পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যা । ] সার সত্যের অালোচনা । 8\రిసి ಗ–ತ್ವ তাছারই নাম অপরিবর্তনীয়রূপে প্রকাশ পাওয়া । তবেই হইতেছে যে, সাধকের সমস্ত মনোবৃত্তি যখন লক্ষ্য-বিন্দুটিতে সৰ্ব্বতোভাবে সমাহিত হয়, তখন আত্মা জ্ঞাতৃস্থানে যেরূপ এক অপরিবর্তনীয় সত্যরূপে অধিষ্ঠান করিতেছেন, জ্ঞেয়স্থানে সেইরূপ এক অপরিবর্তনীয় সত্যরূপে প্রকা শিত হ’ন। ইহাই ভাব-জগতের আত্মজ্ঞান। ' ভাব-জগতের আত্মজ্ঞানের সাধনপদ্ধতি এই যাহা প্রদর্শিত হইল, তাহার অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলি পৃথক পৃথক্ করিয়া দৃষ্টিক্ষেত্রে আনয়ন না করিলে তাহার ভিতরকার অনেকগুলি কথা চাপ দেওয়া রহিয়া যাইবে ; তাহ হইতে দেওয়া উচিত হয় না। এইজন্ত, সেই অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলি পৃথক পৃথক রূপে পর্য্যালোচনা করিয়া দেথা নিতান্তই আবিস্ত্যক ; —তাহারই এক্ষণে চেষ্টা দেখা যাইতেছে। পূৰ্ব্বে ইহা যথেষ্ট দেখা হইয়াছে যে, ছু চের আর-সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বাদে কেবলমাত্র তাহার আগাটি যেমন ধরিতে ছুতে পাইবার বস্তু নহে, তেমনি আত্মার সমস্ত কাৰ্য্য এবং গুণ বাদে—জ্ঞান-স্থানের শক্তিফুৰ্ত্তি এবং জ্ঞেয়-স্থানের প্রকাশ বাদে– কেবলমাত্র তাহার জ্ঞাতৃস্থানের সত্তাটি (শুদ্ধকেবল আছি-মাত্রটি ) ধরিতে ছুতে পাইবার বস্তু নহে। এক্ষণে দ্রষ্টব্য এই যে, ছু চের সর্বাবয়ব যখন আমার চক্ষের সমক্ষে উপস্থিত হয়, তখন সেই সঙ্গে যেমন ছুটের আগাটিও আমার চক্ষের সমক্ষে উপস্থিত হয়, তেমনি জাত্মার জ্ঞানস্থানীয় শক্তিস্ফূৰ্ত্তি এবং জ্ঞেয়স্থানীয় গুণপ্রকাশ যখন আমার জ্ঞানসমক্ষে উপস্থিত হয়, তখন সেই সঙ্গে আত্মার, জ্ঞাতৃস্থানীয় সত্তাও আমার জ্ঞানসমক্ষে উপস্থিত হয়। তাহা যখন হয়, তখন আত্মার সবটা ধরিয়া আমি দেখি এই ৰে, আত্মা আত্মশক্তি খাটাইয়। জ্ঞাতৃস্থানের অপ্রকাশ হইতে জ্ঞেয়স্থানের প্রকাশে বাহির হইতেছেন ; দেখি যে, আত্মশক্তিয় মূলস্থানে যে-আত্মা জ্ঞাতৃভাবে অধিষ্ঠান করিতেছেন, আত্মশক্তির ফলস্থানেও সেইআত্মা জ্ঞেয়ভাবে প্রকাশিত হইতেছেন । তবেই হইতেছে যে, আত্মশক্তির এ-পারে জ্ঞাতৃ-আত্মা এবং ও-পারে জ্ঞেয় আত্মা ;– দুই আত্মা একই আত্মা । কেন না, যে আত্মা মূলে অব্যক্ত ছিলেন-আত্মশক্তির কর্তৃত্ববলে সেই আত্মাই ফলে ব্যক্ত হইলেন। আত্মার সেই যে শক্তিস্ফূৰ্ত্তি, যাহার এপারে অব্যক্ত জ্ঞাতৃ-আত্মা এবং ও-পারে ব্যক্ত জ্ঞেয় আত্মা, সে শক্তিস্ফূৰ্ত্তি জ্ঞাত এবং জেয়ের সন্ধিস্থলে থাকিয়া দুয়েরই সঙ্গে মিলিয়ামিশিয়া একীভূত ; তাহা জ্ঞাত, জ্ঞান এবং জ্ঞেয়, সমস্তই একাধারে ; কেন ন, জ্ঞাত তাহারই মূল-প্রাস্ত, জ্ঞেয় তাহারই ফল-প্রাস্ত, এবং জ্ঞান তাহাতেই ওতপ্রোত । এইরূপ দেখিতে পাওয়া বাইতেছে যে, আত্মশক্তির প্রাধান্তই ভাব-জগতের আত্মজ্ঞান-সাধনের গোড়ার কখা । অতঃপর সত্য-জগতের আত্মজ্ঞানের সাধনপদ্ধতি কিরূপ, তাহার আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া যাইবে –কিন্তু এবারে নয় ;–বারাস্তরে । ঐদ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ।