পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] শকুন্তলা । ፰ ዓ® লইতেই হয়, তবে স্বীকার করিব মেঘদূত হইতে আমরা একটি তথ্যলাভ করিয়া বিস্ময়ে পুলকিত হইয়াছি। সেটি এই যে, তখনে৷ মানুষ ছিল, এবং তখনে আষাঢ়ের প্রথমদিন যথানিয়মে আসিত । এই তথ্যটি উপলব্ধি করিলে নিজেকেই যুগে যুগান্তরে অমর বলিয়া মনে হয় । এই অমরত্বের আনন্দবাৰ্ত্তা কোন উপদেশের বইয়ে—কাজের বইয়ে আমরা পাই না । ইহা নিতান্তই একটি বাজে কথামাত্র । কিন্তু অসহিষ্ণু বররুচি যাহাঁদের প্রতি অশিষ্ট বিশেষণ প্রয়োগ করিয়াছেন, তাহার কি এরূপ লাভকে লাভ বলিয়াই গণ্য করিবেন ? ইহাতে কি জ্ঞানের কোনো বিস্তার, দেশের কোনো উন্নতি ও চরিত্রের কোনো সংশোধন হইবে ? ইহাতে কি বহু্যত্নে রক্ষণীয় বাঙালি পাঠকের অনিষ্ট্রের কোন আশঙ্কা নাই ? যাহা অকারণ, যাহা অনাবগুক, ছে চতুরানন, তাহ রসের কাব্যে রসিকদের জন্তই ঢাকা থাকুক্‌-যাহ আবশ্যক, যাহা হিতকর, তাহার ঘোষণার বিরতি ও তাহার খরিদৃদারের অভাব হইবে না ! শকুন্তলা । শেক্সপীয়রের টেম্পেষ্ট-নাটকের সহিত কালিদাসের শকুন্তলার তুলন। মনে সহজেই উদয় হঠতে পারে। ইহাদের বাহ সাদৃশ্য এবং আন্তরিক অনৈক্য আলোচনা করিয়া দেখিবার বিযয় । নির্জনলালিত মিরান্দার সহিত রাজকুমার ফাদিনান্দের প্রণয় তাপসকুমারী শকুন্তলার সহিত দুৰ্য্যন্তের প্রণয়ের অনুরূপ । ঘটনাস্থলটিরও সাদৃশু আছে ; এক পক্ষে সমুদ্রবেষ্টিত দ্বীপ, অপর পক্ষে তপোবন। এইরূপে উভয়ের আখ্যানমুলে ঐক্য দেখিতে পাই, কিন্তু কাব্যরসের স্বাদ সম্পূর্ণ বিভিন্ন, তাহা পড়িলেই অনুভব করিতে পারি । এই স্বাদ-জিনিষকে বিশ্লেষ কুরিয়া দেখা কঠিন ৷ ‘ ছোট-বড় কত কাব্যকলার অলক্ষ্য সমবয়ে এই স্বাদের স্থষ্টি হয়, তাহার রহস্ত পাঠকদের কাছে অগোচর থাকিয়া যায়। বত্তমান প্রবন্ধে আমরা তাহ উদঘাটনের স্পদ্ধ রাখি না । সমালোচ্য দুইটি নাটক পরে পরে পাঠ করিয়া আমাদের মনে যে অনুভূতির উদয় হইয়াছে, তাহাই বিবৃত করিবার চেষ্টা করিব । সমালোচনা-ব্যবসায়ের অনেক দোষ আছে । কবি যাহা সমগ্রভাবে দেখাইরা থাকেন, সমালোচককে অনেকসময় তাঁহ খণ্ডখণ্ড করিয়া দেখাইতে হয় । অথচ কাব্যসম্বন্ধে এই স্বতোবিরোধী কথাটি বলা যাইতে পারে যে, অংশের সমষ্টিই সমগ্র নহে। ভাল কাব্যে সমগ্রটি তাহার অংশপ্রত্যংশকে আচ্ছন্ন করিয়া—অন্তৰ্হিত করিয়া যেন একাকী বিরাজ করে । এইজন্য খও