পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミ* বঙ্গদর্শন । দ্বিতীয়শ্রেণীভুক্ত মহিষীকুলের যে সমস্ত, পুত্র হইত, তাহদের অস্তিত্বই কেহ দেখিতে পাইত না । মেনুষীর কথা সত্য হইলে, ব্যাপারটি বস্তুতই বড় ভয়ানক । এক শ্রেণী হইতে অন্ত শ্রেণীতে উন্নীত হইলে, সেই সকল বেগমদের নামও বাদশাহ পরিবর্তন করিয়া দিতেন। দৃষ্টান্তস্বরূপে মেনুষী জাহাগীরমহিষী নূরজই’ ( জগতের আলোক ) ও শাজহামহিষী ‘মমতাজমহল’ (অন্তঃপুরের মুকুট ), এই দুষ্টজনের উল্লেখ করিয়াছেন । মহিষীগণের বাসগৃহ বহুমূল্য সাজসজ্জায় সুশোভিত থাকিত । আরাম ও বিলাসবাসনার পরিতৃপ্তিয় জন্ত মানব-মন যাহ-কিছু কল্পনা করিতে পারে, সে সমুদায়েরই এখানে সমাবেশ হইত। মেমুখী বলেন ধে,উষ্ণ প্রধান দেশের তীব্র স্থৰ্য্যকিরণ ও যেন এ সকল বিলাসভবনে অদৃশু ছিল। মৃদুবাহিনী কল্লোলিনী, ছায়াশীতল কুঞ্জবাটিকা, মনোরম উৎসরাজি, বস্থধাতলবত্তী নিভৃত বিশ্রামনিকেতন, স্নিগ্ধ শৈত্যমুখ উপভোগের জন্ত এই রংমহলের সৰ্ব্ব এ বিরাজিত থাকিত । প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বেগমদের মধ্যে প্রভেদ অতি অল্পই দেখা যাইত। সে প্রভেদ এই যে, শেষোক্তাদের আবাসগৃহ ও তাহার সাজসজ্জার জাকজমক অপেক্ষাকৃত হীন, তাহদের মাসহারা তন্‌খাও কিছু কম, বেশভুষাও তেমন মহার্য নহে, আর সেবিকা ক্রীতদাসীর সংখ্যাও অনেক অল্প । ইহার নিজের মাসস্থার হইতে নিজের জীবিক। নিৰ্ব্বাহ করিতেন। বাদশাহী পাকশালা হইতে কেবল প্রথমশ্রেণীর মহিষী ও শাজাদী [ বৈশাখ । দেরই দৈনন্দিন খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করা হইত। প্রথম শ্রেণীর মহিষীদের দামও এই জন্তই—“বে-গম্ অর্থাৎ নিশ্চিন্তা বা ভাবনা শুঠ। দ্বিতীয় শ্রেণীর মহিষীদের নাম স্বয়ং সম্রাটু নিৰ্ব্বাচন করতেন। কাহারও নাম ‘রাণ-এ-দেল - অর্থাৎ ভক্তিমতী, কাহারও বা ‘মৎলুব অর্থাৎ অদৃষ্টপ্রেরিত। শাজাদ ও শাজাদীরা বেগমদের মত ঐশ্বর্য্যের ক্রোড়েই লালিত হইতেন । যতদিন তাহদেয় কৈশোরসীমা উত্তীণ না হুইত, ততদিন তাহারা বেগমদের সহিত এক হারেমের’ ( অন্তঃপুর ) মধ্যেই থাকিতেন ; কিন্তু ত্রয়োদশ বা চতুর্দশ বর্ষ অতিক্রম করিলেই, তাহীদের নিমিত্ত স্বতন্ত্র “হারেম” নিৰ্ম্মিত হইত। তাহদের দরবার ঐশ্বৰ্য্যসমৃদ্ধিতে স্বয়ং বাদশাহের দরবার হইতে কোন অংশেই নুন ছিল না। বাদশাহের নির্বাচন-অনুসারে ধে সকল মুলতান সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী হইতে পারিতেন না, তাহাদিগকে সাম্রাজ্যের অস্তগত কোন দূরবত্তী প্রদেশের শাসনকৰ্ত্তা করিয়া পাঠান হইত। মুলতানের ভূমিষ্ট হইয়াই প্রভূত ঐশ্বয্যের অধিকারী হইতেন। তাহার কারণ এই যে, জন্মদিন হইতেই তাহাদের জন্ত যে প্রচুর বৃত্তি নিদ্ধারিত হহত, প্রধান প্রধান ওমরাহগণের ভjগ্যে ও তাহা ঘটিয়া উঠে না । সুলতানদের সম্পত্তি স্বতন্ত্র কোষাগারে সঞ্চিত হইতে থাকিত હાસ তাহাদের বিবাহের দিনে ঐ বিপুল অর্থরাশি তাহদের হস্তে প্রদত্ত হইত। এ কথার দৃষ্টান্তস্বরূপে মেনুষী তাহার সমসাময়িক যুবরাজের (খুব সম্ভব, দারার)