পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম সংখ্যা। ] খণ্ডাংশ্বের শুদ্ধকেবল মধ্যপ্রদেশটিই আছে, তা বই তাহীর আগ নাই অথবা গোড়া নাই ; এটার ব্যালায়’ও তেমনি এরূপ হইতে পারে না যে, শুদ্ধকেবল “দেখিতেছি”-মাত্রটিই আছে, তা বই—ষে দেখিতেছে সে-আমি নাই অথবা দৃষ্টিক্ষেত্রে কোনো দৃশ্য বিদ্যমান নাই। "তাগাছ" বলিলেই বুঝায় যে, তাহার আগ আছেগোড়া আছে—মধ্যপ্রদেশ আছে ; “দেখিতেছি” বলিলেই বুঝায় যে, মূলস্থানে আমি আছি—লক্ষ্যস্থানে দৃশ্য প্রকাশিত আছে— মাঝখানে দর্শনক্রিয় চলিতেছে । মোট দৃশ্বের সঙ্গে একযোগে যেমন তাহার আগা, গোড়া এবং মধ্যপ্রদেশ, তিনই দৃশু ; মোট জ্ঞেয়ের সঙ্গে একযোগে তেমনি জ্ঞানের কর্তা, কৰ্ম্ম, ক্রিয়া, তিনই জ্ঞেয় । ঐ শাখাহেলানিয়া তালগাছটার সঙ্গে সঙ্গে উহার শাখাও আমার দৃষ্টিক্ষেত্রে প্রকাশ পাইতেছে ; তথৈব, “আমি তালগাছ দেখিতেছি” এই মোট বৃত্তান্তটির সঙ্গে সঙ্গে “আমি”ও আমার জ্ঞানে প্রকাশ পাইতেছি । তবেই হইতেছে বে, শাখা-হেলানিয়া তালগাছটার সঙ্গে সঙ্গে শাখাও দৃশ্ব ; তথৈব, “আমি তালগাছ দেখিতেছি” এই মোট জ্ঞেয়ের সঙ্গে সঙ্গে আমিও জ্ঞেয় । “আমি তালগাছ দেখিতেছি” এই কথাটির গোড়াতেই “আমি” রহিয়াছে ;—সেই গোড়া’র কথাটি জ্ঞানে প্রকাশ না পাইলে মোট কথাটা জ্ঞানে প্রকাশ পাইতে পারে না ;– “আমি” এই ক্ষুদ্র কথাটি জ্ঞানে প্রকাশ না পাইলে, “আমি তালগাছ দেখিতেছি” এতগুলা কথা জ্ঞানে প্রকাশ পাইতে পারে সার সত্যের আলোচনা। ©4 ዓ না । “আমি” জ্ঞেয় না হইলে “আমি তালগাছ দেখিতেছি” এই মোট বৃত্তান্তটি জ্ঞেয় হইতে পারে না । অতএব “আমি তালগাছ দেখিতেছি” এই মোট বৃত্তান্তটি যখন আমার জ্ঞানে প্রকাশ পাইতেছে, তখন কাজেই সেই সঙ্গে “আমি”ও অামার জ্ঞানে প্রকাশ পাইতেছি—মুতরাং“আমি”ও জ্ঞেয় । তবেই হইতেছে যে, মোট জ্ঞেয় বৃত্তাস্তটির সহিত জড়িতরূপে—দৃশুমান বৃক্ষের দ্রষ্টারূপে—ষে-আমি আপনার নিকটে প্রকাশ পাইতেছি, সে-আমি জ্ঞেয়-অামি ৷ পক্ষ৮ স্তরে, ঐ জ্ঞেয়-আমির পশ্চাতে যে-আমি সাক্ষিৰূপে ( নিছক সাক্ষিরূপে ) দণ্ডায়মান আছি, সেই-আমিই জ্ঞাত আমি । আমার মন বলিতেছে যে, জ্ঞাতা-আমি এবং জ্ঞেয়আমি, এ ছই আমি একই আমি। বুদ্ধি কিন্তু মনের ঐ সোজা কথাটিতে সায় দিতে ইতস্তত করিতেছে। বুদ্ধি ঘাড় নাড়িতেছে আর বলিতেছে — “তাহ হইবে কিরূপে ? দুই আমি এক আমি হইব কিরূপে ? বিশেষত যখন দুই আমি দুই রকমের ;–এক আমি জ্ঞাত, আর-এক আমি জ্ঞেয় । মন এবং বুদ্ধির মধ্যে এই যে, মতের অনৈক্য, ইহাই আত্মজ্ঞানের পথের কণ্টক হইয়া দাড়াইয়াছে। এ ছার কণ্টকের উন্মোচন হইতে পারে কি উপায়ে, সেইটিই চিন্তার বিষয় । তবে কি জ্ঞাতা-আমি এবং জ্ঞেয়আমির একত্ব আমার মনে প্রকাশ পাইতেছে বই আর কিছুই নছে ?—বাস্তবিক সত্য নহে ? এইটিই হ’চ্চে জিজ্ঞাস্য । এ