পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] এই অপমান পাইয়া বিনোদিনী নম্ৰমৃদ্ধ স্বরে কহিল, “মহেন্দ্র নাই, মহেন্দ্র সহরে গেছে।” বিহারী চলিয়া যাইতে উদ্যত হইলে ৰিনোদিনী কহিল, “বিহারি-ঠাকুরপো, তোমার পায়ে ধরি, একটুখানি তোমাকে বসিতে হইবে।” विशनौ ८कोन गिनडि उनिम्न ना' भन्न করিয়াছিল, একেবারে এই ঘৃণার দৃষ্ঠা হইতে এখনি নিজেকে দূরে লইয়। যাইবে স্থির করিয়াছিল, কিন্তু বিনোদিনীর করুণ অনুনয়ম্বর শুনিবামাত্র ক্ষণকালের জন্য তাহার পা যেন আর উঠিল না । বিনোদিনী কহিল, “আজ যদি বিমুপ হইয়া এমন করিয়া ঢলিয়। যাও, আমি তোমারি শপথ করিয়া বলিতেছি, আমি মরিব ।” বিহারী তথন ফিরিয়া দাড়াইয়া কহিল, “বিনোদিনি, তোমার জীবনের সঙ্গে আমাকে তুমি জড়াইবার চেষ্টা করিতেছ কেন ? আমি তোমার কি করিয়াছি ! আমি ত কখনো তোমার পথে দাড়াই নাই,—তোমার সুখদুঃখে হস্তক্ষেপ করি নাই ।” বিনোদিনী কহিল—“তুমি আমার কতথালি অধিকার করিয়াছ, তাহ। একবার তোমাকে জানাইয়াছি—তুমি বিশ্বাস কর নাই। তবু আজ আবার তোমার বিরাগের মুখে সেই কথাই জানাষ্টতেছি। তুমি ত আমাকে না বলিরা জানাইবার,–লজ্জ। করিয়া জানাইবার, সময় দাও নাই! তুমি আমাকে ঠেলিয়া ফেলিয়াছ,তবু আমি তোমার পা ধরিয়া বলিতেছি, আমি তোমাকে-” তুমি তবে চোখের বালি । ৩২১ বিহারী বাধা দিয়া কহিল—“সে কথা আর বলিয়ো না, মুখে আনিয়ে না! সে কথা বিশ্বাস করিবার জো নাই!” বিনোদিনী । সে কথা ইতর লোকে বিশ্বাস করিতে পারে না, কিন্তু তুমি করিবে । সেইজন্ত একবার আমি তোমাকে বসিতে বলিতেছি । বিহারী। আমি বিশ্বাস করি বা না করি, তাহাতে কি আসে যায় ! তোমার জীবন যেমন চলিতেছে, তেমনি চলিবে ত ! বিনোদিনী । আমি জানি, তোমার ইহাতে কিছুই আসিবে-যাইবে না । আমার ভাগ্য এমন যে, তোমার সন্মানরক্ষা করিয়া তোমার পাশে দাড়াইবার আমার কোন উপায় নাই। চিরকাল ভূেমি হইতে আমাকে দূরেই থাকিতে হইবে । আমার মন তোমার কাছে এই দাবিটুকু কেবল ছাড়িতে পারে না যে, আমি যেখানে থাকি, আমাকে তুমি একটুখানি মাধুর্য্যের সঙ্গে ভাবিবে। আমি জানি, আমার উপরে তোমার অল্পএকটু শ্রদ্ধা জন্মিয়াছিল, সেইটুকু আমার একমাত্র সম্বল করিয়া রাখিব । সেইজন্ত আমার সব কথা তোমাকে শুনিতে হইবে। আমি হাতজোড় করিয়া বলিতেছি ঠাকুরপে, একটুখানি বস ! “আচ্ছ চল” বলিয়৷ বিহারী এখান হইতে অন্তত কোথাও যাইতে উদ্যত হইল । বিনোদিনী কহিল—“ঠাকুরপো, যাহ। মুনে করিতেছ, তাহ নহে। এ ঘরে কোন কলঙ্ক স্পর্শ করে নাই । . তুমি এই ঘরে একদিন শয়ন করিয়াছিলে—এ ঘর তোমার জন্তই উৎসর্গ করিয়া রাথিয়ছি—ঐ ফুলগুলা