পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ebー বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আশ্বিন । কোন সময়ে ভারতবিখ্যাত কুরুক্ষেত্রের মহাসমর সংঘটিত হইয়াছিল, তদ্বিষয়ে নানা তর্কবিতর্ক প্রচলিত হইয়াছে । এষ্ট , তর্কবিতর্ক নিতান্ত আধুনিক নহে ; সেকালেও এ বিষয়ে যথেষ্ট মতভেদ বর্তমান ছিল । সাধারণত এই মহাসমর দ্বাপরযুগে সংঘটিত হইবার জনশ্রুতি বৰ্ত্তমান আছে ; তাহ। দ্বাপর গু কলির সন্ধিকাল বলিয়া পরিচিত । তদনুসারে ইহা পঞ্চসহস্ৰ বৎসরের পুরাতন ঘটনা । কবি কহলণ এই মহাসমরের কালনির্ণয়ের চেষ্টা করিয়াছিলেন । সে চেষ্টায় তিনি প্রচলিত জনশ্রুতির পক্ষসমর্থন করেন নাই ; ইতিহাসলেখকের দ্যায় বিচারে প্রবৃত্ত হইয়া কালনির্ণয় করিয়াছেন। কলেণের পূৰ্ব্বে বরাহমিহির “বৃহৎংহিতা” গ্রন্থে এই কালনির্ণয়ের চেষ্টা করিয়াছিলেন। কালণ র্তাহার মত উদ্ধৃত করিয়াছেন। বরাহমিহিরের মতানুসারে সপ্তর্ষিমণ্ডল শতবর্মে এক নক্ষত্র হইতে নক্ষত্রান্তরে পরিভ্রমণ করে। যুধিষ্ঠিরের রাজ্যভিষেকসময়ে সপ্তর্ষিমণ্ডল মঘানক্ষত্রে অবস্থিত ছিল ; সুতরাং তাহ শকাব্দের পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী ২৫-৬ বৎসরের ঘটনা । যথা – “পক্ষাদৃক্ষ: শতেনব্দৈর্যাৎস্ত চিত্রশিপণ্ডিযু তচ্চারে সংহিতাকারেরেবং দত্তেহত্র নির্ণয়ঃ ॥ অসমৃ মাহ মুনয় শাসতি পৃথ্বীং যুধিষ্ঠিীর নৃপতো। ষড় দ্বিকপঞ্চদ্বিযুতঃ শককালস্তস্ত রাজ্যসা ॥"১।৫৫-৭৬ কবি কহলণ এই গণনা অবলম্বন করিয়া লিখিয়া গিয়াছেন যে, কলিগতাব্দ ৬৫৩বৎ সর পরে কুরুপাণ্ডব প্রাচুভূত হইয়াছিলেন। এই গণনায় কহলণ-পণ্ডিত রাজতরঙ্গিণীরচনার কালনির্দেশ করিয়াছেন। তাছ। ১০৭০ শক-বৎসর বলিয়া লিখিত আছে ; তাহা ১ ৭০+১১৭৯=৪২৪৯ কলিগতাদ । কলণ মোট ৩৫৯৬ বৎসরের ইতিহাস সঙ্কলিত করিয়া গিয়াছেন । ৪২৪৯ কলিগতাব্দ হইতে এই ৩৫৯৬ বৎসর বিয়োগ করিলে, কাশ্মীরের ইতিহাদ-আরম্ভের কাল প্রাপ্ত হওয়া যায় ; তাহ ৬৫৩ কলিগতাব্দ । কালে কুরুপাণ্ডবের সমসাময়িক গোনন্দনামধেয় নরপতি কাশ্মীরের সিংহাসন অল এত দীর্ঘকালের বিশ্বাস যোগ্য ইতিহাস সঙ্কলিত হইতে পারে । । কহল৭ তজ্জন্ত রাজতরঙ্গিণীর প্রথম তরঙ্গে ১২৬৮ বৎসরের কিংবদন্তিমূলক ইতিবৃত্ত ংক্ষেপে সমাপ্ত করিয়া, দ্বিতীয় হইতে অষ্টম তরঙ্গে ১৩২৮বৎসরের ইতিহাস ক্রমে বিস্তুতভাবে আলোচনা করিয়া গিয়াছেন। চতুর্থ তরঙ্গ হইতেই প্রামাণিক ঐতিহাসিক ঘটনার আরম্ভ ; তৎপরে ক্রমেই নানা বিশ্বাসযোগ্য ইতিহাসের অবতারণা করিয়া, কহলণপণ্ডিত তাহার সমসাময়িক ঘটনা বর্ণনা করিয়া গ্ৰন্থশেষ করিয়াছেন । এই বিপুল গ্রন্থ অধ্যয়ন করিতে হইলে, অধ্যাপক ষ্টানের পাণ্ডিত্যপূর্ণ টাকা সবিশেয উপকারজনক বলিয়া বোধ হইবে । টাকার সহায়তায় রাজতরঙ্গিণী অধ্যয়ন করা যাহাঁদের সময়ে কুলাইবে না, তাহার অধ্যাপক ষ্টানের ভূমিকা পাঠ করিলেও, রাজতরঙ্গিণীর প্রধান প্রধান জ্ঞাতব্য বিষয় অবগত হইতে পারিবেন। ভারতবর্ষের ইতিহাসের নানা, অংশ। সকল অংশই তমসাচ্ছন্ন। সকল অংশই নানা তর্কবিতর্কে অধিকতর তমসাচ্ছন্ন তৎ স্কৃত করিতেন । এই