পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যা । ] সার সত্যের অালোচনা । 8©ፃ কোনে গতিকেই মার্জনীয় বলিয়া অাদর পাইতে পারে না । সত্য এই যে, ভজন সাধনের একটি প্রবলতম সহায় তো বটেই, তা ছাড়া, ভজন সাধনের একটি অপরিহার্য্য মুখ্য অঙ্গ। ভজন-বর্জিত সাধন একপ্রকার হৃদয়-বর্জিত হস্ত—তাহ নিতান্তই অঙ্গহীন। বাহাই হো’কৃ—ক্রিয়াযোগের সাধন এবং ভক্তিযোগের সাধন, দুইই,পরে পরে পর্য্যালোচনা করিয়া দেখা আবশ্যক ; তাহা হইলেই দুয়ের মধ্যে কোনটি কতদূর ফলদায়ক, তাহা আপনা হইতেই ধর পড়িবে। আত্মজ্ঞানের ঐকাঙ্গিক সাধন । আত্মজ্ঞানের সাধনপদ্ধতি দুইস্থানে দুইরূপ। যে স্থানে ভাব-জগতের প্রতি লক্ষ্য নিবিষ্ট করা হয়, সে স্থানে একরূপ, এবং যে স্থানে সত্য-জগতের প্রতি লক্ষ্য নিবিষ্ট করা হয়, সে স্থানে একরূপ। ভাবজগতের প্রতি লক্ষ্য নিবিষ্ট করিলে সাধকের নিকটে আত্মশক্তির কার্য্যকারিতা সৰ্ব্বোপরি প্রকাশ পায় ; সত্য জগতের প্রতি লক্ষ্য নিবিষ্ট করিলে সাধকের নিকটে ঐশী শক্তির কার্য্যকারিত সৰ্ব্বোপরি প্রকাশ পায় । দুই স্থানের দুইপ্রকার সাধনপদ্ধতির মধ্যে এইরূপ মৰ্ম্মাস্তিক প্রভেদ সত্ত্বেও দুয়ের মধ্যে এক জায়গায় ঐক্য দেখিতে পাওয়া যায় এই যে, দুয়েরই সাধনীয় কাৰ্য্য হ’চ্চে জ্ঞাতাকে জ্ঞেয়স্থানে আনয়নপূর্বক জ্ঞাতৃজ্ঞেয়ের একীকরণ। ভাৰ-জগতের প্রতি লক্ষ্য নিবিষ্ট করাই বা কিরূপ, আর, সত্য-জগতের প্রতি লক্ষ্য নিবিষ্ট করাই বা কিরূপ, তাহার একটি মোটামুটি রকমের উপমা দিতেছি, তাহ হইলেই দুয়ের মধ্যগত প্রভেদ মুস্পষ্টরূপে পাঠকের হৃদয়ঙ্গম হইতে পারিবে । একজন কাশ্মীরযাত্রী আমাকে বলি লেন, “তুমি যদি কাশ্মীর দেখিতে চাও, তবে আমার সঙ্গে আইস।” আমি বলিলাম, “তথাস্তু।” অনতিপরে দুইজনে আমরা রেলগাড়ির দুই কোণে সুখাসীন হইয়া পশ্চিমাভিমুখে প্রধাবিত হইলাম। কিন্তু রেলগাড়ির ঢিমাচালে আমার বড়ই দেকৃ ধরিতে লাগিল । রেলগাড়িকে “দূর হ” বলিয়া এক ধাক্কায় দূরে সরাইয়া দিয়া মনোরথে আরোহণ করিলাম এবং চকিতের মধ্যে কাশ্মীরের রমণীয় উদ্যান-কাননে উপনীত হইয়া সুগন্ধ সমীরণ • সেবন করিভে লাগিলাম। মনোরথের ধোয়াকলে ধোয়ার ८छाशास्त्र भूर्त श्हेप्ङहे झ्हेब्र ब्रश्ब्रिोश्णि– তাহার জন্ত আমাকে ভাবিতে হয় নাই । অর্থাৎ কাশ্মীর যে কিরূপ চমৎকার স্থান, তাহ নানা পরিব্রাজকের মুখে শুনিয়া-শুনির আমার কণ্ঠস্থ হইয়া গিয়াছিল। আমি সেই সকল শ্রুতপূৰ্ব্ব বৃত্তান্ত জোড়াতাড়া দিয়া চিদাকাশে ( অর্থাৎ আত্মার জ্ঞেয়স্থানে ) কাশ্মীরনগর উদ্ভাবন করিলাম ; উদ্ভাবন করিরা তাহার ধানে নিমগ্ন হইলাম। ইহারই নাম ভাব-জগতের প্রতি লক্ষ্য-নিবেশ । কিয়দিবস পরে আমি যখন সঁশরীরে কাশ্মীরে উপনীত হইয়া তথাকার সুরম্য নদনদী-গিরি-কাননের প্রতি চাহিয়া-দেখিয়া অবাক হইলাম, তখন আমার নেত্রযুগল কিযে স্বৰ্গভোগ করিতে লাগিল, তাহা ৰলিবার কথা নহে। ইহারই নাম সত্য-জগতে লক্ষ্য