পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যা। ] তৈলবট। 8:ፃ অল্পদিনের মধ্যে প্রাচীন হালদারগোষ্ঠীকেও ক্রিয়াকর্মে ও দানধ্যানে সুৰ্য্যোদয়ে শশীঙ্কের দ্যায় নিম্প্রভ করিয়া ফেলিলেন। এরূপ অবস্থায় যে প্রাচীন বুনিয়াদী-বংশজাত হালদারগণ স্বনামখ্যাত ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর প্রতি ঈর্ষাপূর্ণ কটাক্ষপাত করিবেন, তাহা বলাই বাহুল্য। কিন্তু ইন্দ্রনারায়ণ ফরাসী গভমেণ্টের দেওয়ান, সুতরাং হালদারগণ তাহাকে একটু ভয়ও করিতেন । বিশেষত ইন্দ্রনারায়ণ অত্যন্ত উন্নতমনা ও নিৰ্ব্বিরোধী লোক ছিলেন । সেইজন্ত ইচ্ছাসত্ত্বেও হালদারগণ র্তাহাকে কোনও প্রকারে বিপাকে ফেলিতে পারেন নাই। এক্ষণে এই পদ্ম-মুচিনী-সংক্রান্ত সূত্র পাইয় তাহারা ইন্দ্রনারায়ণকে অপদস্থ করিবার উপায় দেখিতে পাইলেন। অনুচরমুখে হালদারবাবুর। শুনিলেন যে, ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী জানিয়া-গুনিয়া এক রূপর্যৌবনশালিনী চৰ্ম্মকায়কস্তাকে স্বীয় গৃহে পরিচারিকারূপে নিযুক্ত করিয়াছিলেন। পরে তাহার স্বামী জানিতে পারিয়া স্বীয় পত্নীকে লইয়া গিয়াছে। ইন্দ্রনারায়ণ এই চৰ্ম্মকারকস্তার হস্তে জল ও তাম্বুল পর্য্যন্ত গ্ৰহণ করিতেন। হালদারদিগের অনুগ্রহে অৰশেষে কথাটা প্রকারান্তরে চৌধুরী মহাশয়ের চরিত্রে নানাপ্রকার কুৎসা ছড়াইতে ছড়াইতে গৃহ হইতে গৃহাস্তরে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িল এবং ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী এক-ঘরে” বা সমাজচ্যুত হইলেন। আমরা ঘুে সময়ের কথা বলিতেছি, তখন আলিৰদ খা বাংলার নবাব। তখন ক্রোরপতিকেও সমাজপতির নিকট মস্তক নত করিতে হইত। পূৰ্ব্বেহ বলিয়াছি যে, হালদারগণ গোষ্ঠীপতি ও সমাজপতি ছিলেন । র্তাহীদের নিষেধে কোনও সদব্ৰাহ্মণ চৌধুরীবাটতে অন্নজলাদি গ্রহণ করিতে সাহস করিলেন না। ইন্দ্রনারায়ণ অধিকতর ধনশালী হইলেও সমাজের নিকট মস্তক নত করিলেন । চন্দননগর এবং তন্নিকটবৰ্ত্তী অধিকাংশ স্থানের স্বভাবকুলীন ব্রাহ্মণগণ হালদারগণের সহিত কুটুম্বিতাস্থত্রে বদ্ধ। ইন্দ্রনারারণ ক্রিয়াকৰ্ম্ম উপলক্ষে স্বগ্রামস্থ ব্রাহ্মণগণের সাহায্য পাইলেন না । এই সময় পাণ্ডুয়ার নিকটবর্তী ভূরস্কট পরগণার জমাদার স্বনামখ্যাত মহাকবি ভারতচন্দ্র রায় বদ্ধমানাধিপতির ক্রোধানলে পড়িয়া সৰ্ব্বস্বাস্ত হইয়। অবশেষে প্রাণভয়ে পলায়ন করিয়া চন্দননগরে ফরাসী গভমেণ্টের আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। ইন্দ্রনারায়ণ অতিযত্নে কবিবরকে স্বগৃহে আশ্রয় প্রদান করিলেন, কিন্তু চৌধুরী মহাশয়ের এই জাতীয় অপবাদ থাকাতে কবি র্তাহার বাটীতে আহারাদি করিতেন না । ওলন্দাজ কোম্পানির দেওয়ান গোদলপাড়ানিবাসী রামলোচন মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের বাটতে তিনি আহারাদি করিতেন এবং ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর বটাঁতে অবস্থান করিতেন । 據 (t যাহারা ভারতচন্দ্রের জীবনী পাঠ করিয়াছেন, তাহারা জ্ঞাত আছেন যে, নবদ্বীপাধিপতি মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র সময়-সময় আটদশ লক্ষ টাকা ঋণ করিবার জন্ত চন্দননগরে