পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ0Ե» প্রশ্নের মীমাংসা করিতে হইলে আমাদের জাগ্রত জ্ঞানের সাক্ষাতে কাৰ্য্যত যাহা প্রতিনিয়ত ঘটে, তাহাই সৰ্ব্বাগ্রে প্রণিধান করিয়া দেখা কৰ্ত্তব্য । অতএব দেখা যা’ক্‌ :– নিদ্রা হইতে জাগিয়া উঠিবার সময় আমার জ্ঞান যদি ব্যক্ত ন হইত, তবে তে৷ কোনো কথাই থাকিত না ; তাহা হইলে জ্ঞাতা বা জ্ঞেয় এরূপ একটা কথা আমার মনেও স্থান পাইতে পারিত না—মুখেও বাহির হইতে পারিত না । কিন্তু জ্ঞান একবার ব্যক্ত হউক দেখি– সেই দণ্ডে সেই জ্ঞানের জ্ঞাতৃস্থানে জ্ঞাতা আমি সাক্ষরূপে অধিষ্ঠান করিব এবং তাহার জ্ঞেয়-স্থানে একদিকে শ্বেমন ঘটপটাদি নানা বিষয় একটির পর আর-একটি যাওয়আসা করিতে থাকিবে, আর একদিকে তেমনি সেই সকল জ্ঞেয় বিষয়ের পশ্চাৎ পশ্চাৎ জ্ঞেয়-আমি ক্রমাগতই ঘুরিয়া বেড়াইত্তে থাকিবে । দেখিব তখন যে, জ্ঞেয়আমি’র সম্মুখে যখন যে ভাবের বিষয় আসিয়া উপস্থিত হইতেছে, তখন তাহার সঙ্গে গোড় দিয়। আপনিও সেই-ভাবের ব্যক্তি হইয়া দাড়াইতেছি—এইরূপে ঘড়িঘড়ি বেশ-পরিবর্তন করিতেছি । একই রাজ রাজসভায় দেশের মস্তকস্থানীয় মহামহা শুর-বার এবং মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিতগণের মাঝখানে এক মূৰ্ত্তি ধারণ করেন ; আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবের সহিত ভোজে বসিয়া তাহাদের মাঝখানে দ্বিতীয় আরএক মূৰ্ত্তি ধারণ করেন ; রঙ্গশালায় বয়স্ত बक्रधर्शन । [ ২য় বর্ষ, কাৰ্ত্তিক । গণের মাঝখানে তৃতীয় জার-এক মূৰ্ত্তি ধারণ করেন ; অস্তঃপুরে পুত্র-কলত্রাদির মাঝখানে চতুর্থ আর-এক মুক্তি ধারণ করেন । যে-রাজা’র এইরূপ ঘড়িঘড়ি মুক্তি-পরিবর্তন হইতেছে, সেই রাজাই রাজার জ্ঞেয়-আমি । তদ্ব্যতীত রাজার মধ্যে আর-এক রাজা আছেন—যিনি রাজার জ্ঞাতা-অামি । এ-রাজ ( জ্ঞাতা-অামি ) দেবপ্রতিমা’র দ্যায় স্থিরভাবে দণ্ডায়মান থাকিয়া নিনিমেষ চক্ষে ও-রাজার ( জ্ঞেয়আমি’র ) বিচিত্র লীলা দর্শন করিতেছেন । জ্ঞাতৃ-জ্ঞেয় আমি-ফুটার মধ্যে প্রধান প্রভেদ এই যে, জ্ঞেয় অামি পরিবর্তনশাল—জ্ঞাত। আমি অপরিবর্তনীয়। এই যে দুই ভাবের দুই আমি—জ্ঞাত আমি এবং জ্ঞেয় আমি—এ দুই আমি আপামর সাধারণ সকলেরই নিকটে এক আমি বলিয়া প্রকাশ পায়, তাহা জানি ; কিন্তু প্রকাশ যে পায়—তাছা কি প্রকাশ পায় মাত্র, না তাহ বাস্তবিক সত্য—সেইটিই হ’চ্চে জিজ্ঞাস্ত ! তাহ শুদ্ধকেবল প্রকাশ-পাইতেছে-মাত্র হইলে তাহাতে আত্মজ্ঞানের পক্ষে বিশেষ কোনো ফল দশিতে পারে না। যাহা প্রকাশ পাইতেছে, তাহ বাস্তবিক-সত্য-রূপে—প্ৰুবসত্য-রূপে—প্রকাশ পাওয়া চাই, তবেই আত্মজ্ঞানের কাঠিন্তের অনেকটা লাঘব হইতে পারে। মন তো অষ্টপ্রহরই বলিতেছে যে, “দুই আমি একই আমি—জ্ঞাত আমিই জ্ঞেয়আমি এবং জ্ঞেয়-আমিই জ্ঞাতা-অামি” ; তবে কেন বুদ্ধি তাহাতে সায় দিতে ইত