পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬২ रुश्रझर्शन !' ২য় বর্ষ, ভাত্রণ উহার মধ্য হইতে পুনরাগমনের বৃত্তান্তটি নানা প্রকার ডাল-পালায় সাজাইয়া চকিতের মধ্যে বাহির করিয়া তুলিতে পারেন, কিন্তু যতই যাহা করুন না কেন, সমস্তই ‘বহারম্ভে লঘুক্রিয়া’—মূলের সহিত কিছুতেই তাহ। খাপ খাইতে পারে না। কেন যে খাপ্‌ থাইতে পারে না, তাহা বলিতেছি—প্রণিধান করা হো’ক্‌ ৷ শরীরই যে কেবল একাকী জীবাত্মার পরিধান বস্ত্র, তাহা নহে ; পৃথিবীও জীবাস্মার পরিধান-বস্ত্র ;–প্রভেদ কেবল এই যে, শরীর অন্তৰ্ব্বাস-পৃথিবী বহিৰ্ব্বাস । মাটির শরীর মাটির সহিত এরূপ পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে জড়িত যে, তাহাকে পৃথিবী হইতে ছাড়ানে। অসম্ভব। বায়ুর সহিত নিশ্বাসপ্রশ্বাস, জলের সহিত রসরক্ত, মৃত্তিকার সহিত অস্থিমাংস কঠিন আকর্ষণ-সূত্রে সেলাই করা রহিয়াছে। পৃথিবীর সহিত শরীর— বহিৰ্ব্বাসের সহিত অন্তৰ্ব্বাস—পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে সেলাই করা রহিয়াছে ; একটিকে টানিলেই আরেকটিতে টান পড়ে; একটিকে ছাড়িলেই আর-একটি ছাড়িয়া যায়। মনুষ্য যখন পার্থিব শরীর ছাড়িয়া পলায়, তখন সেই সঙ্গে পৃথিবীও তাহার চতুষ্পাশ্ব হইতে ছাড়িয়া যার ; তবেই হইতেছে যে, পার্থিব শরীর পরিত্যাগ করিয়া নুতন শরীর গ্রহণ করিতে হইলে অপার্থিব শরীর গ্রহণ করা ভিন্ন উপায়ান্তর নাই। কাজেই “বাসাংসি জীর্ণানি যথা বিহায় নবানি গৃহাতি মরোহপরাণি” ইহার যদি কোন যুক্তিসঙ্গত অর্থ থাকে, তবে তাহ এই যে, ঐহিক-জন্মকালে জীবাত্মা যেমন ভৌতিক শরীর পরিগ্রহ করিয়া মাতৃগৰ্ত্তের মধ্য দিয়া পৃথিবীতে অবতরণ করে, পারত্রিক-জন্মকালে তেমনি তৈজস শরীর পরিগ্রহ করিয়া ব্রহ্মরন্ধের মধ্য দিয়া অপার্থিব লোকে সমুখান করে। জীবাত্মার অবশু কৰ্ম্মজনিত গতি স্বীকৰ্ত্তব্য । কৰ্ম্মজনিত প্রাণের সংস্কার, মনের বাসনা এবং জ্ঞানের ঔজ্জল্য নানা লোকের নানা প্রকার ; তদনুসারে নানা লোকের গতিও নানাপ্রকার হইবারই কথা । স্বৰ্গীয় রমেশচন্দ্র মিত্র প্রেসিডেন্সি কালেজে আমার সহাধ্যায়ী ছিলেন । বিদ্যালয়ে যেমন তিনি প্রকৃষ্ট মেধা-বুদ্ধি-যত্ন এবং অধ্যবসায়ের গুণে উচ্চস্থান অধিকার করিতেন, কৰ্ম্মালয়েও তেমনি তিনি উচ্চ আদালতের ধৰ্ম্মাসনে অধিকার প্রাপ্ত হইলেন ; তাহার পূৰ্ব্বকৃত কৰ্ম্মের ফলভোগের জন্য র্তাহাকে বিদ্যালয়ে ফিরিয়া যাইতে হইল না। অতএব যাহারা পৃথিবী ছাড়িয়া চলিয়া যা’ন, তাহাদিগকে ফলভোগের অনুরোধে আবার যে এই পৃথিবীতেই আসিতে হইবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নাই। পার্থিব রাজ্যে যেমন মকুষ্যের কৰ্ম্মামুযায়ী নানাপ্রকার গতিবৈচিত্র্য দেখিতে পাওয়া যায়, অপার্থিব রাজ্যেও সেইরূপ নানাপ্রকার গতিবৈচিত্র্য থাকিবারই কথা। তবে দুয়ের মধ্যে স্থল-স্থক্ষ্মের প্রভেদ অবগুই স্বীকাৰ্য্য। ভৌতিক রাজ্য অপেক্ষা তৈজস রাজ্য যে পরিমাণে স্বক্ষ, তৈজস রাজ্যের বিচারও সেই পরিমাণে সুগ্ন হইবারই কথা । পৃথিবীতে মনুষ্যের অস্তিরিক গুণাগুণ স্থল শরীরের আবরণে ঢাকা থাকে,