পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

రిyు ৰঙ্গদশন । [ ২য় বর্ষ, কাৰ্ত্তিক । হইলে, নিজের খরচ বঁাচাইবার দিকে দৃষ্টি রাখিয়া অন্তের খরচের প্রতি উদাসীন হইতে হয় । তাই আগামী দরবারে সমাটের নায়েব অল্প খরচে কাজ চালাইবেন বটে, কিন্তু আড়ম্বরটাকে স্ফীত করিয়া তুলি বার জন্ত রাজাদিগকে খরচ করাইবেন । প্রত্যেক রাজাকে অন্তত ক’টা হাতী, ক’ট ঘোড়া, ক’জন লোক আনিতে হইবে, শুনিতেছি তাছার অনুশাসন জারি হইয়াছে । সেই সকল রাজাদেরই হাতিঘোড়া-লোকলস্করে যথাসম্ভব অল্প পরচে চতুর সম্রাট্‌প্রতিনিধি যথাসম্ভব বৃহৎব্যাপার ফর্শদিয়া তুলিবেন । ইহাতে চাতুৰ্য্য ও প্রতাপের পরিচয় পাওয়া যায়, কিন্তু বদান্ত্যতা ও ওদায্য —প্রাচ্য সম্প্রদায়ের মতে মাহ রাজকীয় উৎসবের প্রাণ বলিলেই হয় - তাহা ইহার মধ্যে থাকে না । একচক্ষু টাকার থলিটির দিকে এবং অন্ত চক্ষু সাবেক বাদশাহের অমুকরণকার্য্যে নিযুক্ত রাখিয়া এ সকল কাজ চলে না । এ সব কাজ ঘূে স্বভাবত পারে, সে-ই পারে এবং তাহাকেই শোভা পায় । ইতিমধ্যে আমাদের দেশের একটি ক্ষুদ্ররাজ সম্রাটের অভিষেক উপলক্ষে র্তাঙ্কার প্রজাদিগকে বহুসহস্র টাকা খাজনা মাপ দিয়াছেন। আমাদের মনে হইল, ভারতবর্ষে রাজকীয় উৎসব কি ভাবে চালাইতে হয়, ভারতবর্ষীয় এই রাজাটি তাহ ংরেজ কর্তৃপক্ষদিগকে শিক্ষা দিলেন। কিন্তু যাহারা নকল করে, তাহারা আসল শিক্ষণটুকু গ্রহণ করে না, তাহারা বাহ আড়ম্বরটাকেই ধরিতে পারে। তপ্তবালুক হুর্য্যের মত তাপ দেয়, কিন্তু আলোক খেয় না। সেইজন্ত তপ্তবালুকার তাপকে আমাদের দেশে অসহ আতিশয্যের উদাহরণ বলিয়া উল্লেখ করে । আগামী দিল্লিদরবার ও সেইরূপ প্রতাপ বিকিরণ করিবে, কিন্তু আশা ও আনন্দ দিবে না । শুদ্ধমত্র দম্ভ-প্রকাশ সম্রাটকে ও শোভা পায় না—ঔদায্যের দ্বারা দয়াদাক্ষিণ্যের দ্বারা দুঃসহ দম্ভকে আচ্ছন্ন করিয়া রাখাই যথার্থ রাজ্যোচিত । আগামী দরবারে ভারতবর্ষ তাহার সমস্ত রাজরাঞ্জ দ্য লইয়। বর্তমান বাদশাহের নায়েৰের কাছে নতিস্বীকার করিতে যাইবে, কিন্তু বাদশাহ তাহকে কি সম্মান, কি সম্পদ, কোন অধিকার দান করিবেন ? কিছুই নহে । দান করিবার বেলায় রাজশক্তি তাহার দরবারের সমস্ত বিদ্যুৎআলে। নিভাইয়া, শতসহস্ৰ আপিসের কোটরে কোটরে নিমেবের মধ্যে অস্তদ্ধান করিবে এবং বিবিধ বড়সাহেবের ফিট্‌ফাটু বেশে ডেস্কের সম্মুখে হিসাবের থাত দেখিতে বসিবে । ইহাতে যে কেবল ভারতবর্ষের অবনতিস্বীকার তাহী নহে, এইরূপ শুষ্ঠগৰ্ত্ত আকস্মিক দরবারের বিপুল কার্পণো ইংরেজের রাজমহিমা প্রাচ্যজাতির নিকট থৰ্ব্ব না হইয়া থাকিতে পারে না । যে সকল কাজ ইংরেজী দস্তুরমতে সম্পন্ন হয়, তাহা আমাদের প্রথার সঙ্গে না মিলিলেও সে সম্বন্ধে আমরা চুপ করিয়া থাকিতে বাধ্য। যেমন, আমাদের দেশে, বরাবর রাজার আগমনে বা রাজকীয় শুভকৰ্ম্মাদিতে যে সকল উৎসব আমোদ হইত, তাহার ব্যয় ‘রাজাই বহন করিতেন, প্রজার