পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

శ్రీరి:R বঙ্গদশন । [ ২য় বৰ্ষ, আশ্বিন । করিয়া প্রণিধান করিয়া দেখেন নাই । এইটি র্তাহার দেখা উচিত যে, 'আরব্য উপস্যাসের আবু হোসেনকে যখন দশচক্রে ফেলিয়। রাজা বানানো হইয়াছিল, তখন আবু হোসেনের মনোমধ্যে ক্রমাগতই এইরূপ একটা প্রশ্ন আন্দোলিত হইতেছিল যে, “কালিকে’র সেই দীন-হীন ক্ষুদ্র আমি হঠাৎ আজিকে প্রত্যুষে উঠিয়াই রাজা হুই লাম কিরূপে ? সত্যই কি আমি রাজা—না স্বপ্ন দেখিতেছি !” পক্ষাস্তরে, স্বপ্নের রাজার মনোমধ্যে ভুলক্রমেও একটিবার এরূপ প্রশ্ন উখিত হয় না যে—“কাল যে চাস ছিলাম ! আজ রাজা হইলাম কিরূপে ? সত্যই কি আমি রাজা—ন স্বপ্ন দেখিতেছি !” ফলে —“বাস্তবিক বা অবাস্তবিক” এ কথাটিই স্বপ্লাবস্থার কথা নহে। জাগরিত অবস্থাতেই আমাদের নিকটে বস্তুসকলের বাস্তবিক সত্ত্ব প্রকাশ পায়, আর, সেই সঙ্গে প্রাতিভাসিক সত্ত। যাহা প্রকাশ পায়, তাহ। বাস্তবিক সত্তা’র প্রতিযোগেই প্রকাশ পায় । প্রকৃত কথ। এই যে, “বাস্তবিক বা অবাস্তবিক” এই যে একটি কথা অভিধানে আছে —-এ কথা জাগরিত অবস্থার খাস নিজাধিকারের কথা—উহা স্বপ্নের অধিকারাভ্যন্তরে প্রবেশ করিতে চাহেও না—প্রবেশ করিতে পারেও না । অতএব প্রকৃত আত্মজ্ঞানী আত্মাকে যে-ভাবের বাস্তবিক-সত্য-রূপে— ধ্রুব-সত্য-রূপে—উপলব্ধি করেন, তাহার সহিত স্বপ্নের রাজ্যভোগের উপমা দেওয়া কেবল একটা কথার-কথা বই আর কিছুই নহে । আত্মজ্ঞানের তত্ত্বানুসন্ধানে প্রবৃত্ত হুই বার সময়, আত্মজ্ঞানের কাঠি কোথানটিতে, সেইটি সৰ্ব্বপ্রথমে বুঝিয়া দেখা আবশু্যক । জ্ঞানের কার্য্যই হ’চ্চে অব্যক্তকে ব্যক্ত করা । আত্মার কতপ্রকার অব্যক্ত-শক্তি যে অতলস্পর্শ গভীরে নিস্তব্ধভাবে অবস্থান করিতেছে, তাহ কে বলিতে পারে ? সেই অব্যক্ত-শক্তির কতক-কতক অংশ যখন আমাদের ইন্দ্রিয়-ক্রিরা, মনঃক্রিয়, প্রাণ-ক্রিয়া এবং বুদ্ধি-ক্রিয়াতে ব্যক্ত হয়, তখনই সেই সেই ক্রিয়া-দ্বারা বিশেষিত হইয়া আত্মা আপনার নিকটে বিশেষ বিশেষ রূপে প্রকাশ পা’ন—দ্রষ্টা রূপে, শ্রোতারূপে, মস্তারূপে, বোদ্ধারপে প্রকাশ পা’ন। প্রথমত, আত্মার যখন যেশক্তি বৰ্ত্তমানে স্ফূর্তি পায়, তাহাই তখন সাক্ষাৎসম্বন্ধে অনুভূত হয় । দ্বিতীয়ত, অতীত কালে যে-শক্তি স্বকাৰ্য্য সাধন করিয়া এক্ষণে বিশ্রাম করিতেছে—সে শক্তিরও স্মৃত্তি স্মরণে জাগ্রত হইয়া অনুভূত শক্তিমূৰ্ত্তির সহিত মিলিয়া যায়। উল্কাপিণ্ড আকাশ হইতে দ্রুতবেগে নিপতিত হইবার সময় তাহার নিজের পিণ্ডাকার পরিত্যাগ করিয়া আগ্নেয়রেখাকারে প্রকাশ পায় কেন ? তাহার কারণ শুদ্ধকেবল এই যে, দৃষ্ট আগ্নেয় পিণ্ডের পশ্চাৎ পশ্চাৎ স্মৃত আগ্নেয়-পিণ্ড-পরম্পরা সারিবন্দী-ক্রমে আবিভূত হইয়া, সমস্ত মিলিয়া, দেখিতে দেখায় ঠিকৃ যেন একটা প্রলম্বিত আগ্নেয়রেখা । দৰ্শন-শক্তির স্ফৰ্ত্তি যেমন স্মরণশক্তিকে জাগাইয়া" তোলে—দর্শন এবং স্মরণ দুয়ের সমবেত স্মৃত্তি তেমনি ধী-শক্তিকে ভতরে