাকে লইয়। সমস্ত জীবন সে কি করিত্বে ? এখন ইহাকে শান্ত করিবে কি উপারে । , আজ যে সমস্ত ফুলের মালায় সে নিজেকে ভূষিত করিয়াছিল, তাহার উপরে মহেঞ্জের মুগ্ধদৃষ্টি পড়িয়tছল জানিয়া সমস্ত টানিয়া ছিড়িয়া ফেলিল । তাহার সমস্ত শক্তি-বৃথা, চেষ্টা বৃথ, জীবন বৃথা—এই কানন, এই জোৎস্না, এই যমুনাতট, এই অপূৰ্ব্বমুম্বর পৃথিবী, সমস্তই বৃথা ! * * এত ব্যর্থত, তবু যে বেখানে, সে সেখানেই দাড়াইয়া আছে-জগতে কিছুরই লেশমাত্র ব্যত্যয় হয় নাই। তবু কাল স্থযা