পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○>b" শ্রদ্ধেয় ভক্তিপাত্র একজন অধ্যাপক সেদিন প্যারাসেলসাসের কথায় বলিতেছিলেন, “বাস্তবিক আজকাল ডাক্তারীর এই একটা সমস্ত ! এরূপ খণ্ডভাবে ডাক্তারীকে লইলে,—সমস্ত জীবনের সঙ্গে মিলাইয়া না লইলে, কেবল "ভিভিসেক্সন’—জীবন্ত শরীরের বাবচ্ছেদ দ্বারা অগ্রসর হইতে চাহিলে ডাক্তারী কোনদিনও উন্নতিলাভ করিবে কি না, কে জানে ৷” ইহ। হইতেই বুঝা যাইবে, প্যারাসেলসাসের মহত্ত্ব কোথায় ! বাস্তবিক সমগ্র জীবনের দিকে দৃষ্টি অনেক লোকেরই নাই। প্যারাসেলসাসের তাহ ছিল । তিনি মানব জীবনের মূল জানিয়া সমূলে রোগ উৎপাটিত করিবার ইচ্ছা করিয়া অশ্রান্ত উদ্যমে দেশবিদেশ ঘুরিয়া আসিলেন ; কিন্তু আশানুরূপ ফল হইল না, কতগুলি ঔষধ আবিষ্কার করিলেন মাত্র, শরীরও অনেকটা ভাঙিয়া পড়িল । ‘ব্যালে’তে আসিয়া তিনি ডাক্তারীর অধ্যাপক হইলেন। স্বয়ং প্রকৃতির কাছ হইতে শেখ ঔষধ গুলির শক্তিতে লোকে প্রথমট চমৎকৃত হইল, প্যারাসেলসাস কিন্তু ঔষধআবিষ্কারকে বড়-একটা-কিছু মনে করিতেন ন—ছাত্রদের মনে তত্ত্বান্বেষণম্পূহ উদ্রিক্ত করিবারই সমধিক চেষ্টা পাইতেন । একদিন কলেজের ভিতরেই ‘অ্যাভিসেনা'র একটা গ্রন্থ তিনি পুড়াইয়। দিলেন । লোক সব ক্ষেপিয়া উঠিল, পাকা মাথ। সব জড় হইল । প্যারাসেলসাস পুরাণী’ কবি জিদের প্রতি অজস্র বিদ্রুপ প্রয়োগ করিতেন, তাহাতে বুড়া লোকদের অজ্ঞানপক মস্তকে ছুচ ফুটিত । তিনি ‘অ্যাভিসেনা’র ঔষধগুলিকে ‘kit-hou বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আশ্বিন। modicine” q ‘Afffffs[tgą দাওয়াই বলিয়া অভিহিত করিতেন এবং বলিতেন, “আমি পুরাণী’শিক্ষার ধার ধারি না—প্রকৃতির কাছে যাহা আমি নিজে শিখিয়াছি, তাহাই আমার অবলম্বন — প্রকৃতিই গ্রন্থ, ডাক্তার তাহার ব্যাখ্যাত।” ক্রমে তাহার প্রতি কটুক্তিপূর্ণ ল্যাটিন্‌ কবিতা প্রতি পবিত্র চার্চের দরজায় ঝুলির্তে আরম্ভ করিল। প্যারাসেলসাস অসহিষ্ণু ছিলেন,—তিনি মৰ্ম্মাহত ও ক্রুদ্ধ হইয়া এ কথা ব্যালের ম্যাজিষ্ট্রেটদিগকে জানাইলেন। তাঁহাতে ৪ আবার বিদ্রপ করিয়া তাহাদিগকে “প্রবল, মহান দৃঢ়, সন্মানিত, বিচক্ষণ, জ্ঞানী, সুশিক্ষিত, সদাশয় মহাশয়গণ” এইরূপ সম্বোধন করিলেন । পবিত্র চাচ্চের একজন পিতা প্যারাসেলসাসের চিকিৎসায় রোগমুক্ত হইয়া টাকা দিতে চান না। ডাক্তার, ম্যাজিষ্ট্রেটদের নিকট অনুযোগ জানাইলেন, তাহার। কিন্তু পবিত্র চাচ্চের বিরুদ্ধে হাত তুলিতে সাহস করিলেন না ; বরং প্যারাসেলসাসের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার উপরেই হাত পড়িবার উদ্যোগ হইল। প্যারাসেলসাস তখন পলায়ন করিয়া কলমারে গিয়া আশ্রয় লহলেন এবং সেখান হইতে ভিলাচে ও ভিলাচ হইতে ব্যাভেরিয়ার ডিউকের আহবানে তাহার সভায় উপস্থিত হইলেন । কিন্তু পরিশেষে কি কারণে ভাড়া-করা খুনীর হস্তে র্তাহার জীবনলীলার অবসান হয়। প্যারাসেলসাস ৪৭বৎসরমাত্র জীবিত ছিলেন। তাহার সমস্ত সম্পত্তি তিনি বন্ধুদের ও গরীবদের উইল করিয়া বিলাষ্টয়া গিয়াছিলেন। মালাবারী-সম্পাদিত “প্রাচা ও প্রতীচী’