পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা । ] মূর্তনত্বের অচিরপ্রাচীনতা ও বিনাশ কেহ নিবারণ করিতে পারে না। নববল, নবসৌন্দর্য্য, আমরা যদি অন্যত্র হইতে ধার করিয়া লইয়া সাজিতে যাই, তবে দুইদণ্ডবাদেই তাহা কদৰ্য্য তার মালারূপে আমাদের ললাটকে উপহসিত • করিবে ; ক্রমে তাহ হইতে পুষ্প-পত্র ঝরিয়ী। গিয়া কেবল বন্ধনরজুটুকুই থাকিয়া যাইবে । বিদেশের বেশভূষা-ভাবভঙ্গী আমাদের গাত্রে দেখিতে দেখিতে মলিন, শ্ৰীহীন হইয় পড়ে—বিদেশের শিক্ষা, রীতিনীতি আমাদের মনে দেখিতে দেখিতে নিৰ্জ্জীব ও নিষ্ফল হয়, কারণ,তাহার পশ্চাতে মুচিরকালের ইতিহাস নাই—তাহ অসংলগ্ন, অসঙ্গত, তাহার শিকড় ছিন্ন। অদ্যকার নববর্ষে আমরা ভারতবর্ষের চিরপুরাতন হইতেই আমাদের নবীনতা গ্রহণ করিব—সায়াহ্লে যখন বিশ্রামের ঘণ্টা বাজিবে, তখনে তাহা ঝরিয়া পড়িবে না— তখন সেই অম্লানগৌরব মাল্যখানি আশীবাদের সহিত আমাদের পুত্রের ললাটে বাধিয়া দিয়া তাহাকে নিৰ্ভয়চিত্তে সবলহৃদয়ে বিজয়ের পথে প্রেরণ করিব । সুখ দুঃখ । 83) জয় হইবে, ভারতবর্ষেরই জয় হইবে । যে ভারত প্রাচীন, যাহা প্রচ্ছন্ন, যাহা বৃহৎ, যাহা ' উদার, যাহা নিৰ্ব্বাকৃ, তাহারই জয় হইবে,— আমরা—যাহারা ইংরাজি বলিতেছি, অবি. শ্বাস করিতেছি, মিথ্যা কহিতেছি, আস্ফালন করিতেছি, আমরা বর্ষে বর্ষে— “মিলি মিলি যাওল সাগরলহরীসমান।" তাহাতে নিস্তব্ধ সনাতন ভারতের ক্ষতি হইবে না। ভস্মাচ্ছন্ন মৌনী ভারত চতুষ্পথে মৃগচৰ্ম্ম পাতিয়া বসিয়া আছে—আমরা যখন আমাদের সমস্ত চটুলতা সমাধা করিয়া পুত্রকস্তাগণকে কোট্‌-ফ্রক্‌ পরাইয়া দিয়া বিদায় হইব, তখনো সে শান্তচিত্তে আমাদের পৌত্রদের জন্ত প্রতীক্ষা করিয়া থাকিবে । সে প্রতীক্ষা ব্যর্থ হইবে না, তাহার এই সন্ন্যাসীর সম্মুখে করজোড়ে আসিয়া কহিবে—“পিতামহ, আমাদিগকে মন্ত্র দাও।” তিনি কহিবেন— “ও ইতি ব্ৰহ্ম।” তিনি কহিবেন— “ভূনৈব সুখং নামে সুপমস্তি ।" তিনি কহিবেন— “আনন্দং ব্ৰহ্মাণ। বিদ্বান ন বিভৌত কদাচল ।” সুখ-দুঃখ । ఆశాభ్eఙ যখন উঠিয়া তুমি আসিতে সোপানে, পদধ্বনি কভু আমি শুনি নাই কাণে । শব্দহীন আগমন মলয়ের মত, তারি সনে জীবনের আশামুখ যত আছিল জড়িত হয়ে, অবারিত দ্বার সমাদরে আবাহন করিত তোমার।