পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○る ৰঙ্গদশন । [ ২য় বর্ষ, আশ্বিন। প্রশংসার সহিত আমার কোন সম্পর্ক নাই— আমার নৌকা কখনো সোণ এবং বানর দুয়েরই অtহরণে যাইবে না—আমি পৃথিবীর পথরেখাছান অরণ্যপ্রান্তরে উড়িয়া যাইব । বিহঙ্গ যেমন পথচিহ্লহীন আকাশে পথ দেখিতে পায়, আমিও তেমনি আমার পথ দেখিতে পাইতেছি । ‘পুরাণী’ জ্ঞানীদের অবহেলা করিতে কি দোষ ? অনেকদিন পৃথিবী ত পুরাণ পথে গিয়াছে—কই তাহার বন্ধনরজ্জ্বর একগাছিও ত ছিড়ে নাই ? — এখন সময় হইয়াছে, নূতন আলো আমুক ! —আর, সত্য কাহারও কাছ হইতে শিখিবার জো নাই, সত্য নিজের মধ্যে— সত্যজ্যোতি অন্তরমঝিারে—নাহি অ{স বাহিরের কোনে কিছু হ’তে সত্য-আলে। ! সবাকার মাঝে আছে কেন্দ্র সঙ্গোপন, vযথ সত্য বিভাসিত পরিপূর্ণরূপে— তারে ঘেরি চারিধারে, প্রাচীরের পর প্রাচীরের মত, মাংসপিণ্ড মৃঢ়-জড় পূর্ণজ্ঞানে রেখেছে সিরিয়া চিরদিন : বিক্ষেপী বিঘাতী এই মৃঢ়-জড় জল অন্ধ করি তারে, সব করে ভ্রান্তিময় । ‘জানা শুধু এই বদ্ধ অস্তজ্যোতিরেপ। বহির করিয়৷ আন পথ মুক্ত করি – প্রবেশ করানো নহে বাহিরের আলে। ! আর জগতে বৰ্ব্বরে-বিজ্ঞেই বা তফাৎ কিন? একপরদ। বেশ আবরণে বৰ্ব্বর, একপরদ ৰেণ উন্মোচনে অবৰ্ব্বর ! কত অদ্ভুত রূপে এই অস্তর্জ্যোতির বিকাশ হয়—তাহার নিয়ম কে জানে ! হয় ত সুস্থ অবস্থায় একজন মুখ,কিন্তু উন্মাদগ্ৰস্ত হইতেই তাহার অস্তরের জ্যোতি ফুটিয়া বাহির হইল— তাহার প্রলাপবাক্য হইতে তাহার অন্তর সঞ্চিত মহত্ত্বের পরিচয় পাইলে । সেই বিচিত্রক্রিয়াময় মানুষের মূল একবার জানিব, তাহীর মহত্ব একবার অনুমান করিব । হে ঈশ্বর, আর দানবের স্বষ্টি করিও না, মানবজাতিটাকে একবার তুলিয়া দাও। মানুষ হইতে তফাৎ করিয়া আমি কোন গান্ধৰ্ব্বজগতের কল্পনা করিতেছি না। সেরূপ অনেকে করিয়া গিয়াছেন, কিন্তু আমি মানুষকেই রাজমুকুট পরাইব ।” “তাই বলিয়া আমাকে এখানকার এই ক্ষুদ্র প্রেমপ্রীতিতে বদ্ধ হইয় থাকিতে বলি ও মূলঙ্কান লাভ হইয়া গেলে,—আমার উদ্দেশু সিদ্ধ হইয় গেলে, তখন প্রতিপ্রেম প্রবল হইবার অবসর পাইবে—ওই যে মেননদী ছুটিয়া চলিয়াছে, উহার তলদেশে যেমন নানা খনিজ মুড়ী গোপনে চলিয়াছে, আমারও এই উদ্দেশ্রেীর নিম্নে সঙ্গোপনে তেমনি প্রতিপ্রেমমুখ আজ সুপ্ত রহি য়াছে।” এইখালেই ত শরীরবীজ !—এহ যে প্রতিপ্রেমের অনুশীলন অবহেলা করিয়া জ্ঞান অন্বেষণ করিতে যাওয়া, এইখানেই প্যারাসেলসাসের বিনাশবাজ নিহিত আছে। তবু প্যারাসেলসাস যে মানুষ, প্রতিপ্রেমের তাহারও যে প্রয়োজন, মামুষের অনুমোদন যে র্তাহার উৎসাহেও জোর দেয়--তাহ দেখাই যাইতেছে । ফেষ্টাসকে যুক্তিতর্কে স্বমতে আনিয়া বিদায়কালে অবশেষে প্যারাসেল্সাস জিজ্ঞাসা করিতেছেন—“তোমার কি মনে হয় আমার সিদ্ধিলাভ হইবে ?”-ফেষ্টাস নিজের শক্তি জানেন, এবং প্রেম নী ।