পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] হইয়া উঠিতেছে। কুরুক্ষেত্রের মহাসমরের কথা এখন কবিকাহিনীর অন্তভুক্ত হইয়াছে। বৌদ্ধাবিভাবের পরবর্তী ও খৃষ্টাবিভাবের পূর্ববৰ্ত্ত নরপালগণের মধ্যে চন্দ্রগুপ্ত, অশোক, কণিক্ষ প্রভৃতি কয়েকজন নরপালের নাম লোকসমাজে সুপরিচিত হইলেও, র্তাহীদের শাসনকাহিনীর সকল কথা অবগত হইবার উপায় নাই । কোন সময়ে ভারতীয় সামাজ্যসীমা কতদূর বিস্তৃতিলাভ করিয়াছিল, তাহাও নিঃসংশয়ে নির্ণয় করা যায় না । ভারতবর্ষের উত্তরপশ্চিমাঞ্চল বহুবিপ্লবের লীলাভূমি ; তাহ। কখন স্বতন্ত্র স্ব তন্ত্র খণ্ডরাজ্যে বিভক্ত ; কখন বা সংযুক্ত মগধসাম্রাজ্যের অন্তভুক্ত ; কখন আবার বিদেশীয় পরা ক্রমশালা প্রবল নরপতির অধিকারভুক্ত হইয়াছিল। রাজতর{ঙ্গণ কাশ্মীরের ইতিহাস হইলেও, এই সকল বিপ্লবের পরিচয় প্রদান করে । কাশ্মীর শৈল প্রাচীরাবৃত স্বতন্ত্র খণ্ড রাজ্য হইলেও, কখন কখন কাশ্মীরের বাহিরে গান্ধারে, তা তারে, তিব্বতে, পঞ্চাপে, পঞ্চালে, কান্তকুন্দ্রে ও অধিকারবিস্তার করিয়াছিল ; আবার কখন বা মগধ ও মালবের অধিকারভুক্ত হইয়। স্বাতন্ত্র্যবিচু্যত করদরাজ্যে পরিণত হইয়াছিল । রাজতরঙ্গিণীতে ইহার কিছু কিছু পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। কখন কাশ্মীর হিন্দুধন্মের আশ্রয়স্থান, কখন বা বৌদ্ধধন্মের বিজয়ক্ষেত্রে পরিণত হইয়াছিল । রাজতরঙ্গিণীতে তাহারও কিছুকিছু আভাস প্রাপ্ত হওয়া যায়। অসভ্য পাৰ্ব্বত্যজাতির অভিযানে বিপৰ্য্যস্ত হইয়l, জলপ্লাবন ও দুর্ভিক্ষে উৎপীড়িত হইয়া, রাজতরঙ্গিণী । \లిe:S কাশ্মীর নানা সময়ে নানা দুঃথক্লেশ বহন করিয়াছিল,--তাহাও কহলণের গ্রন্থে দেখিতে পাওয়া যায়। এই সকল বিচিত্র ঐতিহাসিক ঘটনার আদ্যস্তের আলোচনা হইলে, তদ্বারা ভারতবর্ষের বিলুপ্ত ইতিহাসের নানা তথ্য আবিস্কৃত হইতে পারিবে । তজ্জষ্ঠ এই গ্রন্থের সমুচিত সমালোচনা আবশু্যক । বঙ্গসাহিত্যে অনেকবার রাজতরঙ্গিণীর আলোচনা লিপিবদ্ধ হইলেও, অস্থাপি কোন সৰ্ব্বাঙ্গসুন্দর গ্রন্থ প্রকাশিত হয় নাই ; মাসিকপত্রের প্রবন্ধেই সমস্ত আলোচনা সীমাবদ্ধ হইয়া রহিয়াছে । কাশ্মীরের সহিত মহাচীন-সাম্রাজ্যের কখন কখন সন্ধি সংস্থাপিত হইয়াছিল, রাজতরঙ্গিণীতে তাহার স্পষ্ট উল্লেখ না থাকিলেও, মহাচীন সাম্রাজ্যের ইতিহাসে তাহার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। তদেশের বৌদ্ধ পরিব্রাজকগণ ভ্রমণ প্রসঙ্গে ভারতে উপনীত হহয়! কাশ্মীরের ধে সকল বিবরণ লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন, রাজতরঙ্গিণী পাঠে তাহার ও অনেক কথার সত্যত উপলব্ধ হয়। তবে কাশ্মীরের পুরাতন নরপতিদিগের রাজাকালসম্বন্ধে কহুলণ-পণ্ডিত পুরাতন পুস্তক অবলম্বন করিয়া যাহা লিখিয়া গিয়াছেন, তাহার সহিত সকল স্থলে ইতিহাসের ঐক্য সম্পাদন করা ধায় না ;–তাহা জনশ্রুতিমাত্র। o কাশ্মীরের ভূতপূৰ্ব্ব ভূপালগণের যে নামমাল৷ কহলণ অন্তান্ত পুরাতন গ্ৰন্থ হহতে সঙ্কলিত করিয়া গিয়াছেন, তন্মধ্যে অশোক, হুবিষ্ক ও কণিক্ষের নাম ভারতবর্ষের ইতিহাসে সুপরিচিত। কিন্তু কহলণ ইহাদের রাজ্যকাল ও বংশাবলী যে ভাবে কীৰ্ত্তন