পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Հ)( 8 দিন হইল উচ্চারিত হইয়াছে—নিশ্বাস জোরে বহিয়াছে-এক একবার দৃঢ় দক্ষিণবাহু মুষ্টিবদ্ধ হইয়া যেন সিংহের ব্যাদানকে আকর্ষণ করিতে চাহিয়াছে, তবু এখনো আছোপান্ত নিদ্রিত। যেদিন জাগিবে, সেইদিনই আবার মানুষকে দেবরাজ্য-অভিমুখে চলিতে হইবে । আজই মানবের অন্তরে কত বিরাট আশা জাগিতেছে, কত গভীর ব্যথা আন্দোলিত হইতেছে—তাহার জন্ত পরিবদ্ধিত ক্ষেত্র চাই। মানুষেই ঈশ্বরের মহিমা জাজ্বল্যমান— আমি মানুষের জন্তই দেহমন সমর্পণ করিয়াছিলাম—সবই জানিতাম, তবু আমি বিফল হইয়াছি । শক্তির দিকে চাহিয়া আমার চক্ষু ঝলসিয়াছিল। ভাবিয়ছিলাম, শক্তিই মানুষের সার ধন দুৰ্ব্বলতা, ভ্রম, আমি অকৰ্ম্মণা বলির রাখিয়া দিলাম। অতীতকে অসম্পূর্ণ বলিয়। অবহেলা করিলাম। হে ভবিষ্যতের শিশু ! তুমি তাহা করিও না,— অতীতের শিক্ষায় সতর্ক হইয়া তুমি চলিবে । অন্ধকার-অতীতের পাশ্বে বর্তমান তাহার আলোক লইয়া কঁাপিবে। ভাবিও না--অমনি ভবিষ্যৎ, সফলতা লইয়া উপস্থিত হইবে । অনায়াস আনন্দে স্বৰ্গমণ্ডল হইতে স্বৰ্গমণ্ডলে পরীর মত উড়িয়া যাওয়া মানুষের ভাগ্যে নাই। বহু বেদনার মধ্য দিয়া অনেকদিন ধরিয়া ধীরে ধীরে আনন্দে উপস্থিত হইবে।--আশাভয়-প্রেমে এই সুদীর্ঘকাল মানুষকে মানুষ করিয়া রাখিবে । আমি অ্যাপ্রিলের কাছেই প্রেমের মহিমা জানিতে পারিরছিলাম— ঐ যে আমায় অ্যাপ্রিলে দাড়াইয়া আছে। প্রেমই আগে । প্রেমের প্রেরণায় শক্তি জাগিয়া উঠিয়া কাৰ্য্যে ধাবিত হইবে তাই, আমি আর বঙ্গদর্শন । [ ২য় বর্ষ, কাৰ্ত্তিক । অ্যাপ্রিলে, এই দুজনকে’ মিশাইয়াই , একটি মাঝামাঝি জগৎ নিৰ্ম্মিত হইবে—সেই মানুষ ! ফেষ্টাস, অর্জ আর আমার ভয় নাই । আজ আমি ভও বলিয়া পরিচিত হইলাম, ভালই হইয়াছে—যাহা অপরাধ, যাহা দুৰ্ব্বলতা ছিল, তাহার শাস্তি হৌক-কিন্তু একদিন আমাকে সবাই জানিবে, আমি জগদীশ্বরের প্রদীপ বক্ষে চাপিয়া ধরিয়াছি, একদিন প্রকাশিত হইব । অ্যাপ্রিলে, তোমার হাত আমাকে দাও, অ্যাপ্রিলের সঙ্গে হাতাহাতি করিয়া আমি চলিলাম।” প্যারাসেলসাস চলিয়া গেলেন। ‘প্যারাসেলসাস কাব্য আলোচনা করিলাম । এই আলোচনাগুলিতে ব্রাউনিংএর কবিত্ব জানাইয়া দেওয়াই আমার উদ্ধেশু । যাহারা ব্রাউনিংকে জানেন, তাহার আমাকে ক্ষমা করিবেন। অনুবাদে আলোচনায় প্রচুরভাবে ব্রাউনিংএর বাক্যাবলীই আমি বাংলায় প্রদান করিয়াছি। প্যারাসেলসাসের প্রথম খণ্ডে অতিবিস্তৃত কথোপকথনে, বহুশাখায়িত তৰ্কৰ্যক্তিতে প্যারাসেলসাসের জ্ঞানান্বেষণের উৎসাহই দেখিতে পাই । দ্বিতীয় খণ্ড পরম কবিত্বময় । তৃতীয় ও চতুর্থ খণ্ডে ব্রাউলিং আমাদিগকে একটি মানবহৃদয়ের গুহায় নামাইয়া লইয়া নানারূপ তীব্রভাবের পরস্পর তাড়না অপুৰ্ব্বশক্তিসহকারে দেখাইয়া দিয়াছেন। চতুর্থ খণ্ডটি পরম রমণীয়। অবশেষে পঞ্চম খণ্ডে মৃত্যুর অন্ধকারে প্যারাসেল্সাসের মূলঞ্জানগ্রাপ্তির अनन्ता অতি চমৎকার। প্যারাসেলসাস্লম্বন্ধে আর একটি কথা