পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] এবং শিল্পে তাহ ব্যক্ত করিতে চাহিতেন। সমস্ত আকার এবং বর্ণের সৌন্দর্য্য আয়ত্ত করিয়া শেষে হৰ্ষ-ব্যথাআশা-আকাঙ্ক্ষা-কল্পনার সৌন্দৰ্য ভাষায় ফুটাইতে ইচ্ছা করিয়াছিলেন । বহুধাসম্বদ্ধ শব্বস্তুপে এইরূপে জীবনের সহজজ্ঞেয় সৌন্দর্য্যকথা জানাইয়। অবশেষে শব্দের ছেদে ছেদে, দুটি তারার মাঝখানকার প্রভাবন্ধনের দ্যtয় সঙ্গীতের ইন্দ্রজাল নিশ্বসিয়৷ দিয়া, অন্তরের গভীর অমুভাবরাশি অন্তঃপ্রবাহিত করিয়া দিবীর ইচ্ছা করিয়াছিলেন । অ্যাপ্রিলে তাহার কবিজীবন এইরূপে সম্পূর্ণ করিবার সঙ্কল্প করেন— I’reserving through my course God full on me, as I was full om nien. স্যরাপথ জগদীশজ্যোতি প্রণে ভরি পূর্ণ হ’য়ে ধরাপর উদিব সুন্দর । কিন্তু এত-বড় কাজের উপযুক্ত শক্তি মানবের কোথায় ? অ্যাপ্রিলে শীঘ্রই ধরণীমণ্ডলে প্রাপ্য যন্ত্রাদির ক্ষুদ্রতা ও চুব্বলতা দেখিতে পাইলেন। শেলীর মত অ্যাপ্রি লের তয়ণী এই বাস্তবরাজ্যের অরণ্যময় অসভ্যের দ্বীপে ঠেকিয়া ভাঙিয়া গেল ; এই ক্ষুদ্র সংসারে কেমন করিয়া অ্যাপ্রিলে তাহার মানসরাজ্যের অপুৰ্ব্বপ্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করিবেন ?—যা হোকৃ, এ দ্বীপে যাহা পাওয়া যায়, তাহ লইয়াই কাজ করিতে তিনি কৃতসঙ্কল্প হইলেন। এই তালবৃক্ষরাজিই মৰ্ম্মরস্তম্ভের কাজ করিবে,—এই পক্ষীর পালক, সাপের নিৰ্ম্মোক, মাছের শঙ্ক— এই সব লইয়াই, যেমন করিয়া হৌকৃ, একটি গঠন খাড়া করিতে হইবে। তবে প্যারাসেল্সাস । මාෂ්ණු এমনি করিয়া সাজান যাক যে, লোক চমৎকৃত হইয়া বলিতে থাকে—“এ এদেশের কারিকর নহে, এ যে নন্দনের কারিকর !" পৃথিবীর হীন সরঞ্জামে বিন্যাসের অপূৰ্ব্ব চমৎকারিত্ব দেখাইয়া যদি তাহার মধ্যে তাহার মনোরাজ্যের কোন লতাপুষ্পপত্রের সমাবেশ করিতে পারা যায়, তবে তিনি সবাইকে ডাকিয় বলিবেন—“দেথ দেখ বন্ধুগণ,—কপোতসঙ্কুলিত কত পাহাড়, অপূৰ্ব্ববৃক্ষাচ্ছাদিত কত রক্তবর্ণ মৃৎস্তুপ, কত চক্ষুপীড়ক ক্ষীরধবল স্বক্ষ বালুকারাশির বিস্তার অতিক্রম করিয়া আমি এক চমৎকার চন্দ্রালোকিত প্রান্তরে গিয়া পৌছিয়াছিলাম ;—সেথায় অধীর হইয়া আমি এই লতাপত্রমুকুল সংগ্ৰহ করিয়াছি। আমার কাছে ইহাদের রমণীয়তা অল্প, কারণ ইহাদের মনোরম জন্মস্থানে আমি ইহাদিগকে দেখিয়াছি ; তোমরা লও, ইহা জড়াইয়া মাথায় পর এবং ইহাদের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হইয়া কল্পনা করিতে থাক—কোন নিঝরজল ইহাদের অঙ্গে সিঞ্চিত হইয়াছে, কিরূপ তারকা প্রতিরজনীতে ইহাদের শিরে জ্যোতি কম্পিত করিয়াছে, কোন সপশিশুগণ বহুদূর হইতে আসিয়া ইহাদের অন্তরসঞ্চিত শিশিরজল পান করিয়া পলাইয়া গিয়াছে।”—তার পরে অ্যাপ্রিলে ক্রমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হৃদয়ের আশা-আকাঙ্ক্ষাকেও যথাসাধ্য ভাষাদান করিবেন ভাবিয়াছিলেন-কিন্তু হ কষ্ট !—এ সব কিছুই হয় নাই। কারণ তাহার ভাবরাশিকে তিনি আয়ত্ত করিতে পারেন নাই। অত্যুজ্জল কল্পনামূৰ্ত্তিগুলি তাহার মনোনেত্র ঝলসাইয়া দিয়াছে। একটি