পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

어 1] এইজন্ত কোন ব্যক্তি কোন্‌ স্থানের উপযুক্ত তাহা • ঠিকঠাকু বলিতে পারা মুকঠিন ; পরলোকে স্বল্প শরীরের আবরণের মধ্য দিয়া অস্তরের গুণাগুণ অপেক্ষাকৃত সহজে ফুটিয়া বাহির হয়, এইজন্ত যে ব্যক্তি যে স্থানের উপযুক্ত, তাহাকে সেই স্থানে সংক্রমণ করিবার জন্ত সহজেই একটা ব্যবস্থা হইতে পারে ; কাজেই পারলৌকিক অপার্থিব রাজ্যে কৰ্ম্মের অনুযায়ী—অথবা যাহা একই কথা-কৰ্ম্ম-জনিত উচ্চ-নীচ বাসনা-সংস্কার এবং বুদ্ধির অনুযায়ী উচ্চ-নীচ গতি অপক্ষপাতী ঐশ্বরিক নিয়মে নিম্পাদিত হইতে পারিবার সম্ভাবনা সহজেই লোকের হৃদয়ঙ্গম হইতে পারে । জীবাত্মার পারলৌকিক গতি-সম্বন্ধে আমার বুদ্ধিতে যাহা যুক্তিসঙ্গত বলিয়া মনে হয়, তাহাই আমি বলিলাম ;–কথা উঠিল বলিয়া বলিলাম ; পরস্তু তাহ বৰ্ত্তমান প্রবন্ধের প্রকৃত আলোচ্য বিষয় কি না, সে বিষয়ে আমার সন্দেহ আছে ; – আমার মনে হয়, কতকটা যেন অপ্রাসঙ্গিক। এখানে যে কয়েকটি বিষয় আমার প্রধান বক্তব্য, তাহ ७ई १ প্রথমত ভৌতিক শরীরেই হউকৃ, আর তৈজস শরীরেই হউক্—স্থল শরীরেই হউকৃ, আর স্বক্ষ শরীরেই হউক্—কোনো-নাকোনো ধাচার শরীরে প্রাণের প্রতিষ্ঠা হওয়া চাই ;—এই গেল প্রাণ । দ্বিতীয়ত স্থলই হউক, আর সুক্ষই হউক, কোনো-না-কোনো বিষয়-ক্ষেত্রে মনকে দৌড় দেওয়ানো চাই ;–এই গেল মন । তৃতীয়ত বুদ্ধি-পরিচালনা করিয়া বাস্ত সার সতে্যুঞ্জ মালোচন । ২৬৩ বিক সত্যের অমুসন্ধান এবং অনুশীলন চাই –এই গেল বুদ্ধি। তিনই চাই –তিনের আয়োজন পরিসমাপ্ত হইলে তবেই তিনের মধ্যে জীবাত্মা বিরাজমান হ’ন । নছিলে রাজ্যহীন রাজা যেমন রাজাই নহে, তেমনি বুদ্ধিহীন, মনোহীন, প্রাণহীন আত্মা আত্মাই লছে । জ্ঞান আত্মার ধী-শক্তির ব্যাপার, মন কল্পনা-শক্তির ব্যাপার, প্রাণ ভোগ-শক্তির ব্যাপার ; যে আত্মা এই সকল শক্তিতে সস্তৃত, সেই আত্মাই আত্ম।। পক্ষান্তরে, কোনে কিছুই দেখিতেছি না, শুনিতেছি না, ভাবিতেছি না, বুঝিতেছি না, করিতেছি না, এরূপ শক্তিহীন, জড়বৎ-অথৰ্ব্ব, অন্ধকারাচ্ছন্ন আত্মাকে আত্মা বলা না বলা সমান । আদর্শ-আত্মা কিরূপ চ ন প্রাণ সরস, মন সতেজ, বুদ্ধি জ্যোতিষ্মতী, এইরূপ রস, তেজ এবং জ্যোতি যে আত্মার নিজস্ব সম্পত্তি, সেই আত্মাই আদর্শস্থানীয়। এখন কথা হ’চ্চে এই যে, বুদ্ধি কোথা হইতে জ্যোতি পাইবে ? মন কোথা হইতে তেজ পাইবে ? প্রাণ কোথা হইতে রস পাইবে ? তা আবার, যেমন-তেমন জ্যোতি হইলে চলিবে না—চিরপ্রদীপ্ত স্বয়ংজ্যোতি চাই ; যেমন-তেমন তেজ হইলে চলিবে না— অপ্রতিহত ধৈৰ্য্য-বীৰ্য্য চাই ; যেমন-তেমন রস হইলে চলিবে না-চির-উৎসারিত অমৃতের উৎস চাই। ইহারই জন্য সার সত্যের প্রয়োজন—ইহারই জন্ত সার সত্যের অন্বেষণ। এবারকার প্রবন্ধে জীবাত্মার সম্বন্ধে যতগুলি কথা বলিলাম, তাহা শ্রবণে কঠোরশ্রেণীর দার্শনিক পণ্ডিতেরা মুখ ব্যাজার