পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা । ] বার্ষিক আয় বিশক্লোটি টাকা নির্দেশ করিয়াছেন। মেমুখী বলেন যে, এরূপ বিপুল অৰ্থরাশি অপরিণতরুয়স্ক ਚੋਂ সুলতানদের হস্তে দিয়া সম্রাট যেন নিজেই নিজের বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎ বিদ্রোহের পথ পরিস্কার করিয়া রাখিতেন। যতদিন সুলতানেরা সম্রাটের নজরাধীন একত্র একহারেমে থাকিতেন, ততদিন একজন খোজা র্তাহাদের শিক্ষণভার গ্রহণ করিত। আরবী ও পারসী লিখিতে-পড়িতে, ব্যবহারশাস্ত্রের স্থলমৰ্ম্ম বুঝিতে, আইনের সূক্ষ্ম অর্থ যুক্তিযুক্ত বিচারপ্রণালীতে আয়ন্ত করিবার জন্য সাজান মোকদ্দমা খাড়া করিয়া বিচার করিতে এবং মহম্মদীয় শাস্ত্রে পারদর্শী হইতে তাহারা শিক্ষিত হইতেন। যুদ্ধবিদ্যাশিক্ষার পূৰ্ব্বে যে সমস্ত ব্যায়াম অভ্যাসের প্রয়োজন, সে সব বিযয়ে ও তাহারা যথাযথ উপদেশ লাভ করিতেন । শাজাদী বা সুলতানাদের শিক্ষা-দীক্ষার ব্যবস্থা স্বতন্ত্র প্রকারের । র্তাহার। বিলাসেই ললিত, বিলাসেই পালিত হইতেন । * সম্রাটের शृण्माम-आझ्ल एमब भूषा উপাদান বলিয়, সৰ্ব্ববিষয়ে ঈহাবুই প্রীতিবিধানের উপযোগিনী হওয়া তাহীদের জীবনের প্রধান শিক্ষা ছিল । এইজন্তই সমশ্রেণীর মহিলাকুলের মধ্যে র্তাহাদেরই সমধিক স্বাধীনতা দেখা যাইত। মোগল-আন্তঃপুরের ছর্ভেদ্য তামসী যবনিকাও তাহাদের জন্ত যেন ংমহল বা মোগল-বাদশাহের অন্তঃপুর । S్చరి কিছু উন্মুক্ত হইত ; এমন কি, মোগলেরাও তাহাদের সে উচ্ছৃঙ্খলতায় পরোক্ষে যোগ দান করিতেন। মেমুখী বলেন, যেখানে কেবল সৰ্ব্ববিধ মুখবিলাসে জীবন ব্যয়িত হইত, যেখানে কথোপকথনের রীতিও তেমন বিশুদ্ধ ছিল না, অধিকন্তু যেখানে সত্যধৰ্ম্মের (খ্ৰীষ্টীয়) আলোক বিকিরিত হয় নাই, সেই নিভৃত অন্তরালের মধ্যে পাপ যে আপনার গুপ্তরাজ্য বিস্তার করিবে, তাহ বিচিত্র নহে। তথাপি যেখানে এতগুলি স্ত্রীলোকের একত্রে বাস এবং যেখানে তাহাদের অবস্থার বৈযম্য ও বড় দেখা যার না, সেখানে পরস্পরের মধ্যে যতটা স্পৰ্দ্ধার ভাব—যতটা হিংসাবিদ্বেষ থাকা সম্ভব, সে হিসাবে সে সকল মনেক অল্পই ছিল বলিতে হইবে। সযত্ন-পোষিত প্রকাশু প্রতিহিংসা দেখা যাইত না। যদি বা কেহ অস্তরে তাহা পোষণ করিত, তবে শাসনকত্রীদের ভয়ে তাহাকে অন্তরেই তাহ রুদ্ধ রাথিতে হইত । প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বেগম ও শাজাদীদের পরিধেয়, সাজসজ্জা ও ঐশ্বৰ্য্যে একটুআধটু তারতম্য থাকিলেও,সে সমস্ত অনেকটা । একই ধরণের ছিল । তাঁহাদের কেশরাজি সুবেণীসংহত ও নানা গন্ধদ্রব্যে সুবাসিত থাকিত। সম্রাটের অমুমতি লইয়া কেহ কেহ পক্ষিপক্ষভূষিত,মণিমুক্তাখচিত, মহামূল্য উষ্ণাষে উত্তমাঙ্গ সুশোভিত করিতেন,

  • মেমুখীর এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নহে। বরঞ্চ বঙ্কিমচন্ত্রের কথায় বলিতে হয় যে, য়ুরোপে কদাচিৎ একজন জেনোবিয়া বা ক্যাথরিন দেখিতে পাওয়৷ বায়, কিন্তু যে রাজপরিবারে তাজমহল, নূরজই, রোশেনারী ও জেবউন্নিসা প্রভৃতি রমণীনিচয়ের আবির্ভাব হইয়াছিল, সে রাজপরিবারের মহিলাকুলের কোনরূপ শিক্ষালাভ

হইত না, এ কথা বলা ঘাইতে পারে না।