পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] জাগাইয়া তোলে । আমি যখন সম্মুখে একটা বটবৃক্ষ দেখিতেছি, তখন অামার স্মরণ হইতেছে যে, পূৰ্ব্বে অনেক স্থানে আমি ঐরূপ বৃক্ষ দেখিয়াছি ; আর, ঐ রূপ বৃক্ষ যেখানে যত গুলা চক্ষে দেখিয়াছি, সর্বগুলাকেই লোকে “বটবৃক্ষ’ বলে, তাছাও কৰ্ণে শুনিয়াছি । এইরূপে দৰ্শন-স্ফূৰ্ত্তি হইতে স্মরণ-স্ফৰ্ত্তি উদ্দীপিত হইল ; এবং পরি শেষে উভয়-স্ফূৰ্ত্তির সমবেত উদ্দীপনায় আমার বুদ্ধি-স্ফূৰ্ত্তি হইল এইরূপ যে, দৃশুমান বৃক্ষটি বটবৃক্ষ । আমার এইরূপ দশনশক্তি, অনুভব-শক্তি, স্মরণ-শক্তি, ধী-শক্তির বৰ্ত্তমান স্ফূৰ্ত্তির সঙ্গে সঙ্গে আমি আপনার নিকটে দ্রষ্টা, অনুভব-কর্তী, স্মরণ-কৰ্ত্তা,বোদ্ধ। রূপে প্রকাশ পাই । “বর্তমান স্ফৰ্ত্তি”এখানে বলা হইতেছে কাহাকে – সেটা বুঝিয়া দেখা অবিখ্যক । বর্তমান কালে আমি যে ঐ বিশেষ বটবৃক্ষটি দেখিতেছি –সেই বিশেষ দশন-ক্রিয়া এবং তাহার সঙ্গে “আমি পুৰ্ব্বে অমুক অমুক স্থানে ঐ রূপ বটবৃক্ষ দেখিয়াছিলাম” এই বিশেষ স্মরণ-ক্রিয়া, এবং “এটা বটবৃক্ষ” এই বিশেষ বুদ্ধি-ক্রিয়া,যাহা বর্তমান কালে স্ফৰ্ত্তি পাইতেছে—সেই সকল বিশেষ বিশেষ ক্রিয়ার ফুৰ্ত্তিকে লক্ষ্য করিয়াই এখানে বলা হইতেছে—দশনাদি-শক্তির বৰ্ত্তমান স্ফৰ্ত্তি। এখন যেন আমার দর্শনাদিশক্তির বর্তমান মূৰ্ত্তি ঐ বিশেষ বটবৃক্ষটির দশনাদি-ক্রিয়াতেই আবদ্ধ ; কিন্তু গতকল্য আমার দর্শনাদি-শক্তির বর্তমান স্ফৰ্ত্তি পখাগারের সিংহ দর্শনে ব্যাপৃত ছিল । আজি কের এখনকার এই বর্তমান স্ফূৰ্ত্তি আজ আমার নিকটে ব্যক্ত হইয়াছে—কাল আমার (t সার সত্যের অালোচনা । \లe శ్రీ নিকটে অব্যক্ত ছিল ; কালিকের বর্তমান ফুৰ্ত্তি কাল আমার নিকটে ব্যক্ত ছিল, আজ আমার নিকটে অব্যক্ত রহিয়াছে। এইরূপ প্রত্যহ প্রতি-ক্ষণে আত্মার বিশেষ বিশেষ ক্রিয়া-মূৰ্ত্তি ব্যক্ত হইতেছে এবং সেই সঙ্গে অপরাপর ক্রিয়-ক্ষত্তি অব্যক্ত থাকিতেছে। যে ক্রিয় যখনই স্ফৰ্ত্তিমতী হয়, সেই ক্রিয়া তখনই ব্যক্ত হয় ; আর, যখন ব্যক্ত হয়, তখনই সেই-ক্রিয়া-সমন্বিত-রূপে আপনাকে উপলব্ধি করি । কিন্তু যাহা এখন অব্যক্ত আছে,পূৰ্ব্বে তাহ এক সময়ে ব্যক্ত হইয়াছিল, অথবা ভবিষ্যতে তাহ ব্যক্ত হইতে পারে। এইরূপ করিয়া ক্রমাগতই মুহুৰ্ম্ম,হু বক্তা ব্যক্তের উদয়াস্ত হইতে থাকিলেও ব্যক্তা ব্যক্তের মধ্যে বস্তুত কোনো প্রভেদ থাকিতে পারে না ; কেন না, যাহা এক কালে ব্যক্ত হইতেছে, তাহাই আর-এক কালে অব্যও থাকিতেছে ; এবং যাহা এক কালে অব্যক্ত থাকিতেছে, তাহাই আর-এক কালে ব্যক্ত হইতেছে । এইজন্ত আত্মা যখন ব্যক্তক্রিয়া,ৰ্ত্তি-সমন্বিত-রূপে বর্তমানে প্রকাশ পPন, তখন তাঁহাতেই প্রকারান্তরে দাড়ায় ষে, আত্মা ব্যক্তাব্যক্ত-উভয়প্রকার-ক্রিয়াফুক্তি সমন্বিত-কেন না,ব্যক্ত এবং অব্যক্তের মধ্যে বস্তুত কোনো প্রভেদ নাই। পূৰ্ব্বে বলিয়াছি যে, আত্মা বাস্তবিক যাহ!—সেইরূপে প্রকাশ পাওয়ার নামই আত্মজ্ঞান । আত্মা বাস্তবিক যাহা, সেই জায়গাটিতে আত্মা বক্তব্যক্ত উভয়প্রকার স্ফূৰ্ত্তি সমম্বিত ; আর, আত্মা বিশেষ বিশেষ কালে বিশেষ বিশেষ যে-যে-রূপে আপনার নিকটে প্রকাশ পা’ন—সেই জায়গাটিতে