পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ميكاني বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, আশ্বিন । কোন মূৰ্ত্তিকে ধরিতে গেলেই অবশিষ্টগুলির স্মৃতি কুহেলীবাম্পের মত আসিয়া তাহার চক্ষু অন্ধ করিয়া দেয়-পৰ্ব্বতুপ্রান্তপথে ঝঞ্জাহত লোকটিয় মত র্তাহাকে অজস্ৰকৃষ্ট করকাজালের ঘূর্ণপ্রবাহ আসিয়া কোথায় ছটাইয়া লইয়া বায় -অ্যাপ্রিলে কিছু করিতে পারেন নাই, কিন্তু করিতে যে পারেন নাই, তাহার যথেষ্ট কারণ ছিল নাকি ?—এইরূপ ঝঞ্জাকে কে আয়ত্ত করিতে পারে ?—এইরূপে কাতরক্ৰন্দনে বিলাপ করিতে করিতে অ্যাপ্রিলে ঘুরিয়া-লুঠিয়া প্যারাসেলসাসের গায়ের উপর পড়িয়া যাইতেছেন । এইবার প্যারাসেলসাস স্তম্ভিত হইলেন। হঠাৎ তাহার চক্ষে এক বিশাল জগতের দ্বার উন্মুক্ত হইল। তিনি জগতের মূল জানিতে গিয়া, শক্তির অভিমুখে ছুটিয়া মানবজীবনের খামল ঐশ্বর্ষ্যে পূর্ণ কোন এক বিপুল প্রান্তরে আদেী পদার্পণ করেন নাই—তিনি এতদিন কেবল একটা শিলাকঙ্করময় বিদীর্ণ মরুমধ্যে প্রেতবৎ কি খুজিয়া বেড়াইয়াছেন । আজ তিনি কাতর হইয়া বলিতেছেন – “We are weak dust. Nay, clasp not, or I faint to গভীর রাত্রির অন্ধকার । অন্ধকারে ছইট ভগ্ন জগৎ পরস্পরের বুকে পড়িয়া এক হইয়া যাইতে চায় ! অ্যাপ্রিলে বলিতেছেন —“হা, এখন আমি স্পষ্টই দেখিতেছি— পরমেশ্বরই একমাত্র পরিপূর্ণ কবি। তিনি তাহার বিভাবনারাশি বহুবিচিত্র স্বষ্টিতে গড়িয়া তুলিতেছেন। মানুষও ঈশ্বরের সমান হইতে চায়। মানুষের দুৰ্ব্বলতাতেও গৌরব। কারণ দুৰ্ব্বলতার মধ্যে ও শক্তি আবিভূত হইয়া মানুষকে ঈশ্বরসদনে উত্তোলন করে। আর ঈশ্বরের গৌরব তাহার অনন্ত শক্তি । এই শক্তিবলেই মানুষের দুৰ্ব্বলতাকে ও তিনি ভালবাসিয়া তাহারি সমান হইয়া অবতীর্ণ হইতে পারেন—হায়, আগে যদি জানিতাম !” অন্ধকার গভীরতর হইল । প্যারাসেলসাসের ভগ্নহৃদয়ে লুটাইয়৷ পড়িয়া, অ্যাপ্রিলে তাহার ব্যর্থ জীবন শেষ করিলেন । “‘ive one thy spirit. at least : Let me love too !” এই বলিয়া প্যারাসেলসাস স্তম্ভিত হইয়া রছিলেন। আমরাও দেখিয়া লইলাম— প্যারাসেলসাস কি পাইলেন । ( আগামী বারে সমাপ্য। ) অবকাশ ©— আজ করিব না আমি মান-অভিমান ; হিসাবের খাতা খুলে আদানপ্রদান লইব না বুঝে, শুধু আর একবার করিব পরাণ ভরি স্মরণ তোমার !