পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা । ] মা ভৈঃ । రి64 তাছাদের দলে ভিড়িয়া তোমরা কনগ্রেস্ করিতে যাইবে ।” তর্ক করিয়া ইহার উত্তর দেওয়া যাইতে পারে। কিন্তু তর্কের দ্বারা লজ্জা যায় না। বিশ্বকৰ্ম্ম নৈয়ান্ত্রিক ছিলেন না, সেইজন্ত পুথিৰীতে অযৌক্তিক ' ব্যাপার পদে পদে দেখিতে পাওয়া যায়। সেইজন্ত যাহার মরিতে জানে এবং যাহার। মরিতে জানে না, তাহারা শুধু যুদ্ধের সময়ে নহে, শাস্তির সময়েও পরম্পর ঠিক সমানভাবে মিশিতে পারে না ; যুক্তিশাস্ত্রে ইহা অসঙ্গত, অর্থহীন, কিন্তু পৃথিবীতে ইহা সত্য । অতএব, আরাম-কেদারার হেলান্‌ দিয়া পোলিটিকাল মুখস্বপ্নে যখন কল্পনা করি— সমস্ত ভারতবর্ষ এক হইয়া মিশিয়া যাইতেছে, তখন মাঝখানে এক্ট একটা দুশ্চিন্তা উঠে যে, বাঙালির৯সঙ্গে শিখ আপন ভাইয়ের মত মিশিযে কেন ? বাঙালি বি-এ, এবং এম্-এ. পরীক্ষায় পাস হইয়াছে বলিয়া ? কিন্তু যখন তাহার চেয়ে বড় পরীক্ষার কথা উঠিবে, তখন সার্টিফিকেটু বাছির করিব কোথা হইতে ? শুদ্ধমাত্র কথায় অনেক কাজ হয়, কিন্তু সকলেই জানেন চি ড়ে ভিজাইবার সময় কথা দধির স্থান অধিকার করিতে পারে না, এবং তেমনি যেখানে রক্তের প্রয়োজন, সেখানে বিশুদ্ধ কথা তাহার অভাব পুরণ করিতে অশক্ত । অথচ যখন ভাবিয়া দেখি-—আমাদের পিতামহীরা স্বামীর সহিত সহমরণে মরিরাছেন, তখন স্বাশ হয়—মরাট। তেমন কঠিন হইবে না। অবশু, তাহারা সকলেই স্বেচ্ছাপূৰ্ব্বক মরেন নাই। কিন্তু মনেকেই যে মৃত্যুকে স্বেচ্ছাপূৰ্ব্বক বরণ করিয়াছেন, বিদেশীরাও তাহার সাক্ষ্য দিয়াছেন। কোন দেশেই লোকনির্বিশেষে নিৰ্ভয়ে ও স্বেচ্ছায় মরে না । কেবল স্বল্প একদল মুতু্যকে যথার্থভাবে বরণ করিতে পারে— বাকি সকলে কেহ বা দলে ভিড়িয়া মরে, কেল বা লজ্জায় পড়িয়া মরে, কেহ বা দস্তুরের তাড়নায় জড়ভাবে মরে । মন হইতে ভয় একেবারে যায় না । কিন্তু ভয় পাইতে নিজের কাছে ও পরের কাছে লজ্জ করা চাই । শিশুকাল হইতে ছেলেদের এমন শিক্ষা দেওয়া উচিত, যাহাতে ভয় পাইলেই তাহারা অনায়াসে অকপটে স্বীকার না করিতে পারে। এমন শিক্ষা পাইলে লোকে লজ্জায় প্লড়িয়া সাহস করে। যদি মিথ্যাগৰ্ব্ব করিতে হয়, তবে, আমার সাহস আছে, এই মিথ্যাগৰ্ব্বই সব চেয়ে মার্জনীয়। কারণ, দৈন্তই বল, অজ্ঞতাই বল, মুঢ়তাই বল, মনুষ্যচরিত্রে ভয়ের মত এত-ছোট আর কিছুই নাই। ভয় নাই বলিয়া ষে লোক মিথ্য অহঙ্কারও করে, অন্তত তাহার লজ্জা আছে, এ সদগুণটারও 21 1 নির্ভীকতা যেখানে নাই, সেখানে এই লজ্জার চর্চা করিলেও কাজে লাগে । সাহসের ন্যায় লজ্জাও লোককে বল দেয়। লোকলজ্জায় প্রাণবিসর্জন করা কিছুই অসম্ভব নয় ! অতএব আমাদের পিতামহীরা কেহ কেছ লোকলজ্জাতেও প্রাণ দিয়াছিলেন, এ কথা স্বীকার করা যাইতে পারে। কিন্তু প্রাণ দিবার শক্তি র্তাহীদের ছিল,—লজ্জায়