পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যা । ] সার সত্যের আলোচনা । 896: করা হইয়া থাকে-ছাঁচের আগাটিই ছাঁচের মুখ্য অঙ্গ তাহ আমি জানি ; কিন্তু ছুচের অীর-সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বাদে শুদ্ধকেবল তাহার ঐ মুখ্য অঙ্গটি, শুদ্ধকেবল তাহার আগামাত্রটি, আমাকে আনিয়া দেও দেখি —তাহ যদি তুমি আমাকে আনিয়া দিতে পারে, তবেই বলিৰ যে, জ্ঞান এবং জ্ঞেয় বাদে শুদ্ধকেবল জ্ঞাতামাত্রকে জ্ঞানের উপলব্ধি-গোচরে আনয়ন করা সম্ভবে । কিন্তু ছাঁচের শুদ্ধকেবল আগামাত্রটি ধরিতে-ছুতে পাইবার বস্তু নহে—তাহ দেখিতেই পাওয়া যাইতেছে । তাহ ধরিতে ছুতে পাইবার বস্তু নহে—কেন ? না, যেহেতু তাহা একটি জ্যামিতিক বিন্দুমাত্র। জ্যামিতিক বিন্দুর থাকিবার মধ্যে আছে কেবল স্থিতি ( position ) ; তা বই তাহার zsfgsa (magnitude) FfĘ ; stąER যখন নাই, তখন কাজেই তাহ ধরিতে ছুতে পাইবার বস্তু নহে। “যিনি দৃশু বস্তু দেখিতেছেন” এতখানি কথা বলিলে তবে তাহার মধ্য হইতে দ্রষ্টা-শব্দের অর্থ টানিয়া বাহির করা যাইতে পারে। যিনি'র একটি বাহন হচ্ছে দৃপ্ত-বস্তু এবং আর-একটি বাহন হ’চ্ছে “দেখিতেছেন" অর্থাৎ দর্শনক্রিরা ; যিনি'র এই দুইটি বাহন-বাদে শুদ্ধকেবল ষিনি-মাত্রটি নিঃসঙ্গ জ্যামিতিক বিন্দুরই সহোদর ভ্রাতা, তাহ ধরিতে ছুতে পাইবার বস্তু নহে। একজন রাজচক্রবর্তী, যিনি রাজকাৰ্য্যে ব্যাপৃত রছিরাছেন, তিনিও তিনি, আর, একজন গরিব ব্রাহ্মণ, যিনি ब्रांछदांप्ङ्ग আতিথ্য যাচঞা করিতেছেন, তিনিও তিনি । ও-তিনি হইতে রাজকাৰ্য্য এবং এ-তিনি হইতে যাচ্ঞী-কাৰ্য্য বাদ দিলে দুই তিনির অনেকটা ভার-লাঘব হয়, তাহাতে আর ভুল নাই ; কিন্তু যদি ঐরূপ প্রণালীতে দুই তিনির মধ্য হইতে দোহার সমস্ত কার্য্য এবং সমস্ত গুণ বাদ দিয়া নিঃসম্বল তিনি-ফুটিকে আলোচনা-ক্ষেত্রে উপস্থিত করানো যায়, তাহ হইলে দুয়ের মধ্যে কোনো প্রভেদই দর্শকের নয়নগোচর হইতে পারে না। কেন না, সে তিনি যে কোন তিনি–রাজকাৰ্য্যের কৰ্ত্তারূপী মহা-তিনি অথবা ভিক্ষা-কার্য্যের কৰ্ত্তারূপী ক্ষুদ্র তিনি—তাহ তাহার গায়ে লেখা নাই ; তাহা যখন নাই, তখন কাজেই দুয়ের মধ্যে প্রভেদ নির্দেশ করিতে পারা কাহারে কর্তৃক সম্ভবে না। স্বযুপ্তির অবস্থায় রাজাধিরাজ মহারাজ এবং ক্ষুদ্রাৎ ক্ষুদ্র চাসা দোহারই পদবী সমান—সে অবস্থায় দোহার দুই আত্মার মধ্যে সরিষাভোর প্রভেদেরও স্থানাভাব। অতএব এটা স্থির যে, আত্মায় আত্মার যত কিছু প্রভেদ এবং প্রত্যেক আত্মার যত কিছু বিশেষত্ব, সমস্তই আত্মার শক্তি-স্ফূৰ্ত্তি এবং গুণপ্রকাশের পশ্চাৎ ধরিয়া চলিয়া জ্ঞেয়স্থানে উপনীত হর—উপনীত হইয়া সেই জ্ঞানালোকিত প্রদেশে গৃহপ্রতিষ্ঠা করে ; এতদ্ব্যতীত আত্মার কোনো বিশেষত্বই ভূত্বস্থানের অব্যক্ত পুরীতে শুদ্ধকেবল আছিমাত্রে ভর করিয়া জীবনধারণ করিতে পারে না। যদি কেবল আছি-মাত্রে ভর করিয়া জ্ঞাতৃস্থানে বর্তমান থাকিলেই আত্মজ্ঞানে সিদ্ধিলাভ করা যাইতে পারিত, তবে বিনা সাধনে সকলেই সিদ্ধ। প্রকৃত কথা এই