পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミや দিত করিয়া রাথিত । এই সকল গন্ধদ্রব্য অতি মহার্ঘ এবং ভারতের ও পৃথিবীর অন্তান্ত স্থানের বহুদূরপ্রদেশ হইতে সমানীত। কোন স্থান হইতে কোন মুগন্ধিদ্রব্য আনীত হইত, খুশরোজপ্রবন্ধে তাহা উল্লিখিত হইয়াছে। বস্তুত সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধি দ্রব্যে কিরূপে ব্ৰাণেন্দ্রিয়ের তৃপ্তিবিধান করিতে হয়, মোগলেরা তাহ সম্যক অবগত ছিলেন । ংমহলের অন্তান্ত মহিলারা শাজাদীদের শাসনকত্রীরূপে ও বেগমদের রক্ষয়িত্রীরূপে নিযুক্ত থাকিতেন। ইহার রংমহলের মুখ-বিলাসের অংশ অল্পই পাইতেন, কিন্তু রাজ্যশাসনে ইহাদের অনেকটা কর্তৃত্ব ছিল । প্রধানত ইহাদের দ্বারাই শাসনবিষয়ক গুপ্তমন্ত্রণ ও সন্ধিবিগ্রহের পরামর্শ স্থিরীকৃত হইত। রাজপ্রতিনিধি ও শাসনকৰ্ত্তাদের মনোনয়ন ও নিয়োগ ইহারাই করিতেন। অধিক কি, মোগল-দরবারের আমীর-ওমরাহগণের ইহারাই একপ্রকার ভাগ্যনিয়ন্ত্রী। ইহারা বয়োজ্যেষ্ঠ, বুদ্ধিমত্তায় বরীয়সী ও সকলের সম্মানাহ ছিলেন । প্রকাশু দরবারে যেরূপ রাজ্যের শাসনযন্ত্র পরিচালনের জন্য দূরদর্শী আমীরওমরাহদের প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন পদ ও উপাধি নির্দিষ্ট থাকিত, তেমনি এই সকল মহিলার মধ্যেও সেইরূপ ভিন্ন ভিন্ন পদ ও উপাধির ব্যবস্থা ছিল । যেমন প্রকাশু দরবারে একজন প্রধান সচিব, অস্তঃপুরেও তেমনি একজন প্রধান রমণী-সচিব ছিলেন । আবার কেহ বা সেথায় আধুনিক সেক্রেটারি অফ ষ্ট্রেটের, কেহ বা সুবেদারের কাজ করিতেন। প্রত্যেক্যের অধীনে খোজা নিযুক্ত থাকিত। বঙ্গদর্শন । [ বৈশাখ । তাহারা প্রতিনিয়ত প্রধান প্রধান ওমরাহদের নিকট ইহাদের পত্রাদি লইয়। যাইত ও তাহার প্রত্যুত্তর লইয়া আসিত। এমন কি, যে সমস্ত প্রজা আম্খাস ( প্রকাশু দরবার ) বা গোসলখানায় ( গুপ্ত দরবার ; শব্দগত অর্থ—স্নানাগার ) কোন আমল পাইতেন না, তাহারাও ইহাদের অনুগ্রহে বাদশাহের মনোযোগ আকর্ষণে সমর্থ হইতেন । সংক্ষেপে বলিতে গেলে, এই শ্রেণীর মহিলাদিগকে লইয়া রংমহলে বাদশাহের প্রিভি কাউন্সিল গঠিত হইত। যাহারা অন্তঃপুরের সুবেদারপদাভিষিক্ত, তাহারা সীমান্ত প্রদেশের যাবতীয় গুপ্তসংবাদ সম্রাটের কর্ণগোচর করিতেন । কার্য্য-সৌকর্য্যের জন্য ইহাদের অধীনে কতকগুলি রাজদূত নিযুক্ত ছিলেন— র্তাহাদিগকে ইহারা আপনাদের শাসনাধীন স্থানে ইচ্ছামত পাঠাইতে পারিতেন। প্রকাগুদরবারের ওমরাহেরা যে ইহাদের ভয় করিয়া চলিবেন বা ইহাদের প্রসাদ লাভের চেষ্টা পাইবেন, তাহ সহজেই অনুমেয়। ওমরাহবর্গের মধ্যে যাহার অব্যবস্থিতচিত্ত এই সকল মহিলাদের হাত হইতে নিস্তার পাইয়া নিজ যোগ্যতায় বাদশাহর সুনজর আকর্ষণ করিতে পারিতেন, তাহাদের ভাগ্য প্রসন্ন বলিতে হইবে ! স্বয়ং বাদশাহ এই সীমন্তিনীকুলের নানারূপ নামকরণ করিতেন। ‘ফায়মাবানু” ( জ্ঞানবতী ) তাহার মধ্যে একটি সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ সন্মানের নাম। গাগ্লিকা, ও নর্তকীগুণের মধ্যে পৃথকৃ পৃথকু এক একটি দল ছিল। প্রত্যেক দলে এক একজন শিক্ষয়িত্রী থাকিত । শিক্ষয়িত্রীর মোগল-হারেমে নৃত্যগীতকলা শিখা