পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থ-সমালোচনা | লীয়ার । মহাকবি শেক্ষপীয়ার প্রণীত কিং লীয়ার নাটকের বঙ্গানুবাদ। প্রধতীন্দ্র মোহন ঘোষ কর্তৃক অনুবাদিত। মূলা ১\ একটাক মাত্র। t ইংরেজী ও বাঙ্গালী ভাষার প্রকৃতিগত প্রভেদ এত অধিক যে, ইংরেজি কাব্যের ভাবানুবাদ হইলেই কেবল তাহা উপভোগ্য, সুতরাং প্রশংসনীয় হইতে পারে। যদি ভাবানুবাদ না হইয়া কেবল বাক্যামুবাদ হয়, তাহ হইলে, প্রশংসনীয় হওয়া ত দূরের কথা, গ্রহণীয়ও হয় না—হাস্তজনক হয় মাত্র । প্রযুক্ত যতীন্দ্রমোহনবাবুর এই অনুবাদ পড়িয়া ইহা বেশ বুঝিতে পারিয়াছি যে, তিনি ইংরেজি জানেন এবং শেক্ষপায়রের ‘কিং লীয়ার’ ও পাঠ করিয়াছেন । এই পৰ্য্যস্ত হইলেই যে শেক্ষপীয়রের নাটকের অনুবাদ করিবার অধিকার কাহারও হয়, এরূপ ধারণা আমাদের নাই । যতীন্দ্রমোহনবাৰু বাক্যানুবাদ করিয়াছেন মাত্র। সুতরাং তাহার এই ‘লীয়ার', যাহারা ইংরেজি জানেন না বা অল্প জানেন, র্তাহাদের পক্ষে একেবারেক্ট অনধিগম্য— কেহ কিছুই বুঝিবেন না। যাহারা ইংরেজি ভাল জানেন, তাহাদের পক্ষেও ইহা দুরধিগম্য ; কেন না, মূলের সহিত মিলাইয়া না পড়িলে তাহারাও ইহা বুঝিতে পরিবেন না। শেক্ষপীয়র-বেচারিকে এমন করিয়া নাস্তানাবুদ থানেখারাব করা কেন ? এক আধটা দৃষ্টান্ত দেওয়া যাউকৃ। ৫ম পৃষ্ঠার শেষে--- “অন্তর আমিত্ব হতে বিদেশী হইয়ে, জনমের তরে তোরে দিমু বিসর্জন।” ইহার অর্থ যিনি বুঝিতে পারেন, তাহাকে আমরা ক্ষণজন্ম পুরুষ বলিতে প্রস্তুত আছি । মূলে কিন্তু এই স্থলের অর্থ অতি পরিষ্কার। তাহাও উদ্ধৃত করিয়া দিতেছি— “And as a stranger to my heert and me Hold thee, from this, for ever.” আরও একট—৩৪ পৃষ্ঠায়— “কৃতজ্ঞতা! তুই পিশাচী পাষাণী। আরও ভয়ঙ্কর কুৎসিত আকার সন্তানে যখন তোর হয় আবির্ভাব ; সামুদ্রিক জন্তু তুলনায় অতি ক্ষুদ্র ।” কেহ কিছু বুঝিলেন কি ? মূল এই— “Ingratitude ! thou marble-lhearted fiend, More hideous, when thou show'st thee in a child. Than the sea-monster !” ইহারই নাম শেক্ষপীয়ুরের বঙ্গানুবাদ ! এই অনুবাদ দেখিয়া যদি কেহ যতীন্দ্রবাবুর ংরেজিভাষার জ্ঞানসম্বন্ধে সন্দিহান হয়, তাহা হইলে তাহাকে আমরা বড় দোষ দিতে পারি না । দুই-চারি-স্থলে এইরূপ হইলে আমরা তাহা ধরিতাম না। কিন্তু এই পুস্তকের আগাগোড়াই এইরূপ । সকল দেখাইয়৷ দেওয়া অসম্ভব, কেন না, তাহা হইলে সমস্ত